নারায়নগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক কাজী ওয়াসিম ও মহানগর বিএনপির সহ সমাজকল্যান বিষয়ক সম্পাদক মিনু আক্তারের অনৈতিক কার্যকলাপের ছবি তুলতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন ফটো সাংবাদিক জুম্মন সোহেল।
ঘটনাটি ঘটেছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন নাসিক ৮ নং ওয়ার্ডের ভূইয়াপাড়াস্থ সাইফুল ভূইয়ার বাড়ি সংলগ্ন স্থানে গত শুক্রবার রাতে।
এলাকাবাসী আপত্তিকর অবস্থায় মিনু আক্তার ও কাজী ওয়াসিমকে হাতে নাতে আটক করে সাংবাদিক ও পুলিশকে খবর দেয়। সাংবাদিক জুম্মন সোহেল ছবি তোলার জন্য ক্যামেরা বের করলে নিন্মে উল্লেখিত আসামীরা সোহেল কে মারধর করে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে সাইফুল ভূইয়া আহত হয়।
এ ব্যাপারে জুম্মন সোহেল বাদী হয়ে শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। এসআই হুমায়ুন কবির কে অভিযোগের তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ নিন্মে হুবহু তুলে ধরা হলোঃ আমি জুম্মন সোহেল ( ৩৮ ) , পিতা – মোঃ সিরাজুল হক , জাতীয় পরিচয়পত্র নং -৫৫৪০৬৫১৪৩৬ , সাং – পুরাতন ৪ নং আল – আমিন রোড , ডিয়ারা , থানা – নারায়ণগঞ্জ সদর , জেলা – নারায়ণগঞ্জ । থানায় হাজির হইয়া বিবাদী ১। কাজী ওয়াসিম ( ৪২ ) , পিতা – মৃত : বেঞ্জু কারী , ২। আশিক ( ৩০ ) , ৩। আনিস ( ২৮ ) , ৪। অনিক ( ২৫ ) , সর্ব পিতা – আম্বর আলী , সর্ব সাং পশ্চিম এনায়েতনগর , ক্যানাল পাড় সংলগ্ন , থানা – সিদ্ধিরগঞ্জ , জেলা – নারায়ণগঞ্জগণ সহ অজ্ঞাত নামা ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করিতেছি যে , আমি পেশায় একজন সাংবাদিক । সেই সুবাদে গত ইং ০২/০৯/২০২২ তারিখ রাত অনুমান ১১.৩০ ঘটিকার সময় ভূইয়াপাড়াস্থ সাইফুল ভূঁইয়ার বাড়ি সংলগ্ন এলাকা হইতে স্থানীয় কয়েকজন গন্যমান্য ব্যক্তি সহ এলাকার জনপ্রতিনিধি জরুরী সংবাদ সংগ্রহ করিবার জন্য আমাকে ডাকে । অতঃপর আমি ও আমার একজন সহকর্মী ইমরান হোসেন খান বর্তমান খবরের ইডিটর কে নিয়া ভূঁইয়াপাড়া রেল লাইনস্থ এলাকায় সংবাদ সংগ্রহ করিবার জন্য রাত অনুমান ১২.১৫ ঘটিকার সময় পৌছাইলে এলাকাবাসী জানায় ১ নং বিবাদী জনৈক মিনু আক্তার ( ৩২ ) নামের বিএনপির মহানগর সহঃ সমাজকল্যাণ বিষয়ক মহিলা সম্পাদিকার সহিত অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকাবস্থায় হাতে নাতে ধৃত হইয়াছে ।
বিষয়টি জানা জানি হইয়া গেলে বিবাদীর সহযোগীগণ অর্থ্যাৎ অপরাপর বিবাদীগণ বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করিতে থাকে । এরই প্রেক্ষিতে বিষয়টি সম্পর্কে ভালো ভাবে অবগত হইয়া আমি ১ নং বিবাদী সহ উক্ত মিনু আক্তার এর ছবি সংগ্রহের জন্য আমার ক্যামেরা বাহির করিলে উল্লেখিত সকল বিবাদীগণ সহ তাহাদের সহযোগী অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন বিবাদী আচমকা আমার উপর চড়াও হইয়া অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করিতে থাকার এক পর্যায়ে আমাকে এলো পাথারি মারপিট করিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে ।
