নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্যের ৫টি ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যের ২টি পদে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগই। প্রতি ওয়ার্ডেই দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা মনোনয়ন ক্রয় করায় অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নতুন করে মাথাচাড়া দেবে বলে মনে করছেন আওয়ামীলীগের তৃনমূল নেতাকর্মীরা।
জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের সবাই আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তারা সবাই স্থানীয় এমপি ও মেয়র এবং জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পক্ষ হয়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যায়। নির্বাচনেও তারা এই দুই অংশের সমর্থন নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন। ফলে জেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে দলের অভ্যন্তরণী দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নেবে, এমনটাই আলোচনা দলের ভেতরে বাইরে।
জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বাবু চন্দন শীল। এ পদে নিজ দলের অন্য কোনো প্রার্থী নেই। তবে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন।
জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম ইকবালও সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন। এ নির্বাচনে মনোনয়ন ক্রয় করেছেন মোট ৩৩ জন। এর প্রায় ৯৯ ভাগই প্রার্থীই হলো আওয়ামী লীগের। ফলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও হবে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের মধ্যে।
তবে দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত আওয়ামীলীগের কার সাথে কার লড়াই হয়। অথবা বিনাপ্রতিদ্বন্ধিতায় কে বিজয়ী হয়। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
নির্বাচন অফিস সূত্র জানা যায়, সাধারণ সদস্য পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ১৭ জন প্রার্থী তারা হলেন, ১নং ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমান জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম, আওয়ামীলীগ নেতা মো. আলাউদ্দিন, মো. গোলাম কাদির, মো. আ. মোতালিব, মো. সিরাজুল ইসলাম, এড. রাশেদ ভূঁইয়া ছাত্রলীগ নেতা সায়েম শহিদ রেজা ও নাসরিন আক্তার।
২নং ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, স্বাস্থ্য বিয়ষক সম্পাদক মো. মোস্তফা হোসেন চৌধুরী, বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম আহম্মেদ, আওয়ামীলীগ নেতা মো. রাসেল সিকদার, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, মো. রুহুল আমীন, আমির উল্লাহ রতন, মোবারক হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম।
৩নং ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন, আওয়ামীলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ আলী হায়দার, ফারুক হোসেন ও আব্দুন নুর, এনামুল হক বিদ্যুৎ। ৫নং ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন আওয়ামীলীগ নেতা আনছার আলী, জলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম ইকবাল, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম ইকবাল। ৪নং ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন আওয়ামীলীগ নেতা মিয়া আলাউদ্দিন, আজিজুল হক মোল্লা।
অপরদিকে, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১নং আসনে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন, জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক সাদিয়া আফরিন ও আওয়ামীলীগ নেত্রী আছিয়া খানম সুমি। সংরক্ষিত ২নং আসনে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন রুপগঞ্জ থেকে রুপগঞ্জ উপজেলা মহিলা আওয়মীলীগের সাধারন সম্পাদিকা সীমা রানী পাল, সোনারগাও থেকে সোরারগাঁ উপজেলা মহিলা আওয়ামীগের সভানেত্রী এড. নুরজাহান বেগম, মহিলানেত্রী কোহিনুর ইসলাম ও আড়াইহাজার থেকে হাওয়া বেগম। তারা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এভাবে ৫টি ওয়ার্ডেই আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ।
এবিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে আওয়ামীরীগের দলীয় কোনো সমর্থন নেই। সদস্য পদে যে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে। এতে আইনগতও কোনো বাধা নেই।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি উপজেলায় একজন করে সদস্য নির্বাচিত হবে। সে ক্ষেত্রে স্থানীয় এমপিরা তো সদস্য ও নারী সদস্য পদে কাউকে না কাউকে সমর্থন দিবেই। তবে আমাদের দলীয় কোনো সমর্থন নেই।