ফতুল্লার পাগলায় শারদীয় দুর্গা পূজা মন্ডপের কাজ চলা অবস্থায় মন্দিরের সেবায়েতদের রিভালবার প্রদর্শন করে পূজা উদযাপনে বাধা প্রদানের অভিযোগ উঠেছে, শিবু দাস ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে।
এ বিষয় পাগলা এলাকার মৃত শিবু দাস মহন্তের ছেলে শ্রী শ্রী পাগল নাথ জিউ ও শ্রী শ্রী রামসীতা জিউ মন্দিরের বংশানুক্রমিক সেবায়েত চন্ময় দাস মহন্ত (৩০) বাদী হয়ে, পাগলা কামালপুর এলাকার ধনজয় দাসের ছেলে শিবু দাস (৫০), মৃত হরিপদ দাসের ছেলে অনিল চন্দ্র দাস (৫২), মৃত ভোলানাথ বাড়ৈর ছেলে চন্দ্রজিৎ বাড়ৈ, মৃত ফুলচান মন্ডলের ছেলে পরিমল মন্ডল, মৃত নারায়ণ চন্দ্র রাজ বংশীর ছেলে শ্যামল রাজ বংশী, আরো অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে বিবাদী করে একটি লিখিত অভিযোগ নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবর দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (০৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭ ঘটিকায় শ্রী শ্রী পাগল নাথ জিউ ও শ্রী শ্রী রামসীতা জিউ এর দুর্গা মন্দিরে অনাধিকারভাবে প্রবেশ করে রিভালবার প্রদর্শন করে সেখানে থাকা সেবায়তদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং রিভালবার প্রদর্শন করে শিবু দাস হুমকি দিয়ে বলেন যে, অত্র এলাকায় পূজা উদযাপনকারী যদি অত্র পূজা মণ্ডপে আসে তা হইলে প্রাণে মারিয়া লাশ গুম করে ফেলবে।
জানা যায়, বিগত ১৩১ বছর যাবত শান্তিপূর্ণভাবে এই মন্দিরে সার্বজনীন শ্রী শ্রী শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। নিজেদের আধিপত্যকে বিস্তার করে ফতুল্লা থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিবু দাস ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদানের মাধ্যমে পূজা উদযাপনে বাধা প্রদান করে আসছেন। তার বাহিনীতে রয়েছে পাগলা শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ভূয়া ডাক্তারও। তাদের মাধ্যমেই সন্ত্রাসী শিবু দাস পূজার নামে করছে বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক পাগলা বাজারের একজন হিন্দু ব্যবসায়ী জানান, আমাদের পূজা আসলেই শিবু ও তার লোকজনের মাথা ব্যথা শুরু হয়ে যায়। এই পূজার নাম দিয়ে একটি কার্ড বানিয়ে চালাচ্ছেন চাঁদাবাজি। তার এই চাঁদাবাজির এক টাকাও এই পূজায় ব্যবহৃত হয় না। তিনি আরো জানান, মন্দিরের জমির ভাড়াটিয়া হয়েও সম্পত্তি লোভে পূজার কাজে বার, বার বাধা প্রদান করে শিবু দাস। তিনিই আবার ফতুল্লা থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক। তার লোকজন কে কি করে আপনারা খবর নিলেই জেনে যাবেন।
উল্লেখ্য, শিবু দাস ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজন ইতিপূর্বে উক্ত মন্দিরে জবর দখল করার অপচেষ্টা ও পায়তারা করিলে, নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র ২য় আদালতে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। যাহার মামলা নং- (২৫৯/১৭)। দায়েরকৃত মামলাটি বিজ্ঞ আদালত গত ৩০ নভেম্বর ২০১৭ সালে শুনানী অন্তে আদালত উক্ত মন্দির বিগ্রহের সেবায়তদ্বয়ের পক্ষে এবং আসামীগণের বিরুদ্ধে স্থিতবস্থার আদেশ প্রদান করেন। এবং বিবাদীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। যাহা বিজ্ঞ আদালতে বর্তমানে বিচারাধীন আছে। তাছাড়া উক্ত বিবাদীদের বিরুদ্ধে মহামান্য সুপ্রীম কোর্ট ও হাই কোর্ট বিভাগে সিভিল রিভিশন ১৮৮২/২০২০ মোকদ্দমায় নালিশী সম্পত্তির বিষয়ে উক্ত বিবাদীগণের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ বহাল রয়েছে।
এ বিষয়ে ফতুল্লা থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিবু দাসের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি গিয়েছিলাম মন্দিরের সামনে তবে রিভালবার প্রদর্শন করার কথা অস্বীকার করেন। তিনি পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনে বাধা দিতে পারেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে ১৪৫ ধরা মোতায়েন করেছে প্রশাসন ,তাই তাদের কাজ করার এখতিয়ার নেই।
এ বিষয়ে শ্রী শ্রী পাগলনাথ ও শ্রী শ্রী রামসীতা জিউ বিগ্রহ মন্দিরের সেবায়েত শ্রী তন্ময় দাস মহন্ত বলেন, আমাদের ১৩১তম দুর্গা পূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করতে ১৪৫ ধারা জারি করেছে আদালত। তার বাদীপক্ষ আমরাই। যারা আমাদের পূজা উদযাপনে বাধা প্রদান করতে পারে আমরা তাদের ৭ জনের বিরুদ্ধে এই ১৪৫ ধরা মোতায়েন করেছি। এখন শিবু দাস ও তার লোকজন এসে আমাদের পূজার কাজে বাধা প্রদান করে।