পরবর্তীতে ১ নং বিবাদী আমার ক্যামেরা খানা ছিনাইয়া নেওয়ার চেষ্টা করিলে আমি তাতে বাধা প্রদান করায় বিবাদীগণ বাড়ির ভিতর হইতে কাঠের ডাসা ও গাছের মোটা ডাল দিয়া আমাকে এলো পাথারি পিটাইয়া থাকিলে ৩ নং বিবাদী সুযোগ পাইয়া আমার ডান হাতে ক্যামেরা ছিনাইয়া নিতে ব্যর্থ হইয়া আমার বা হাতে থাকা রিডমি নোট -৪ মডেলের একটি মোবাইল ফোন , যাহার মূল্য -১৬০০০ / টাকা ছিনাইয়া নেয় । এসময় আমার ডাক চিৎকার শুনিয়া আমার সহকর্মী ইমরান হোসেন খান আমাকে বাচানোর চেষ্টা করিলে তিনিও বিবাদীদের দ্বারা আক্রমনের শিকার হন । অতঃপর এলাকাবাসী আগাইয়া আসিলে বিবাদীগণ আমাকে বিভিন্ন প্রকার বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি প্রদর্শণ সহ আমি যদি বিবাদীদের ছবি কোন পত্রিকায় ছাপাই তাহা হইলে যেকোন উপায়ে আমাকে জীবনের তরে শেষ করিয়া ফেলিবে অন্যথায় আমার ও আমার সহ কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা মোকদ্দমা করিয়া ফাসাইয়া দিবে মর্মে হুমকি প্রদান করিয়া বিবাদীগণ চলিয়া গেলে স্থানীয় লোকজন আমাদেরকে উদ্ধার করিয়া নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল ভিক্টোরিয়া নিয়া গেলে সেথায় চিকিৎসা গ্রহণ করিয়া কোন এক প্রকার সুস্থ বোধ করিলে বিষয়টি নিয়া গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহিত আলাপ আলোচনা করিয়া থানায় আসিয়া অত্র অভিযোগ দায়ের করিতে বিলম্ব হইল । অতএব , উল্লেখিত বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে জনাবের সদয় মর্জি হয় ।
এসময় সাংবাদিককে বাচাইতে গিয়ে আওয়ামীলীগের নেতা সাইফুল ভুঁইয়া মারধরের শিকার হয় এবং গুরুত্ব আহত হন।
মারধরের ঘটনায় ঘটনাস্থলে পুলিশ নিয়ে আসে আহত সাংবাদিক। এসময় আওয়ামীলীগ নেতা সাইফুল ভূইয়া পুলিশকে এঘটনার বিবরণে বলেন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক কাজী ওয়াসিম ও মহানগর বিএনপির সহ সমাজকল্যান বিষয়ক সম্পাদক মিনু আক্তারের অনৈতিক কার্যকলাপের বিষয়ে স্থানীয় লোকজন অনেক দিন ধরে বলে আসছে যে কাজী ওয়াসিম রাত ১১টার পর মিনুর বাড়িতে ঢুকে রাত ৩টায় বের হয় । এবিষয়টা অনেকেই জানেন। স্থানীয় লোকজনের হাতেনাতে ধরা পড়ে কাজী ওয়াসীম ও মিনু আক্তার। পরে এলাকার জনপ্রতিনিধিকে অবহিত করি এবং পুলিশ ও সাংবাদিকদের খবর দেই। সংবাদ কর্মীদেরকে বাচাইতে গিয়ে তাদের হামলার মারধরের শিকার হই আমি।
ঘটনার পরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই হুমায়ন গিয়ে এর সত্যতা পেয়ে উভয় পক্ষকে বলে আসে আপনাদের কোন অভিযোগ থাকলে থানায় গিয়ে অভিযোগ করতে পারেন।