1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Narayanaganj Press : Narayanaganj Press
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১৭ অপরাহ্ন

হাজীগঞ্জ-নবীগঞ্জ ফেরিতে অতিরিক্ত টোল আদায়

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২২
  • ১৬৯ Time View

পদে পদে অনিয়ম, সমন্বয়হীনতা ও গাফিলতিতে চলছে হাজীগঞ্জ-নবীগঞ্জ ফেরি সার্ভিস। ইজারা গ্রহণের সময় ধার্যকৃত টোলের চেয়ে বাড়তি টোল আদায় হচ্ছে ফেরিতে। নদী পারাপারে নিরুপায় বিধায় বাড়তি টোল দিয়ে যাতায়াত করছেন পরিবহন চালকেরা তবে ফেরির বাড়তি টোল আদায়ের বিষয়ে অবগত নন বলে জানান নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, হাজীগঞ্জ-নবীগঞ্জ ঘাটে দুটো ফেরি চলাচলের অনুমোদন দেওয়া দিয়েছে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর। একটি ফেরির চলাচলের সময় সকাল ৮ থেকে রাত ১১ টা। কিন্তু অন্য ফেরি চলে দিনের অর্ধ বেলা। দুপুর ১২ টা হতে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত। যদিও সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের নিয়মানুযায়ী দুটো ফেরি সারাদিন সচল রাখার নিয়ম রয়েছে।

একটি ফেরি অর্ধবেলা চালু রাখার কারণ হিসেবে ফেরির কর্মচারীরা জানান, ফেরি দুটো চালালে ফেরিতে যানবাহনে পূর্ণ হওয়ার আগেই চালু করা লাগে। কিন্তু ফেরি একটি চললে যানবাহনে পূর্ণ হলে ফেরির লাভ হয়।

এদিকে মুনাফা হ্রাসের অজুহাতে ফেরি কম চালালেও অনুসন্ধানে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের অনুমোদন বিহীন ফেরিতে যানবাহনের টোল বাড়ানো হয়েছে। ফেরির টোল সাইকেলের ৫ টাকা, রিক্সা/ ঠেলাগাড়ির ১০ টাকা, মোটরসাইকেলের ১৫ টাকা, সিএনজি বা অটোরিকশার ২৫ টাকা, প্রাইভেট কারের ৬০ টাকা, পিকআপ বা জিপের ৮০ টাকা, টেম্পুর ৩০ টাকা, ঢালাই গাড়ির ১০০ টাকা, ঘোড়ার গাড়ির ১০০ টাকা, মিনিবাসের ৯০ টাকা, বড় বাসের ২৫০ টাকা,
মিডিয়াম ট্রাকের ১৫০ টাকা, হেভি ট্রাকের ৩০০ টাকা, কন্টেইনার বা ট্রেলারের ৩৭৫ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

যা পূর্বের তুলনায় অধিক। নিজেদের ইচ্ছে মতো যানবাহন প্রতি টোল নির্ধারণ করে চলছে ফেরি। কর্তৃপক্ষের ফেরিতে লাভ হচ্ছে না অযুহাত দেখালেও সারাদিনে প্রতিবার চলাচলে ফেরির আয় হয় গড়ে পনেরোশ থেকে ষোলশ টাকা। একটি ফেরি প্রতি ঘন্টায় ৩ বার চলাচলের নিয়ম রয়েছে। অন্যদিকে ফেরির কর্মচারীর সূত্র অনুযায়ী ফেরি চালাতে প্রতিবারে ২ লিটার ডিজেলের প্রয়োজন হয়। ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটারে ১০৯ টাকা।

এছাড়াও ফেরির যাত্রী ছাওনিতে বসানো হয়েছে একটি চায়ের দোকান। যেখানে বাৎসরিক ৫০ হাজার টাকা ও দৈনিক ১৫০ টাকা ভাড়া আদায় হয়। ফেরির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মচারী বলেন, ফেরির ভাড়া মাস খানেক আগে বাড়ানো হইছে। আগের ভাড়ার তুলনায় কিছুটা ভাড়া বাড়ছে। ফেরির টোল বৃদ্ধির পর থেকে যাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ তৈরি হলেও মনে সৃষ্টি হয়েছে হতাশার।

অটোরিকশা চালক নিজের হতাশা প্রকাশ করে বলেন, সকালে ফেরি চলে একটা। ফেরি ঘাটে আইসা না পাইলে আধঘন্টা ঘাটে বইসা থাকন লাগে। ফেরি আসলে, ফেরি গাড়ি দিয়া ভরলে তারপর ছাড়ে। এনেও সময় যায়। ফেরির ভাড়া আগে ছিল ১৫ টাকা এখন করছে ২৫ টাকা। টোল বাড়লেও রিকশার যাত্রীদের কাছে তো ভাড়া বাড়াইতে পারি না। ইস্পাহানি এলাকার বাসিন্দা আরিফ ক্ষোভ প্রকাশ বলেন, ফেরিতে মোটরসাইকেলের ভাড়া আগে ছিল ১০ টাকা, এখন নেয় ১৫ টাকা।
বন্দরবাসীর জন্য নদীপারাপার সবসময়ই ভোগান্তির। ফেরি যখন ছিল না তখনো ভোগান্তির ছিল। এখনো সেতু, ফেরি থাকলে ভোগান্তি খুব বেশি কমেনি। জায়গায়
জায়গায় ভোগান্তি আছেই। সুবিধাজনক ব্যবসায় করে ফেরির কর্তৃপক্ষ। সকালে মানুষের চাপ থাকে তখন একটা ফেরি চালায়। ভাড়া বেশি নিলেও দিনের বেশিরভাগ সময় একটা ফেরি চালু রাখে। আমাদের অনেক সময় নষ্ট হয়।
নবীগঞ্জ-হাজীগঞ্জ ফেরির দায়িত্বপ্রাপ্ত ত্বত্তাবধায়ক সাইফুল হোসেন রিয়েল এ বিষয়ে বলেন, সকালে যানবাহন কম থাকে, তাই ফেরি একটা চালাই। ফেরি দুটো চালাইতে হবে এমন কোন নিয়ম নেই। এদিকে দুটো ফেরি রইলেও দিনের অধিকাংশ সময় একটি চলে , সেখানে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের নিকট আরেকটি ফেরি চেয়ে আবেদন করেছেন ফেরি ঘাটের ইজারাদার।

সাইফুল হোসেন রিয়েল বলেন, আমাদের একটি ফেরি নষ্ট হলে যেন ফেরির সার্ভিসে সমস্যা না হয়, এজন্য সড়ক ও জনপদ কর্তৃপক্ষের কাছে আরেকটি ফেরি চেয়ে আবেদন করেছি। মধুমতি সেতু হওয়ায় আমাদের সেখানে চালিত একটি ফেরি আমাদের ঘাটে দেওয়ার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এখনো দেয়নি।

ফেরিতে যানবাহনের টোল বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা ডিজেলের দাম বৃদ্ধির পর থেকে দাম বাড়িয়েছি। কিন্তু দাম বাড়তির ক্ষেত্রে সড়ক ও জনপদের অনুমোদন পেয়েছেন কিনা এই প্রশ্নে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি তিনি।

হাজীগঞ্জ- নবীগঞ্জ ফেরি ঘাটের ইজারাদার হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন জেলা শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু। তার সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। এদিকে ফেরিতে চালিত এসব নিয়ম গুলোকে অনিয়ম বলে মনে করেন সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী ‘ শাহানা ফেরদৌস। তিনি বলেন, একটা ফেরি চালিয়ে অন্যটি বসিয়ে রাখা যাবে না। দুটো ফেরি একই
নির্ধারিত সময়ে চলবে।

ডিজেলের দাম বৃদ্ধির পর দেশের সকল ফেরি ইজারাদারদের মতো নবীগঞ্জ ফেরি ঘাটের ইজারাদার টোল বৃদ্ধির জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু টোল বৃদ্ধির বিষয়ে কোন অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তারা ইজারা নেওয়ার সময় যেসব শর্তাবলি ও টোল উল্লেখ্য করে ইজারা নিয়েছে সেইসব বিষয় মেনেই ফেরি চালু রাখতে হবে। বাড়তি টোল গ্রহণ করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© ২০২৩ | সকল স্বত্ব  নারায়ণগঞ্জ প্রেস কর্তৃক সংরক্ষিত
Designed by RIAZUL