নারায়ণগঞ্জে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে গুলিতে যুবদলকর্মী শাওন এর মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় তার ভাই মিলন প্রধান বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মুঠোফোনে বলেন, ‘নিহতের বড়ভাই মিলন প্রধান বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচ হাজার জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন৷ আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো।
তিনি আরো বলেন, গতকালের শোভাযাত্রা থেকে পুলিশ বক্সে হামলা, ভাঙচুর ও যে সহিংসতা চালানো হয়েছে, এর বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে দুইটি মামলা দায়ের করতে যাচ্ছে৷ এর প্রক্রিয়া চলমান।
মামলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না, অজ্ঞাতনামাদের কথা উল্লেখ রয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের খুঁজে বের করা হবে৷
একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে মিলন মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের ৫ হাজারের বেশি নেতাকর্মী ইটপাটকেল ও লোহার রড, হকিস্টিকসহ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দফায় দফায় মিছিল করে এবং পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছোড়ে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। শাওন দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় পাকা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন।
এ সময় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল ছোড়েন, ককটেল বিস্ফোরণ করে ও অবৈধ অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ করতে থাকলে ওই ইটপাটকেল ও অবৈধ অস্ত্রের গুলিতে শাওন মাথায় ও বুকে গুরুতর জখম হয়ে রাস্তায় পড়ে যান।
পরে রাস্তায় থাকা লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা শাওনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান মোল্লা জানান, একটি মামলা হয়েছে। এর পাশাপাশি পুলিশের উপর হামলাসহ অন্যান্য বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বিস্তারিত পরে জানাতে পারবো।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় দেড় ঘণ্টা পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ সময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে শাওনের মৃত্যু ছাড়াও পথচারী-নারীসহ আরও ২৬ জন গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়া পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও লাঠিপেটায় পুলিশের সদস্যসহ অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।