নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে তিতাস গ্যাস অ্যান্ড ট্রান্সমিশন কোম্পানির গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে শতাধিক শিল্প কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
প্রায় থমকে আছে টেক্সটাইল খাতের উৎপাদন। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছে সময়মত পণ্য সরবরাহ করতে না পারায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন টেক্সটাইল মিল মালিকরা।
মিল মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আড়াইহাজারে শতাধিত গ্যাস নির্ভর শিল্প কারখানা রয়েছে। মিথিলা টেক্সটাইল, ফকির ফ্যাশন, ভাই ভাই স্পিনিং, সানমুন টেক্সটাইল, রায়া স্পিনিং, নান্নু টেক্সটাইলের মত বস্ত্র ও পোশাক খাতের স্পিনিং, উইভিং, ডাইং, প্রিন্টিং, ফিনিশিং ও ওয়াশিং কারখানার মত অসংখ্য শিল্প কারখানা আছে সেখানে।
ভুক্তভোগী মালিকরা বলেন, জ্বালানি হলো শিল্পের প্রধান চালিকাশক্তি। গ্যাস না থাকলে উৎপাদন ব্যাহত হবে। অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বেকারত্ব বেড়ে যাবে।
তারা বলেন, শুনেছি কোথায় যেন গ্যাস লিকেজের কাজ চলছে। তিতাস কর্তৃপক্ষকে দ্রুত গ্যাস লিকেজ মেরামতের দাবি জানাচ্ছি। দ্রুত গ্যাস সংকট না কাটলে আমাদের কোটি কোটি টাকা ক্ষতি হবে। সার্বিক অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
বঙ্গবন্ধু গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত মিথিলা টেক্সটাইলের পরিচালক মাহবুব খান হিমেল বলেন, এমনিতে প্রায় তিন মাস ধরে গ্যাস সংকট চলছে, গত ৬ দিন ধরে গ্যাস নেই। আদমজী ইপিজেডের ভেতরে গ্যাস লিকেজ মেরামতের কাজ চলছে ধীরে। দ্রুত কাজ শেষ করে গ্যাসের স্বাভাবিক সরবরাহ না হলে সময়মতো কাপড়/পোশাক রপ্তানি করা সম্ভব হবে না, ফলে ক্রেতার আস্থা ও বাণিজ্য হারাবে বাংলাদেশ, সেই সঙ্গে বৈদাশিক মুদ্রা অর্জন ব্যহত হয়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের অর্থনীতি।
ভাই ভাই স্পিনিং মিলের স্বত্তাধিকারী লাক মিয়া জানান, গ্যাসের সংকট থাকায় কারখানার উৎপাদন হচ্ছে না। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে চরম বিপর্যয়ে পরতে হবে মিল মালিকদের। অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পথে। যে উৎপাদন হচ্ছে তাতে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। ফলে হাজারো শ্রমিক চাকরি হারাবে, বেকারত্ব বৃদ্ধি পাবে।
এ ব্যাপারে তিতাস গ্যাসের সোনারগাঁও আঞ্চলিক শাখার ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মিজবাহ-উর রহমান মুঠোফোনে বলেন, শুক্রবার আদমজী ইপিজেডের ভেতরে পাইলিং করার সময় গ্যাস পাইপ ফেটে গেছে। এখন মেরামতের কাজ চলছে। সেখানে কাজ করার সময় ৪০ ফিট নিচে ২৪০ টন ওজনের পাইলিং রিগ দেবে যায়। যার জন্য মেরামত কাজে সময় বেশি লাগছে। আশা করি দু’দিনের মধ্যে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। তখন মিল কারখানাগুলো স্বাভাবিক উৎপাদন করতে পারবে।