নারায়ণগঞ্জে আদালতে পাড়ায় আলোচিত সেই রেহেনার আমলনামা আদালতে জমা। ফতুল্লা সস্তাপুর এলাকার বাসিন্দা ফেরদৌস আক্তার রেহেনার জামিন পুনরায় নামঞ্জুর করেছে বিজ্ঞ আদালত।
রবিবার (১৮ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে এগারোটায় ২নং ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট, কাউসার আলম এর বিজ্ঞ আমলি আদালতে এ শুনানি হয়।
বাদী পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন সরকারি লিগ্যাল এইড আইনজীবী জান্নাতুল ফেরদৌস।
আসামির পক্ষের আইনজিবী এড. মাহাফুজ আহম্মেদ, এড.সুলতান আরিফিন, রেহেনার জামিন চাইলে বিজ্ঞ আমলি আদালতের ( ম্যাজিস্ট্রেট) কাউসার আলম
তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেয়ণের আর্দেশ দেন। যার সি, আর মামলা নং ১২৮০/২০২২। ধারা- ৪২০/৪০৬/৪১৭/৩২৩//৫০৬(১১) দন্ড বিধি অনুযায়ী তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত বুধবার ( ৭ ডিসেম্ব ) নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় নিজেকে আইনজীবী পরিচয়ে এক নারীর সাথে প্রতারণাসহ ওই নারীকে চড় মারার অভিযোগে রেহেনাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ । আদালতের শুনানির পরে ফেরদৌসি আক্তার রেহেনাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এসিস্ট্যান্ট পাবলিক প্রসিকিউটর এড.সুইটি ইয়াসমিন জানান, আমার বিরুদ্বে অভিযোগ করেছে সেটা মিথ্যা ভিত্তিহীন তাদের দায় এরাতে এবং এ মামলা থেকে রক্ষা পেতে কৌশল অবলম্বন করছে তারা। এছাড়া যে দিন তারা অভিযোগ করেছে হুমকি-ধামকি উল্লেখ করেছে তা প্রমান চাই। তাছাড়া সেই দিন (১৫ডিসেম্ব) আমাদের যুবমহিলা লীগের মহা সমাবেশে ছিল। ঢাকায় অসংখ্য নেতৃবৃন্দ নিয়ে আমাকে ঐ সমাবেশে যোগদান করি। এবং সেখানে প্রথম সারিতে অবস্থান করি। তাহলে তারা কি করে হুমকীর প্রশ্ন তুললেন! আমি তার প্রমান চাই। নয়তোবা আইনি ব্যবস্থা নিব।
তিনি আরোও জানান, মূলত সে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় অপকর্মের প্রমান রয়েছে আমাদের কাছে। সরকারি অনুমোদিত হীন, অনিবন্ধিত তালাশ নিউজ টিভি ৭৯,সমাজের জন্য মানবাধিকার আইন আন্তর্জাতিক প্রয়োগকারী সংস্থা ভূয়া সংস্থা, আল-আসওয়াদ এজেন্সী আলীয়দ ইয়ার ট্রাভেলস্, সুলতানা আহাম্মদ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ চেয়ারম্যান, রোটারী ক্লাব অফ মিলিনিয়াম ঢাকা নির্বাহি সদস্য, বাংলাদেশ মানবাধিকার কাউন্সসিল মহিলা বিষয়ক সহ সম্পাদক, নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ সংসদ যুগ্ম আহ্বায়ক, কেন্দ্রীয় কমিটি বাংলাদেশ মহিলা জনদল বিজেডি আহ্বায়ক, কেন্দ্রীয় কমিটি। এসমস্ত ভূয়া নামধারী কার্ড ব্যবহার করে মানুষকে প্রতারণার করে ঠকাচ্ছে। এবং সাধারণ খেটে খাওয়া ভুক্তভোগীদেরকে টার্গেট করে এই প্রতারক রেহেনা। এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে তার ফয়দা হাসিল করে, কাউকে সে গোনায় ধরে না তখন। সুধুতাই নয় বিভিন্ন সময় রেহেনা নিজেকে আইনজীবী পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতো। আমরা শুনেছিলাম আজ হাতে নাতে পেয়েছি সে নিজেকে আইনজীবী পরিচয়ে একজন নারীর সাথে প্রতারণা করেছে। ভুক্তভোগী ওই নারী প্রতিবাদ করায় চড় থাপ্পড় মেরেছে।
প্রসঙ্গত, এরআগেও তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালানোর কারণে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলায় অভিযুক্তও তিনি। এছাড়াও রেহেনার অন্যতম সহযোগী বহুমুখী প্রতারণার মূলহোতা প্রদীপ চন্দ্র বর্মণ (৩৫) সিদ্ধিরগঞ্জে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই বের হতে শুরু করে থলের বিড়াল। নিজেকে আলোচনায় আনতে গিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আসামীও হয়েছেন। তাছাড়া রেহেনার বিরুদ্ধে ধর্মগঞ্জের হাবিব নামে এক ব্যক্তিকে নারী দিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং করারও অভিযোগ রয়েছে। ওই সময় তার কাছ থেকে হাতিয়ে নিযেছে ৩১ হাজার ২০০ টাকা ও মোবাইল সেট।
এড. সুইটি আরোও জানান ৭ডিসেম্বরে লিগ্যাল এইডের অফিসের সামনে আমার সাথে সমঝোতার কথা বলে এই মামলার বাদীনিকে মারধর করে পরে লিগ্যাল অ্যাডের স্যার আইনি ব্যবস্থা নেন। সে সময় তিনি নিজেকে এ্যাডভোকেট পরিচয় দিলে সংবাদ মাধ্যম কর্মীরা সেই সময় তার কাছ থেকে নারায়ণগঞ্জের বার কাউন্সিলের আইডি কার্ড দেখতে চাইলে সে দেখাতে পারেন নাই। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. হাসান ফেরদৌস জুয়েল এবং সাধারণ সম্পাদক রবিউল আমিন রনি আদালত পাড়ায় টাউট ও প্রতারক সরাতে কাজ করে যাচ্ছে। এ খবর জানতে পেরে উানারা এসে সহযোগীতা করায় সেদিন আর পালাতে পারেনি। পরে লিগ্যাল অ্যাডের জজ স্যার নিজে পুলিশ কল করলে সি এস আই জেলার বড় অফিসার আসাদ সাহের ৫৪ ধারায় এ জেলে পাঠিয়ে দিয়েছে।
কালো কোর্ট ছাড়া প্রতারণা বেগাত ঠটবে বলে সব সময়ই সে কালো কোর্ট পরিধান করে থাকে। তার এলাকায় সবাই তাকে এডঃ রেহেনা নামেই চিনে বলে বাদী পক্ষের আইনজীবী জান্নাতুল ফেরদৌস জানান।
লিগ্যাল এইড আইনজীবী জান্নাতুল ফেরদৌস আরোও জানান, শুনানী কালে বাদী পক্ষে বারের প্রেসিডেন্ট হাসান ফেরদৌস জুয়েল বলেন, উনি অনেক আগেই এডঃ মজিদ খন্দকারের সাথে মুহুরীর কাজ করতো। তার অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য আমরা তার কার্ড বাতিল করে কোর্টে প্রাঙ্গন থেকে বের করে দেই। এরপর থেকেই তিনি নিজেকে আইনজীবী পরিচয় দিয়ে চলেন।