দেশে কয়লা সংকটে দ্বিগুনে দামে কয়লা আমাদানি এ বছর লোকসানের আশঙ্কা করছেন নারায়ণগঞ্জ বন্দরের প্রায় অর্ধশতাধিক ইটভাভাটা।
চাহিদা মোতাবেক কয়লা সরবরাহ না থাকায় কাঁচা ইট পোড়ানো ব্যহত ও অন্যান্য খাতে দ্বিগুন খরচে আবাসন খাতে এর প্রভাব পড়ছে বলে জানিয়েছেন ইট শিল্প মালিকরা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বন্দর উপজেলার মদনপুর, ধামগড় ও মুছাপুর ইউনিয়ন এলাকায় গড়ে উঠেছে প্রায় অর্ধশতাধিক ইটভাটা। বছরে প্রায় ৫০-৬০ কোটি ইট উৎপাদন করে তা নারায়ণগঞ্জ জেলা ও রাজধানীর কাছাকাছি এলাকায় আবসান নির্মাণে চাহিদা মেটায়।
সাধারণত ইটভাটাগুলোতে সেপ্টেম্বরে শেষে অক্টোবরের প্রথম দিকে মাটি সংগ্রহ ও কাঁচা ইট তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়। কাঁচা ইট রোদে শুকিয়ে নভেম্বর মাসের প্রথমে ইট পোড়ানো শুরু করলেও এবছর কয়লা সংকটে এখনো অনেক ইটভাটায় প্রথম রাউন্ডের ইট পোড়ানো হয়নি। ফলে ইট উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে ইটভাটাগুলোতে। কয়লা সংকটে এ মৌসুমে কাঁচা ইটের ব্যপক মজুদ রয়েছ ইটভাটা গুলোতে। বৃষ্টিপাত হলেই কাঁচা নষ্ট হলে আরো লোকসানের পরবেন বলে ইটভাটার মালিকদের দাবি।বিসমিল্লাহ ব্রিকস ফিল্ড মালিক আজিজুল হক আজিজ বলেন, ইট শিল্প এখন বিধ্বস্ত অবস্থায় রয়েছে। এক বছরে ৪-৫ মাসের ব্যবসার লাভের টাকা দিয়ে ১২ মাস চলতে হয়। ইটভাটা গুলোতে প্রায় ৫ শ পরিবার কর্মসংস্থান ।
শ্রমিকদের মজুরি ও কয়লার দাম দ্বিগুন বৃদ্ধির ফলে বেশি দামে ইট বিক্রি করেও লাভের মুখ দেখছি না। একটি ইট তৈরি করতে ৮০ শতাংশ খরচ কয়লায়।গত বছরে ১ লক্ষ ইট উৎপাদনের বিপরীতে ১শ টন কয়লা আমদানি করা সম্ভব হয়েছিল। এ বছর অর্ধেক পরিমাণ কয়লাও সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না।
ন্যাশনাল ব্রিকস ম্যানুফেকচারের মালিক মো. শাফায়েত হোসেন জানান, কয়লা সংকটের ফলে ইটভাটা কাঁচা ইট পোড়াতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমার দুটি ইটভাটায় প্রতিমাসে প্রায় ৫০০ টন কয়লার প্রয়োজন হয়। ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত যদি এমন অবস্থায় চলতে থাকে তাহলে দুটি ইটভাটার মধ্যে একটি ইট ভাটা বন্ধ করে দিতে হবে।নারায়ণগঞ্জ ইটভাটা শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মমিন খান বলেন, দুই বছর আগেও প্রতি টন কয়লা ৭ হাজার টাকায় ক্রয় করেছি। গত দুই বছরের ব্যবধানে টন প্রতি কয়লার মূল্য দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়ে এখন ৩২ হাজার টাকা। কয়লা সংকটের বিষয়টি সমাধান না হলে অচিরেই অনেক ইটভাটা বন্ধ হয়ে যাবে। এতে দেশের ৮০ লক্ষ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে।