1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Narayanaganj Press : Narayanaganj Press
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪১ অপরাহ্ন

১৯ বছর পর ধরা পড়লেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন, ২০২২
  • ২৫৬ Time View

মানিকগঞ্জের সিংগাইয়ে চাঞ্চল্যকর গর্ভবতী জুলেখা (১৯) হত্যা মামলায় সিরাজুল (৩৯) নামে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামিকে ১৯ বছর পরে ধরতে পেরেছে র‌্যাব-৪। নারায়ণগঞ্জের চর সৈয়দপুর এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন মানিকগঞ্জ অঞ্চল সিপিসি-৩, র‌্যাব-৪ এর কোম্পানি কমান্ডার মোহাম্মদ আরিফ হোসেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে, ২০০২ সালের জুলাই মাসে মানিকগঞ্জ সদর থানার বাহের চর এলাকার সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে সিংগাইর থানার উত্তর জামশা গ্রামের জনৈক মো. আব্দুল জলিলের মেয়ে জুলেখা বেগমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে বেশ কিছু নগদ টাকা, গহনা ও আসবাবপত্র বরপক্ষকে দেওয়া হয়। কিন্তু বিয়ের পরে সিরাজুল তার স্ত্রীকে আরও যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। আর যৌতুক না দিতে পারলে তাকে তালাক দিবে বলেও ভয়-ভীতি দেখাতেন।

এর মধ্যে জুলেখা ৮ মাসের অন্তঃসত্তা হয়ে পড়েন। পরে যৌতুক না পাওয়ায় সিরাজুলের সঙ্গে তার পারিবারিক কলহ আরও বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে প্রতিবেশী মোশারফ নামে এক যুবকের সঙ্গে জুলেখার পরকীয়া সম্পর্ক আছে বলে মিথ্যা অভিযোগ তোলেন সিরাজুল। এ কারণে তাকে আরও বেশি নির্যাতন করতে থাকেন।

এক সময় নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে জুলেখার বাবা, ভাইসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে গ্রামে সালিশ বৈঠক করা হয়। সেখানে তার ওপরে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এতে সালিশে উপস্থিতরা সিরাজুলকে সতর্ক করে দেন। কিন্তু এ ঘটনার পর তিনি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে মনে মনে তার স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পরে ২০০৩ সালের ৫ ডিসেম্বর সিরাজুল তার স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি যান। পরের দিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে তাকে মানিকগঞ্জ শহরে নিয়ে যান। সেখানে বিভিন্ন অজুহাতে ইচ্ছাকৃতভাবে সময় পার করে গভীর রাতে ফেরেন। এর পর কৌশলে তার শ্বশুর বাড়ির নিকটবর্তী কালীগঙ্গা নদীর পাড়ে নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আসামি তার ব্যাগে থাকা গামছা দিয়ে জুলেখার গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে নদীর পাড়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় জুলেখার পাশাপশি তার ৮ মাসের গর্ভস্থ সন্তানও হত্যার শিকার হয়।

ঘটনার পরের দিন ৭ ডিসেম্বর ভিকটিমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ দিনেই ভিকটিমের বাবা আব্দুল জলিল বাদী হয়ে সিংগাইর থানায় সিরাজুল, তার বড় ভাই রফিকুল, মা রাবেয়া বেগম, খালু শামসুল, চাচা ফাইজুদ্দিন ও তাইজুদ্দিন এবং মামা আবুল হোসেনসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

সেই মামলায় শামসুলকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হলে তিন মাস হাজত খাটার পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। এছাড়া মামলার তদন্ত শেষে ভিকটিমের স্বামী সিরাজুল, ভাসুর রফিকুল, শ্বাশুরী রাবেয়া এবং খালু শ্বশুর শামসুলসহ মোট চার জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন। আর ফাইজ উদ্দিন, তাইজুদ্দিন ও আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় চার্জশিট থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে জুলেখা হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অপরাধে ২০০৫ সালের শেষের দিকে মানিকগঞ্জ জেলার বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ মো. মোতাহার হোসেন আসামি সিরাজুলকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে বাকিদের বেকসুর খালাস দেন। ঘটনার পর থেকেই সিরাজুল প্রায় ১৯ বছর পলাতক ছিলেন।

মানিকগঞ্জ সিপিসি-৩, র‌্যাব-৪ এর কোম্পানি কমান্ডার আরিফ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে র‌্যাব-৪ এর একটি দল সিরাজুলকে আটক করে। তিনি নিজেকে আড়াল করতে সিরাজ নাম ধারন করে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার চর সৈয়দপুর গ্রামে থাকতেন। জাতীয় পরিচয়পত্রে তিনি এ ঠিকানাই ব্যবহার করেছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© ২০২৩ | সকল স্বত্ব  নারায়ণগঞ্জ প্রেস কর্তৃক সংরক্ষিত
Designed by RIAZUL