জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার ঘুরে আসলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির আহবায়ক জাহিদ হাসান রোজেল। ১২জুন মঙ্গলবার বিকেলে থানা আ’লীগের কয়েকজন নেতার সাথে একটি কালো মাইক্রোবাসে করে টুঙ্গীপাড়ায় যান বিএনপির এ নেতা।
মাজারের গেটে সাংবাদিকদের দেখে তিনি সাথে সাথে গাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে নিজেকে লুকিয়ে ফেলেন। তবে সাংবাদিকরাও নাছোরবান্দা। গাড়ির কাছে গিয়ে রোজেলের সাথে দেখা করেন এবং কুশল বিনিময় করেন। সাংবাদিকরা তার সাথে কথা বলে ফিরে আসার সময় বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন রোজেল। জানাযায়, ঈদের ছুটিতে ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ ও সাবেক মেম্বার জাকারিয়া জাকির এবং থানা আওয়ামীলীগের সদস্য, বৃহত্তর মাসদাইর আওয়ামীলীগের (সাবেক ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ড) সাবেক সাধারন সম্পাদক রনজিৎ মন্ডলের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারতের উদ্দেশ্যে টুঙ্গীপাড়া যান স্থানীয় আ’লীগের নেতাকর্মীরা।
আ’লীগ নেতাদের এ সফরের সঙ্গী হন ফতুল্লা থানা বিএনপির আহবায়ক জাহিদ হাসান রোজেল। বিকেলে তারা পৌঁছান বঙ্গবন্ধুর মাজারে। আ’লীগ নেতারা মাজারের ভেতরে প্রবেশ করলেও জাহিদ হাসান রোজেল ছিলেন মাজারের গেটে। এ সময় বিএনপির এ নেতা সাংবাদিকদের দেখে গাড়ির ভেতরে নিজেকে আড়ালের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেটা আর সম্ভব হয়ে উঠেনি। সাংবাদিকরা তার গাড়ির কাছে ছুটে গিয়ে তার সাথে কুশল বিনিময় করেন এবং এখানে আসার কারন জানতে চান। বিএনপি ছেড়ে আ’লীগে যোগ দেয়ার কোন ইচ্ছে আছে কি না- সে বিষয়টা পরিস্কার হতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা। তখন রোজেল বিষয়টি নিয়ে সংবাদ পরিবেশন না করার অনুরোধ করে বলেন, বন্ধুদের সাথে পদ্মাসেতু দেখতে এসেছিলাম। ওরা যেহেতু আ’লীগের রাজনীতি করে তাই ওরা বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত করতে ভেতরে প্রবেশ করেছে। আর আমি বাইরে অপেক্ষা করছি। এটা খুব বড় কোন বিষয় নয়। এদিকে, রোজেলের টুঙ্গীপাড়া সফরের বিষয়টি জানাজানি হলে তুমুল সমালোচনা শুরু হয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে। অনেকেই মন্তব্য করেন, ফতুল্লা থানা আ’লীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ’র মামাতো ভাই হওয়ার সুবাদে রোজেলকে হামলার শিকার হতে হয়নি। লিয়াঁজোর রাজনীতিতে বেশ অভিজ্ঞ রোজেল স্থানীয় আ’লীগ নেতাদের সাথে মিলেমিশে বেশ ভালোই আছেন। বিসিকের জুট থেকে শুরু করে সবকিছুর ভাগ-বাটোয়ারাও পাচ্ছেন তিনি। এমন নেতার হাতে থানা বিএনপির দায়িত্ব থাকলে দল দিনদিন নিস্ক্রিয় হয়ে যাবে। তাই রোজেলের রাহু থেকে ফতুল্লা থানা বিএনপিকে দিতে হবে মুক্তি।
এনায়েতনগর ইউনিয়ন আ’লীগ নেতা রনজিৎ মন্ডল প্রথমে রোজেলের মাজারে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে সাংবাদিকদের সাথে রোজেলের দেখা হওয়া বা কথা বলার বিষয়টি জানালে রনজিৎ মন্ডল সব কিছু স্বীকার করেন। বলেন, সে আমাদের সাথে মাজার জিয়ারতের উদ্দেশ্যে যায়নি। সে গিয়েছিল পদ্মাসেতু দেখতে। সেতু ভ্রমন শেষে আমরা সবাই মাজারে যাই।
আর রোজেল গাড়িতে বসা ছিল। সে মাজারের ভেতরে প্রবেশ করেনি।তবে বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেন এনায়েতনগর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার ও আ’লীগ নেতা জাকারিয়া জাকির। বলেন, রোজেল আমাদের সাথে যায়নি। সে পদ্মাসেতু দেখতে গিয়েছিল। সেখানে গিয়ে আমাদের সাথে রোজেলের দেখা হয়েছে। তবে মাজারে সে গিয়েছে কি না- সেটা আমরা জানি না।