নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন অভিযানে তিতাসের ভ্রাম্যমান আদালতের কার্যক্রমে বাঁধা ও পুলিশের উপর হামলা হয়েছে। এক পর্যায়ে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
করেছে অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারি শত শত নারী পুরুষ।
এ সময় মহাসড়কের শিমরাইল থেকে মেঘনাঘাট পর্যন্ত অন্তত ১৫ কিলোমিটার এলাকায় দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। দুই ঘন্টা পর বিকেল ৪টায় পুলিশের তৎপরতায় বিক্ষোভকারিরা অবরোধ তুলে নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো: ইব্রাহিমের নেতৃত্বে মঙ্গলবার দুপুর বারোটায় পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালতের এই অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানের শুরুতেই তিন হাজার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তিতাস কর্তৃপক্ষ।
এসময় স্থানীয় নারী ইউপি সদস্যদের নেতৃত্বে শতাধিক নারী পুরুষ এসে ভ্রাম্যমান আদালতের কাজে বাঁধা সৃষ্টি করেন এবং নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটসহ তিতাসের উর্ধবতন কর্মকর্তাদের উপর চড়াও হন। পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে তারা একত্রিত হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে
পুলিশকে ধাওয়া দেয়। পুলিশের সাথে তাদের দফায় দফায় ধাওয়া পালটা ধাওয়া হয়। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারিরা ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান
নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে এবং টায়ার জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে শতাধিক এ্যাম্বুলেন্স ও হজ্ব যাত্রীসহ কয়েক হাজার মানুষ যানজটের আটকা পড়ে ভোগান্তির শিকার হন। দীর্ঘ দুই ঘন্টা পর পুলিশ
অবরোধকারিরা রাস্তা থেকে সরে গেলে বিকেল চারটায় মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়।
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সোনারগাঁ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো: ইব্রাহিম বলেন, অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে আমরা ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান শুরু করি। এ সময় অবৈধ গ্যাস ব্যাবহারকারিরা আমাদের বাধা সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে তারা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরে পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়।
ছয়হিস্যা গ্রামের মজিদ মিয়া বলেন, পরিশ্রমের টাকায় গ্যাস সংযোগ নিয়েছি। বৈধ না করে গ্যাস কাটতে দেওয়া হবে না। আমরা বৈধ গ্যাস চাই।
ভাটিবন্দর গ্রামের পঞ্চাষার্ধো হালিমা বেগম বলেন, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে টাকা দিয়ে গ্যাস নিয়েছি। গ্যাস সংযোগ কেটে দিলে আমাদের টাকা ফেরত দিতে হবে। তিতাসের সোনারগাঁ জোনের আঞ্চলিক বিপনন বিভাগের উপ-মহা ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সুরুজ আলম বলেন, ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালা করে প্রায় ৫ হাজার সংযোগ বিছিন্ন করা হয়েছে। বিক্ষোভকারী নারী পুরুষ বৈধ গ্যাস সংযোগের দাবি তুলেছেন।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন বলেন, স্থানী কিছু দালাল চক্র ও দূষ্কৃতিকারি এলাকার মহিলাদের উস্কে দিয়ে সর কারি কাজে বাধা সৃষ্টি সহ মহাসড়ক অবরোধ করে। এতে শত শত যানবাহন যান জটের কবলে পড়ে কয়েজ হাজার যাত্রী ভোগান্তির শিকার হন।
মহিলারা রাস্তা অবরোধ করায় তাদের সেখান থেকে সরাতে আমাদের খুব বেগ পেতে হয়েছে। অনেককে মা বলে ডেকে মানুষের ভোগান্তির করা বলেছি। পরে আমাদের নুরোধে মহিলারা রাস্তা থেকে সরে আসেন এবং মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়।