নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার শিশুকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ড প্রাপ্তমৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামি শাহাদাত (৩৮) কে ১৯ বছর পলাতক থাকার পর গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১। গ্রেপ্তারকৃত শাহাদাত নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর থানার আলীর টেক এলাকার শুকুর আলীর ছেলে।
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে র্যাব-১১’র প্রধান কার্যালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
এরআগে শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) রাতে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানা এলাকা হতে শাহাদাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়াও গত ২৩ অক্টোবর এ মামলার অন্যতম প্রধান আসামি মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত সুজনকেও গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ ছাড়াও এ মামলায় আরও দুই আসামি পলাতক রয়েছে।
র্যাব সূত্র জানায়, ২০০৩ সালের ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আলীরটেক এলাকায় একটি ১০ বছরের শিশু সংঘবদ্ধ ধর্ষণপূর্বক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। হত্যাকান্ডের পরবর্তী দিন শিশুটির লাশ সরিষা ক্ষেতে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় জনগন সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ ও শিশুটির পরিবারকে জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশটিকে উদ্ধার করে এবং লাশটি সদর উপজেলার আলীরটেক এলাকার আলী আকবরের মেয়ে বলে সনাক্ত করে।
এ ঘটনায় শিশুটির ভাই বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এ একটি মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং ০৯ (০১)০৩, ধারা ৯ (৩)। পরবর্তীতে ময়না তদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে দীর্ঘ শুনানী ও স্বাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ২০১৮ সালের ১১ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত, নারায়ণগঞ্জ এর বিজ্ঞ বিচারক মামলার পলাতক আসামি চার গণধর্ষককে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করার আদেশ দেন।
গ্রেপ্তারকৃত শাহাদাত ঘটনার পরই ফতুল্লার কাশিপুরে ফুফুর বাড়িতে আতœগোপন করে। এরপর ২০০৬ সালে সে কাতার চলে যায়। চার বছর পরে দেশে ফিরে খালাতো বোনের সাথে বিয়ের কাবিন হলেও সংসার করতে পারে নি। এরপর ২০১১ সালে অন্য মহিলাকে বিয়ে করে এবং তাদের একটা ছেলে সন্তানও হয় কিন্তু তার স্ত্রী পূর্বের ঘটনা জানলে তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়। সম্পর্কচ্ছেদ হলে সে তার সন্তানকে নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরে চলে যায় এবং গত ৭/৮ থেকে বছর সেখানে রাজমিস্ত্রীর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করত। মূলত গ্রেপ্তার এড়াতে এতোদিন সে গাজীপুরেই লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিল।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আসামি শাহাদাতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পলাতক অন্য দুই আসামিকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।