সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ৩৯তম প্রতিষ্ঠার্বাষিকী উপলক্ষে ছাত্র সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) চাষাড়ায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এ ছাত্র সমাবেশ ও শহরে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়নগঞ্জ জেলার সভাপতি মুন্নী সরদারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক অনিক কুমার দাস, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সহসভাপতি রিনা আক্তার, সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহাম্মেদ রাতুল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক নাছিমা সরদার।
আবু নঈম খান বিপ্লব বলেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ১৯৮৪ সালে ২১ জানুয়ারি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অগ্নিগর্ভ থেকে জন্ম লাভ করে। জন্মলগ্ন থেকে ছাত্র ফ্রন্ট দেশে একটি সর্বজনীন, বিজ্ঞানভিত্তিক, সেক্যুলার, গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন, একই পদ্ধতির শিক্ষানীতি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করে আসছে। শাসকগোষ্ঠীর শিক্ষা সংকোচনের যে কোন আক্রমণ মোকাবিলার আন্দোলনে ছাত্র ফ্রন্ট অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।
স্বাধীনতার ৫২ বছরেও এই রাষ্ট্র মুক্তিযুদ্ধে তার ঘোষিত অূঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। সবার জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার বদলে এগুলোকে বাজারি পণ্যে পরিনত করেছে। শিক্ষাখাতে রাষ্ট্রীয় বরাদ্দ কমেছে। শিক্ষা লাগামহীনভাবে হয়ে পড়েছে ব্যয়বহুল। ক্রমাগত বাড়ছে বেতন-ফি, নামে বেনামে নানান খাতে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ।
বর্তমান সময়ে কাগজসহ শিক্ষা উপকরণের দাম আকাশচুম্বি। বই, খাতা, কলমসহ শিক্ষা উপকরণের অসহনীয় মূল্যবৃদ্ধিতে হিমশিম খাচ্ছে ছাত্র সমাজ তথা দেশের মানুষ। দেশে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা বিরোধী সাম্প্রদায়িক শিক্ষার প্রসার ঘটেছে। শিক্ষার বিষয়বস্তুতে অর্ন্তভুক্ত হয়েছে কূপমন্ডুক, অবৈজ্ঞানিক, সাম্প্রদায়িক বিষয়বস্তু।
অনিক কুমার দাস বলেন, সরকার দেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদ, ছাত্র সংগঠন, রাজনৈতিক দলসমুহের সাথে আলোচনা না করে আমলাদের দ্বারা একতরফাভাবে তৈরি জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২০ চালু করেছে। যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না করে এ শিক্ষা চালু করায় একটা হযবরল অবস্থা তৈরি করবে। এই শিক্ষাক্রমে পরীক্ষার মূল্যায়নে দুর্নীতি বাড়াবে, বিজ্ঞান শিক্ষাকে দুর্বল করবে। সাম্প্রদায়িক শিক্ষা সম্প্রসারিত করবে।
কর্মমুখী শিক্ষার নামে বিবেক মনুষ্যত্ব মূল্যবোধ গড়ে তোলার শিক্ষা উপেক্ষিত হবে। মুক্তিযুদ্ধের আগে পরে আমাদের দেশের শিক্ষা আন্দোলনে যে শিক্ষানীতির আকাঙ্খা ছিল তার প্রতিফলন ঘটেনি। তাই শিক্ষাক্রম ২০২০ বাতিল করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই উৎসব করেছে। বাস্তবে একটা বড় অংশের ছাত্রকে এখনও বই দিতে পারেনি। যাদের বই দেয়া হয়েছে সে বই ভুলে ভরা ও নি¤œমানের ফলে বই উৎসব ছাত্রদের আনন্দতো দিতে পারেনি বরং বিস্বাদ নিয়ে এসেছে। এ নি¤œ মানের বই বাতিল করে সকল ছাত্রের জন্য নতুন করে বই প্রদান করতে হবে। নেতৃবৃন্দ নারায়ণগঞ্জে পাবলিক বিশ^বিদ্যালয় এবংূ পর্যাপ্ত সরকারি কলেজ ও বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।