নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন বাগিয়ে নিতে লড়াইয়ে নেমেছেন আওয়ামীলীগের ৮ নেতা। তারা হলেন, জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি আবদুল মতিন মাস্টার, জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাবেক প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোঃ শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের
সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য ও মহানগরের সহ সভাপতি ১৬ জুন বোমা হামলায় দু’পা হারানো চন্দন শীল, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মিজানুর রহমান বাচ্চু এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমান। এই নেতাদের ঘিরেই দলের ভেতর আলোচনা তুঙ্গে শেষ পর্যন্ত কে পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন। কিন্তু এই ৮ সিনিয়র নেতা মনোনয়ন যুদ্ধে মাঠে থাকলেও দ্বিতীয় সারির আরও হাফ ডজন নেতা ছিলেন আলোচনায়। যাদের জনপ্রিয়তা যুব ও তরুণদের মাঝে চোখে লাগার মতো। কিন্তু সেই নেতারা দলীয় মনোয়ন পত্র সংগ্রহ করেননি। দলের প্রবীন ও সিনিয়র নেতাদের সম্মান দেখিয়ে তারা তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। তারা দলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবেন। এবং দল যাকে যোগ্য মনে করবে তার পক্ষে কাজ করার দৃঢ প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম বলেছেন, আমি পদে না মানুষের ভালোবাসা পেয়েই খুশি। মনোনয়ন সংগ্রহকৃত প্রত্যেকেই দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাদের দীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে তারা অংশগ্রহণ করেছেন। সেইদিক থেকে কাউকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য রয়েছে নতুন প্রজন্মের নেতৃত্ব তৈরী করতে হবে। যারা মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন তারা প্রবীণ। প্রধানমন্ত্রী যাকে যোগ্য মনে করবেন, তাকেই সবাই মেনে নিবে বলে মনে করি। তবে বিশ্বাস করি, জেলা পরিষদ বড় একটা প্লাটফর্ম। সেক্ষেত্রে দলের
তৃণমূল কর্মী এমন একটা লোক চায়, যার কাছে অন্তত সম্মানটা পাবে। আমাদের চাওয়া, দলের যারা নিবেদিত
সাংগঠনিকভাবে তৃণমূলের সাথে সম্পৃক্ত, তৃণমূলের দুঃখ বুঝে, তাদেরকে দেওয়া উচিত। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার রাজনৈতিক গুরু নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের রূপকার জননেতা একে এম শামীম ওসমান। যার ডাকে এখনো নারায়ণগঞ্জে লক্ষ লক্ষ দলীয় নেতাকর্মী রাজপথে নেমে আসে। দীর্ঘ ৩৭ বছর ধরে সেই নেতার নেতৃত্বে রাজনীতি করছি। আমার পদ আমার নেতার ভালোবাসা, স্নেহ বিশ্বাস। আমার নেতার দিক নির্দেশনার বাইরে কখনো যাইনি, কোনদিন যাওয়ার চিন্তাও করি না। নেতার নির্দেশনা নাই, তাই দলীয়ভাবে জেলা পরিষদের মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করিনি। তাছাড়া যেখানে সিনিয়র নেতারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন সেখানে জুনিয়রদের না যাওয়াই ভালো।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল বলেন, যারা মনোনয়ন কিনেছেন তারা সকলেই প্রবীণ। যতদিন যাবৎ রাজনীতি করছি এখনো আমরা তাদের ছেলের বয়সী। তাদের গার্ডিয়ান হিসেবে মেনে নিয়েছি। তাদের সম্মানে আমি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করিনি। এই জেনারেশনের পরে আমাদের জেনারেশন আসবে। যারা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন তারা কেউ কারোর চেয়ে কম না। তারপরেও নেত্রী যাকে যোগ্য বিবেচনা করবেন আমরা তার পাশে দাঁড়াবো।
জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল বলেছেন, আমি নিজাম আমরা মনোনায়নের বিষয়ে কথা বলেছিলাম। আমাদের মনোনয়ন পত্র সংগ্রহের ইচ্ছা ছিল। কিন্তু আমাদের সিনিয়ররা মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছে। এজন্য আমরা এটার মধ্যে যাইনি। দলের একটা চেইন অব কমান্ড আছে। আমরা সিনিয়র জুনিয়রের বিষয়টি বিবেচনা করে চলি
বিধায় আমরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করিনি। এক পদে দলের অনেকের মনোনয়ন সংগ্রহটাও ভালো। দল চাঙ্গা হবে। আর আমাদের নেত্রী যাকে দলের মনোনয়ন দিবে, সেই দলীয়ভাবে নির্বাচন করবে। প্রত্যাশা থাকবে যিনি মনোনীত হবেন তিনি দলের জন্য কাজ করবেন পাশাপাশি এলাকার উন্নয়ন করবেন। তার দ্বারা যেন দলের দুর্নাম না হয়।