রূপগঞ্জে অভাবের তাড়নায় নবজাতক শিশুকে দত্তক দেওয়া দরিদ্র হালিমা আক্তার ও তার পরিবারকে আর্থিক সহয়তা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য। এছাড়াও পরিবারটিকে আর্থিকভাবে সচ্ছল করার উদ্দেশ্যে তার স্বামীকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল হকের উদ্যোগে একটি রিকশাসহ অন্যান্য সহয়তা প্রদান করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ( ৮ সেপ্টেম্বর) রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের প্রাঙ্গণে হালিমার স্বামী স্বপন মিয়ার কাছে নগদ অর্থ ও একটি রিকশাসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফয়সাল হক, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান ভূঁইয়া, কাঞ্চন পৌরসভা মেয়র রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
গোলাম দস্তগীর গাজী এসময় বলেন, একটি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ হওয়ার কারণে হালিমা আক্তারের পরিবারের কষ্টের কথা আমরা জানতে পেরেছি। তাদেরকে যতটা সম্ভব সহয়তা করার চেষ্টা করা হয়েছে। অন্য কোন দরিদ্র পরিবারের ক্ষেত্রে যেন তাদের মতো পরিস্থিতি না হয় এ বিষয়ে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।
উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল হক জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবার ও জামা এবং নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যক্তির সাহায্যে হালিমার স্বামীকে রিকশা উপহার দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে হালিমার সন্তানদের পড়াশোনা ক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
উপহার পেয়ে স্বামী স্বপন মিয়া বলেছেন, আমি কোনদিন এতো খুশি হই নাই। আমার স্ত্রী চিকিৎসা পাইতাছে, আমি রিকশা পাইলাম, টাকা পাইলাম, সন্তানদের খাবার আর জামা পাইলাম। আরো অনেকে সাহায্য করব বলছে। মনে হইতাছে, আজকে আমার ঈদ।
এর আগে একটি পত্রিকায় হালিমা ও তার স্বামী স্বপন মিয়া জানিয়েছিলেন, তারা দুজন ভালোবেসে বিয়ের পর স্বপনের পরিবার তাদের মেনে নেয়নি। কাজের খোঁজে স্বপন ও হালিমা তাদের তিন সন্তান সহ নরসিংদী থেকে রূপগঞ্জে আসেন। তিনি দিনমজুর হিসেবে যখন যে কাজ পেতেন, করতেন। এর মধ্যে গত শনিবার মধ্যরাতে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর প্রসবব্যথা শুরু হলে ধাত্রীর খোঁজ করা হয়। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেননি। হাসপাতালে ভাড়া দিয়ে যাওয়ার মতো টাকা তাঁদের ছিল না। তীব্র ব্যাথার একপর্যায়ে স্বাভাবিকভাবে তিনি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। ভোরে এক দম্পতি এসে লালন পালনের জন্য নবজাতকটি নিয়ে যান। কিন্তু শিশুটিকে বিক্রি করেননি বলে ওই দম্পতি জানান। পরবর্তীতে স্থানীয় একজন সংবাদকর্মীর সহায়তায় হালিমা রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন।