অবিলম্বে মজুরি বোর্ড গঠন করে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৪ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবিতে শহরে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা।
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) বিকেল ৪ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে এ সমাবেশ ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কাদির, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সভাপতি রুহুল আমিন সোহাগ, বিসিক শাখার সভাপতি নূর হোসেন সর্দার, কাঁচপুর শাখার সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান, গাবতলী-পুলিশ লাইন শাখার সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম, রূপগঞ্জ উপজেলার সভাপতি মো. সোহেল।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গার্মেন্টস বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান উৎস। প্রতি বছর গার্মেন্টসের রপ্তানি আয় বাড়ছে। বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৮৩ শতাংশের বেশী আসে গার্মেন্টস খাত থেকে। সাড়ে তিন হাজার কারখানায় ৪০ লাখ শ্রমিকের শ্রমে ঘামে এই পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি আয় হচ্ছে। ইতিমধ্যে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম গার্মেন্টস রপ্তানি কারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ তার অবস্থান দাড় করিয়েছে। অথচ আমরা দেখছি সেই গার্মেন্টসের শ্রমিকদের মজুরি পৃথিবীর মধ্যে সর্বনিম্ন।
জীবন যাপনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যয় বেড়ে আকাশ ছুয়েছে। বেড়েছে বাড়ি ভাড়া, শিক্ষা-চিকিৎসা খরচ। দফায় দফায় বাড়ছে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম। শ্রমিকের আয় না বাড়ায় তাদের জীবন মান বাড়ছে না। নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত বাংলাদেশে শ্রমিকরা মান সম্পন্ন জীবন যাপন করার মত মজুরি পাবে না এটা হতে পারে না। আবার অর্থনীতির সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী শ্রমিকের ক্রয় ক্ষমতা বাড়লে দেশের অর্থনীতির সামগ্রিক গতিশীলতা বাড়ে।
এ কারনেই প্রতিটি উন্নত দেশের শ্রমিকদের শিক্ষা-স্বাস্থ্যের মান উন্নত। মান সম্পন্ন মজুরি যেমন শ্রমিকদের জীবন মান উন্নত করে তেমনি দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে। বাংলাদেশকে যদি উন্নত দেশের কাতারে উন্নীত করতে হয় তাহলে শ্রমজীবী মানুষের আয় বাড়াতেই হবে। ন্যায্য মজুরির নির্ধারণ তাই বাংলাদেশের শ্রমিক এবং অর্থনীতির বিকাশের জন্যই প্রয়োজন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনমান বিবেচনায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি কমপক্ষে ২৪ হাজার টাকা হওয়া উচিত। বর্তমান বাজারদরের বিবেচনায় সিপিডিসহ বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার গবেষণা, বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকে সবচেয়ে কম মজুরি ২৪ হাজার টাকা নির্ধারণ, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ৩০০৭ ডলার ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট মনে করে গার্মেন্টসে ২৪ হাজার টাকার কম মজুরি হওয়ার কোন কারণ নেই। সেই বিবেচনায় গার্মেন্টসে পিসরেট শ্রমিকদের রেট দ্বিগুন হওয়া প্রয়োজন।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে মজুরি বোর্ড গঠন করে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৪ হাজার টাকা নির্ধারণ, পিসরেট শ্রমিকদের রেট দ্বিগুন করা, রেশন ব্যবস্থা চালু এবং ফকির ফ্যাশন লিঃ এর শ্রমিকদের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং মজুরির বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহŸান জানান।