নারায়নগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নতুন ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণ কাজ তরান্বিত করতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক তার ঘোষিত এক কোটি টাকার মধ্যে প্রথম কিস্তির ৩০ লক্ষ টাকার চেক হস্তান্তর করেছেন।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল এবং সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রবিউল আমিন রনির কাছে এই চেক হস্তান্তর করা হয়।
এ সময় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীরা মন্ত্রী মহোদয়ের এই অবদান কোনদিন ভুলবে না। তিনি অতীতের মতো ভবিষ্যতে ও বটবৃক্ষের ছায়া হয়ে আমাদের পাশে থাকবেন এই প্রত্যাশা রইলো। সেই সাথে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ যেভাবে উন্নয়নের মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে, সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আগামীতেও আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় আনতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
এ সময় তিনি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান, এটর্নি জেনারেল এড. এম আমিনউদ্দিন, আইন সচিব মোঃ গোলাম সারওয়ার এবং নারায়নগজ্ঞের মাননীয় জেলা ও দায়রা জজ মুন্সি মশিয়ার রহমানের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এডভোকেট জুয়েল বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীরা চিরঋতী একেএম সেলিম ওসমান এম পি মহোদয়ের কাছে, যার একক অর্থায়নে বার ভবনের দোতলা পযন্ত কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি এ পর্যন্ত তিন কোটি দশ লক্ষ টাকা দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বছর বছর নির্বাচনের আগে দেয়া মিথ্যা অঙ্গিকারের ফুলঝুড়ি থেকে বেরিয়ে এসে স্বপ্ন বাস্তবায়নের কৌশল শিখিয়েছেন এডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল। নারায়ণগঞ্জ বারের আইনজীবীদের গর্ব করার মতো একাধীক উপাদান তৈরী করে ইতিহাস গড়েছেন এই কীর্তিমান। তার চোখের সামনে এখন জ্বলজ্বল করে নির্মাণাধীন ডিজিটাল বার ভবন, আইনজীবীদের মৃত্যুকালীণ নিশ্চয়তা বেনাভোলেন্ট ফান্ড, এলডিপিএস, স্মার্ট কার্ড, ডিজিটাল ডিরেক্টরীসহ আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা। নারায়ণগঞ্জ জেলা বারকে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বারে রূপান্তর করার কারিগর এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েলকে তাই নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীরা ভুলবে না কখনো।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতিতে ইতিহাস সৃষ্টিকারী নেতা হলেন এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল। নারায়ণগঞ্জ বারের আইনজীবীদের জীবন মান উন্নয়নের লক্ষ্যে তার নেয়া যুগান্তকারী সব পদক্ষেপ স্মরণীয় হয়ে থাকবে আজীবন। বিশেষ করে শত প্রতিকূলতা অতিক্রম করে পুরানো বার ভবন ভেঙ্গে ফেলে নতুন ডিজিটাল বার ভবন তৈরীর উদ্যোগ জেলা বারের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। প্রতিপক্ষ বিএনপির আইনজীবীদের সাথে নিজ দলের একটি পক্ষেরও ঘোর বিরোধীতার মুখে যে অবিচল ধৈর্য আর সাহসীকতার সাথে নতুন ভবন তৈরীর কাজ শুরু করেছিলেন জুয়েল, তা দলমত নির্বিশেষে সকল আইনজীবীর কাছে ছিলো প্রশংসনীয়।
এক সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির কোন ফান্ড ছিলো না, ছিলো না মৃত্যুর পরে সে আইনজীবীর পরিবারের জন্য কোন বরাদ্দ। ঠিক মতো বার কাউন্সিলের টাকা পরিশোধ না করায় এড. সুলতানউদ্দিনের মতো আইনজীবীর পরিবারও বার কাউন্সিলের বরাদ্দকৃত ৫ লক্ষ টাকা থেকে হয়েছিলেন বঞ্চিত। এসব বিষয় মনিটরিং করার কথা এবং সঠিক ডাটাবেজ সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি কখনো। নারায়ণগঞ্জ বারের আইনজীবীদের বসার জন্য ছিলো জরাজীর্ণ একটি তিনতলা ভবন। সে ভবনে ঠাঁই হতো না সবার, ফলে পাশে টিনশেডের মধ্যে গাদাগাদি করে বসতেন আইনজীবীরা।
তবে গত কয়েক বছরে পাল্টে যেতে শুরু করেছে সেসব চিত্র। জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল তৎকালীণ সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীণ আইনজীবীদের জীবন মান উন্নয়নের কাজে হাত দেন। সে থেকে শুরু করে গত দুই বছরে আইনজীবী সমিতির কার্যক্রমে আমুল পরিবর্তন ঘটিয়ে ফেরেন তিনি। তার সবচেয়ে বড় এচিভম্যান্ট হলো আইনজীবীদের জন্য ‘বেনাভোলেন্ট’ ফান্ড গঠন করা যাতে বর্তমানে প্রায় ১০ কেটি টাকার উপরে জমা হয়েছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ জেলার আইনজীবীদের জন্য একটি ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করা ছিলো তার একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
এর আগে নারায়ণগঞ্জ বারের উন্নয়নের বানী শুনিয়ে প্রতিবারেই নির্বাচনী বৈতরণী পার হতেন আইনজীবী নেতারা। কিন্তু কাঙ্খিত উন্নয়নের সুফল পাচ্ছিলেন না সাধারণ আইনজীবীরা। বিশেষ করে একটি আধুনিক বার ভবন নির্মাণ ও দুই কোর্ট একত্রে রাখার বিষয়ে বছরের পর বছর সকলেই প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছেন কিন্তু কেউ বাস্তবায়ন করেননি। স্বপ্নকে কিভাবে বাস্তবে রূপ দিতে হয় তা সবাইকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন এডভোকেট হাসান ফেরদৌস ওয়াজ। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ একেএম সেলিম ওসমানের অর্থায়নে নির্মিত আইনজীবী সমিতির জন্য ডিজিটাল ভবন এখন দৃশ্যমান। যার মধুর পরিসমাপ্তি তার স্বপ্ন দ্রষ্টার হাতেই হওয়ার অপেক্ষায়।