নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকায় শরীফ হোসেন বাবু হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা তুলে নিতে বাদীকে মামলা তুলে নিতে হুমকী ধামকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানা ও পিবিআই পুলিশ বরাবর লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন মামলার বাদী আব্দুল শহীদ (৫০)।
বৃহস্পতিবার( ৫ মে ) ফতুল্লা মডেল থানা লিখিত অভিযোগ করেন ও সোমবার (১৬ মে) এই লিখিত অভিযোগ জানান তিনি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২০ এপ্রিল সন্ধ্যায় বিবাদীর ছেলে তাসফির (৩২) ও মোঃ মনির (৩৬) সহ আরও ৩/৪জন আমাকে মুদি দোকানে বসা অবস্থায় মামলা তুলে নিতে হুমকি দেয়। এসময় তারা বলে মামলা তুলে না নিলে ছোট ছেলে বাবুর মত বড় ছেলে রুবেলকেও হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হবে। আমার দোকানে আগুন জ্বালিয়ে আমাকে সর্বসান্ত করে দিবে।
নিহতের বাবা আব্দুল শহিদ জানান , গত বছরের ১০ ডিসেম্বর ফতুল্লার থানার পুলিশ আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে শাহাদাত হোসেন ওরফে জাপানির বাড়িতে নিয়ে যায়। পুলিশ নাকি তাদের বাড়ি চিনে না। তাই আমার ছেলে শরীফ হোসেন বাবুকে বাড়ি দেখিয়ে দিতে বলে তাকে সাথে করে নিয়ে যায়। শাহাদাত (জাপানে থেকে বাড়ি করায় তাকে জাপানি বলে ডাকে)। শাহাদাতের বাড়ির ভাড়াটিয়া কবির এবং তার স্ত্রী ঝগরা করে। পরে তার স্ত্রী ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশ আনে। ফতুল্লার পুলিশ এসে তাদের ঝগরা মিটমাট করে দিয়ে যায়। কিন্তু ওই দিন পুলিশ আমার ছেলেকে নিয়ে জাপানি বাড়িতে প্রবেশ করে পুলিশ বের হলেও আমার ছেলে আর জীবিত অবস্থায় বের হয় নাই। পুলিশ বের হওয়ার ৩০ মিনিট পরে আমাদের খবর আসে আমার ছেলে শরীফ হোসেন বাবু নাকি মারা গেছে। পরে সেখানে আমরা গিয়ে দেখি আমার ছেলে আর নেই।
তিনি আরও জানান, আমরা ফতুল্লা থানায় অজ্ঞাত আসামী করে মামলা করি। আমাদের ধারণা জাপানি বাড়ির মালিক শাহাদাত, তার ছেলে তাফসির, ভাগিনা মনির এবং জাপানির স্ত্রী মিলে আমার ছেলেকে হত্যা করে। শাহাদাত অনেক টাকার মালিক হওয়ায় তারা টাকা দিয়ে আমার ছেলের মৃত্যুর পোষ্ট মোর্টেম রিপোর্ট নিজেদের মত করে অপমৃত্য বানিয়ে নিছে। তাই আমরা আদালতের মাধ্যমে আমার ছেলের মৃত্যুর সুষ্ঠ তদন্ত করার জন্য পিবিআই পুলিশ দেয়ার দাবী জানাই। বর্তমানে তা পিবিআই তদন্ত করছে।
নিহতের স্বজনেরা জানান, শরিফ হোসেন বাবুকে বেধড়ক মারধরে করা হয়েছে। নিহত শরিফ বাবুরকে দেহে দেখতে পাই দুই হাত ভাঙা, কানের নিচে পারের চিহ্ন, ঘাড়ের মধ্যে পাড়ের চিহ্ন, পিঠের মধ্যে জ্বলন্ত ছিগারেটের ছেকা দেওয়ার চিহ্ন, সহ শরিরের বিভিন্ন স্থানে এরকম আগাতের চিহ্ন পাওয়াতে আমাদের ধারনা শরিফ বাবুকে নিশংস বেধড়ক মারধরে ঘটনায় সে মারা গিয়েছে।
নিহতের মা জানান, একটি সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখতে পাই আমার ছেলে পুলিশদের সঙ্গে যাচ্ছে। পরে পুলিশ বের হলেও আমার ছেলে শরিফ বাবু আর বের হয়নাই। কত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা উদঘাটন করেছে প্রশাসন কিন্তু আমার ছেলের হত্যা কান্ডের ঘটনা এখনও উদ্ঘাটন করতে পারছেনা প্রশাসন। এখন মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
এবিষয়ে ফতুল্লা থানার এসআই সোহাগ সাহা জানান, আমরা ঘটনার সত্যতা বের করতে চেষ্টা করছি। ঘটনার সত্যতা পেলে অভিজুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর আব্দুল শহীদের (৫০) ছেলে মোঃ শরীফ হোসেন বাবু (২৪) কে হত্যা করা হয়৷ সেসময় উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আদেশে মামলাটি পিবিআইয়ে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাদের গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করার পর মার্চ মাসে তারা জামিনে মুক্তি পেয়ে বের হয় তারা।