দেশে বিভিন্ন জায়গায় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে যার অধিকাংশ চালকদের উপর দায় করা হয়। এর বিভিন্ন কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায় চালকদের ৮৯ ভাগেই মাদকের সেবন করে। আর এই পরিবহন চালকেদর মাদকাসক্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো বন্ধ করতে।
গত ২২ অক্টোবর ২০২০ সালে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চালকদের ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নলক্ষে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষে (বিআরটিএ) এ বছরের মাঝামাঝিতে ড্রাইভিং লাইসেন্সর জন্য নতুন শর্তে কাজক্রম শুরু করে।
এখন থেকে পেশারদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু/নবায়নকালে প্রার্থীকে আবেদনপত্রের সঙ্গে সরকারি হাসপাতাল কর্তৃক সম্পাদিত ডোপ টেস্ট রিপোর্ট/সনদ জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট রিপোর্ট পজিটিভ হলে (মাদক সেবনের আলামত পাওয়া গেলে) বা এতে কোনো বিরূপ মন্তব্য থাকলে সেক্ষেত্রে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু/নবায়ন করা হবে না।
আর এই ডোপ টেস্টের জন্য সব জেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে এবং ঢাকায় ৬ টি হাসপাতালে ও সরকারের মাদক নিয়ন্ত্রণ বিভাগের অনুমোদিত সব ল্যাবরেটরিতে মাদক পরীক্ষা করা যাবে। তার মধ্যে ঢাকা ৬ টি হাসপাতাল গুলো মধ্যে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান(নিটোর), জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল।
এদিকে সব জেলা পর্যায় ডোপ টেস্টের কথা উল্লেখ থাকলেও ঢাকার নিকটবর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জে এ সেবা চালু হয়নি। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ নানা কারণে সাধারণ মানুষের ডোপ টেস্টের প্রয়োজন সরকারি হাসপাতল গুলো থেকে এই সেবা নিতে পারছে না আবেদনকারীরা। এতে নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা আবেদনকারীরা ভোগান্তিতে পরছেন বলে অভিযোগ তুলেন।
এ বিষয় আড়াইহাজর থেকে আসা আনোয়ার হোসেন নামে এক আবেদনকারী সাথে কথা বললে তিনি জানান। এখানে (নারায়ণগঞ্জ বিআরটিএ) আসার জন্য আমাকে খুব সকালে আসতে হয়েছে লাইসেন্স পাবার জন্য কয়দিন ধরে দৌড়াতে হচ্ছে।
আবার ডোপ টেস্টের আবেদন পত্রে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতাল উল্লেখ্য থাকলেও হাসপাতালে যেয়ে কোনো সেবা পাই নাই। আমাকে তার জন্য ঢাকায় যেতে হয়েছে। শুধু ডোপ টেস্টের জন্য আমাকে কয়েক দিন যেতে হয়েছে আজ যদি নারায়ণগঞ্জে করতে পারতাম তাহলে আমাকে এতো ভোগান্তিতে পরতে হতো না।
নারায়নগঞ্জেসদরে রাজিব হোসেন নামে এক আবেদনকারীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আবেদন পত্রে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের নাম উল্লেখ থাকলেও যাবার পর হাসপাতাল থেকে জানায় এখানে ডোপ টেস্ট করানো হয় না আমি আর সময় নষ্ট না করে ঢাকা চলে যাই। এতে আমার মত অনেকে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
জয়নাল নামে এক আবেদনকারী জানান, লাইসেন্সের জন আবেদন করতে আসছিলাম এখন লাইসেন্সের জন্য ডোপ টেস্ট লাগে আগে লাগতো না এখন লাগে। এখন এর জন্য আবার হাসপাতালে দৌড়াও। আবার কই করামু কি করালাগে বুঝতাছি না আজকে কাজ ফালায়া আসছি।
একদিন কাজ বন্ধ করলে একদিনের ইনাকম বন্ধ। আবার লাইসেন্স না থাকলে মামলা। এখন কয়দিন লাগে কে জানে।
এই বিষয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিআরটি এক কর্মকর্তা জানান গত নিরাপদ সড়ক দিবসে নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন বলেছিলেন নারায়ণগঞ্জ থেকে আবেদনকারীরা ডোপ টেস্ট করাতে পারবে। কিন্তু তারা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আমাদের কাছে অনেক আবেদকারী আছে যারা এবিষয় কিছুই জানে না তারা অফিসে নিচে এসে ভিড় করে তাদের খোঁজ নিয়ে জানান যায়।
তারা ডোপ টেস্টের জন্য কোথায় করবে কি করবে কিছু জানে না। তাদের ধারণা দেয়ার পর ঢাকা চলে যায় ডোপ টেস্টে করতে। এই সেবা নারায়ণগঞ্জে হলে তাদের এমন ভোগান্তির মধ্যে পরতে হয় না।
এই বিষয় নারায়ণগঞ্জ বিআরটিএ সহকারি পরিচালক (ইঞ্জি.) মো শামসুল কবীর জানান, আমরা এব্যাপারে কয়েক বার চিঠি দিয়েছি। এই বিষয় সিভিল সার্জন সব সময় বলেন হবে হবে। নভেম্বর মাসে চালু করার কথা ছিলো কিন্তু করেন নাই। তিনি (সিভিল সাজর্ন) তার অফিসের সমস্যার কথা বলছেন।
এই বিষয় নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. এএফএম মুশিউর রহমান জানান, আমাদেরকে জুন মাসে বরাদ্দ দেয়ার কথা ছিলো কিন্তু দেয়নি এবছর আবার আবেদন করেছি। আমরা বারদ্দ পেলেই কার্যক্রম শুরু করবো আমাদের সবই আছে শুধু কিট টা নেই।
সারা বাংলাদেশে প্রচুর চাপ যার ফলে ঢাকা কেন্দ্রিক হয়ে গেছে ফলে ঢাকার বাইরে কম বরাদ্দ দিচ্ছে। আমার চেষ্টা কোনো ত্রæটি নেই। আমি এই বিষয় বার বার লিখছি।
বর্তমানে কিছু ফান্ড কার্ট সার্ট করা হচ্ছে সরকারে ব্যয় সংকোচন নীতির কারণে যা এটার মধ্যে পড়ে গেছে। অনেক ভুর্তকি দিয়ে সরকারকে কাজটি করাতে হচ্ছে যা বাহিরের তুলোনায় সরকারি রেট কম । তারপরও আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি।