নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের প্রভাবশালী সাংসদ শামীম ওসমানের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ ওপের সিক্রেট। যদিও দুইজনই একই দলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।
বছরের বিভিন্ন সময় নানা বক্তব্য-বিবৃতির মাধ্যমে গণমাধ্যমের শিরোনাম হন এই দুই নেতানেত্রী। কেউ কাউকে ছাড়া দেন না এক চুলও। ২০১১ সালে দুই জন সরাসরি সিটি নির্বাচনে ভোটের লাড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছিলেন।
আর ১১ বছর পর নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে দুই জন দুই সদস্যকে
বিজয়ী করতে মাঠে নেমেছেন। ব্যাপক তৎপরতা চালিয়েছে স্ব স্ব প্রার্থীকে বিজয়ী করতে। ফলে জেলা পরিষদের নির্বাচনে আলোচনায় উঠে আসে ১নং ওয়ার্ড।
কারণ এই ওয়ার্ডে আইভীর প্রার্থী ছিল জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম এবং শামীম ওসমানের প্রার্থী ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমান। ১নং ওয়ার্ডটি নারায়ণগঞ্জ সিটি এলাকা নিয়ে। এই ওয়ার্ডের ভোটার মেয়র, ২৭ কাউন্সিলর ও ৯ সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর। ৩৬ জন কাউন্সিলরের ভোট বাগিয়ে নিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছেন মেয়র আইভী ও শামীম ওসমান। নানা প্রতিশ্রুতিও ছিল তাদের তৎপরতায়।
রীতিমত প্রেস্টিজ ইস্যু হয়ে দাড়ায় ১নং ওয়ার্ডের নির্বাচন শামীম ওসমান ও আইভীর কাছে।
ফলে সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ভোট গ্রহণ ঘিরে দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও নগরবাসীর কাছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল কে জিতবে, শামীম ওসমানের প্রার্থী মজিবুর নাকি আইভীর প্রার্থী জাহাঙ্গীর।
ভোট চলাকালীন শহরের প্রিপারেটরী স্কুল কেন্দ্র ঘিরে আইভী ও শামীম ওসমান বলয়ের নেতাকর্মীদের ভীড় ছিল চোখে পড়ার মতো। তারা খেয়াল রাখছিলেন সব ভোটার ভোট দিতে আসছেন কি না। বেলা গড়িয়ে যখন দুপুর পৌনে ২টা তখন সবার দৃষ্টি দুই ভোটারের দিকে।
কিন্তু নির্ধারিত সময় বেলা ২টা বাজলেও শেষ পর্যন্ত ওই দুই ভোটার ভোট দিতে আসেননি। তারা হলেন, নাসিক ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ই¯্রাফিল ও ১১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অহিদুল হক ছক্কু। ভোট কাস্ট হয় ৩৫টি।
গুঞ্জুন শুরু হয়ে যায় কেন্দ্রের বাইরে। কেন আসলো না এই দুই ভোটার।
নানা আলোচনার মধ্যে বেলা আড়াইটার পর ভোট কেন্দ্রের বাইরে খবর চলে
আসে মজিবুর রহমান ও জাহাঙ্গীর আলম সমান সমান ভোট পেয়েছেন।
অর্থাৎ শামীম ওসমানের প্রার্থী মজিবুর রহমান ১৫ ভোট ও সেলিনা
হায়াৎ আইভীর প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ১৫ ভোট। ফলে শামীম ওসমানও
হারলেন না আবার আইভীও বিজয়ী হলেন না। ভোটের মাঠে দুইজনই ড্র
করলেন।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে লটারীর মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা হবে বলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মতিয়ূর রহমান জানিয়েছেন। এতে করে মজিবুর রহমান ও জাহাঙ্গীর আলমের ভাগ্য নির্ধারণের মধ্যদিয়ে নির্ধারণ হবে কে জিতলো? শামীম না আইভী।