নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ¦ আনোয়ার হোসেন বলেন, রাজনীতিতে আমার আর খোকন সাহার কোন লোভ লালসা ছিল না। আমার মা, আমার বোন ও আমার ভাই আমার ছেলে সন্তানরা কোন দিন রাজনীতিতে আসবে না। এইটি আমি আপনাদের নিশ্চিত করে বলে দিতে চাই। কারণ উত্তরাধীকার হিসেবে রাজনীতিতে আগমন আমার পর আমার ছেলে, ছেলের পর নাতি ও নাতির পর পুতি এই যে রাজনীতি প্রক্রিয়া এ প্রক্রিয়ার মধ্যে আমরা সম্পৃক্ত না।
আমরা সেটা হতে পারি নাই। আমরা যারা রাজনীতি করি তৃনমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে। আমি যাদের নিয়ে রাজনীতি করি যাদের নিয়ে মিছিল করি, যাদের নিয়ে মিটিং করি যাদের নিয়ে আমি আন্দলন সংগ্রাম করি তারাই হলো আমার রাজনীতির ওয়ারিশ। তারা বাঁচলে আমিও বাঁচব। তারা হেরে গেলে আমিও হেরে যাব। এই হলো আমার বাসনা এই হলো আমার কামনা।
বন্দরে ২৬ ও ২৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের ত্রি বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শুক্রবার বিকেল ৩টায় বন্দর উপজেলার গকুল দাসের বাগস্থ চৌরাস্তা খেলার মাঠে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
আনোয়ার হোসেন আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট এ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নির্মম ভাবে হত্যা করার পর তৎ সময়ে তোলারাম কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারন সম্পাদক হিসেবে আমি তা মেনে নিতে পারি নাই। আমি বঙ্গবন্ধু সান্নিধ্য একবার এসে ছিলাম। ১৯৭৪ সালে দূর্ভিক্ষ যখন ছিল। তখন তোলারাম কলেজের সাধারন সম্পাদক হিসেবে তার ডাকে গিয়ে ছিলাম। টিফিনের পয়সা জড়ো করে তার রিলিফ ফান্ডে দিয়ে ছিলাম। তোমরা না খেয়ে টিফিনের টাকান আমার রিলিফ ফান্ডে জমা দিয়েছো তোমরা দূর্বল হয়ে যাবে।
তিনি আরো বলে ছিলেন লেখাপড়া কর। লেখাপড়া মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন কর। যে জাতি যত শিক্ষিত সে জাতি তত উন্নত। তাই লেখাপড়া করে উন্নত হয়ে ছিলাম। আপনারা যেনে খুশি হবেন নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল থেকে ১৯৭০ সালে টেলেন্টপুলে ভিত্তি পেয়ে ঢাকা বোর্ডে উত্তীর্ন হয়ে ছিলাম। আমার পরিবারে ইচ্ছা ছিল আমাকে ডাক্তার বানাবেন। বিধাতা সহয়ক নয় বিধায় আজ রাজনিতীতে আমার পর্দাপন হয়েছে। আমি কখনো ভাবতে পারি নাই আমি আজ রাজনীতিতে পর্দাপন করব।
আমি ভেবে ছিলাম আমি একজন ডাক্তার হব আমি একজন ভালো ইঞ্জিনিয়ার হব। ভালো ছাত্র যখন হয়েছো আমি ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ার হয়ে আমার পরিবারের মুখে হাসি ও সুনাম বৃদ্ধি করব। আমি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতাম। আমি বঙ্গবন্ধুর ভাষন শুনতাম। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ আমি বঙ্গবন্ধুর ভাষন শুনার জন্য আমি আমার বড় ভাইকে বললাম আমি বঙ্গবন্ধুকে ধেখতে চাই ও তার ভাষন শুনতে চাই। আমি সেদিন গিয়ে ছিলাম। ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটে সামনে গিয়ে ছিলাম।
আমি উজ্জেবিত হয়ে ছিলাম বঙ্গবন্ধুর প্রতি। এত বড় মাপের একজন নেতা এত বড় মাপের একজন দেশ প্রেমিক তার মত যদি হতে পারতাম। তাহলে নিজেকে ধণ্যমনে করতাম। মনের অজান্তেই আমি বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে ফেলেছি। আল্লাহ সহয়ক আমি তোলারাম ছাত্র সংসদের সাধারন সম্পাদক পদে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হলাম। সে থেকে আমার রাজনীতি পক্রিয়া শুরু হলো। আওয়ামীলীগের জন্ম নারায়ণগঞ্জে।
বঙ্গবন্ধুর কারনে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। পৃথিবীর মধ্যে বিরল মাত্র ৯মাস যুদ্ধ করে আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি। এখন অনেক দেশ স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করে যাচ্ছে। স্বাধীনতা অর্জন করতে পারেনি।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭০ সালে নির্বাচনে আমরা ১শ’ ৬৯টি আসনের মধ্যে ১শ’ ৬৭টি আসনে নির্বাচিত হয়েছি। আমরা ১৯৯৬ ইং সালে আবারও নির্বাচিত হই। সর্বপরি ২০০০৯ সালে আমার আবারও নির্বাতি হয়ে সরকার গঠন করি।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা আসার পর থেকে সারা দেশে আমূল পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশ মাধ্যম আয়ের দেশে পরিনত হয়েছে। নিজেদেও অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মান হচ্ছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা আসার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান হত্যাসহ যুদ্ধঅপরাধীদের বিচারকাজ সম্পর্ন করেছে।
ত্রি বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এডঃ খোকন সাহা। নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীরীগের সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ ওসমান গনী ভ’ইয়ার সভাপতিত্বে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধ আলহাজ¦ এম.এ রশীদ। মহানগর আওয়ামীরীগ নেতা এডঃ হাবিব আল মুজাহিদ পলুর সঞ্চালনায় ত্রি বার্ষিক সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামীরীগ নেতা আলহাজ¦ নূরুল ইসলাম চৌধূরী, যুগ্ম সম্পাদক জি.এম. আরমান, বীরমুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলী, মহানগর আওয়ামীলীগের সদস্য আলহাজ¦ আবেদ হোসেন, মহানগর মহিলা আওয়ামীরীগের নেত্রী নূরুন নাহার সন্ধ্যা প্রমুখ। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ২৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা আফজাল হোসেন।
এদিকে, সম্মেলন শেষ মুহুর্তে ২৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলামের সমর্থকরা কমিটি ঘোষনা দিতে সম্মেলনস্থলে হট্টগোল শুরু করলে ওই সময় মহানগর আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ কমিটি নাম ঘোষনা না করেই সম্মেলন সমাপ্ত ঘোষনা করেন।