নারায়ণগঞ্জ -৪ আসনের সাংসদ আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, বিএনপির সাথে এতো গণতন্ত্র চর্চা করার মানসিকতা আমার নাই। বিএনপির ভাইয়েরা যারা আছেন তারা মনে রাখবেন ২০০১ থেকে ৭ সাল পর্যন্ত আপনারা কি করেছেন এবং ৭৫ এর পরে আপনারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন নারায়ণগঞ্জে আপনারা কি করেছেন।
আপনারা যারা বিএনপি করছেন অনেক বড় বড় উচ্চারণ করছেন। আপনাদের উদ্দেশ্য করে বলতে চাই, শান্ত থাকুন। নারায়ণগঞ্জের পরিবেশ শান্ত থাকতে
দেন। আমরা সবাইকে ক্ষমা করেছি। আমার বাপ দাদার বাড়ি হীরা মহলে গিয়ে পেশাব করা হয়েছিল। আগুন দেওয়া হয়েছিল।
আমাদের বহু নেতাকর্মীকে, সেলিমকে জেলখানা থেকে এবং এখন আমাদের নিয়াজুলের বড় ভাই নজরুল ইসলাম সুইটকে রিমান্ডের নামে জেলখানা থেকে ডান্ডাবেরী অবস্থায় বের করে গুলি করে মারা হয়েছিল।
এগুলো যদি একবার আমাদের মাথায় মনে পড়ে যায় তাহলে কিন্তু আপনারা জন্য নারায়ণগঞ্জে বসবাস করা কঠিন হয়ে যাবে। এটা পরিষ্কার করে বলতে চাই। আমরা ধৈর্য ধরেছি কিন্তু আমরা দুর্বল না। একটা কারণে ধৈর্য ধরেছি, আপনারা যে অপরাধ করেছেন তার জন্য আপনাদের বিচার হয়েছে জনগণ আপনাদের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে।
রাষ্ট্রিয় ভাবে এবং নারায়ণগঞ্জ বারেও আপনাদের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। আমরা আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছি এবং জনগণের কাছে বিচার দিয়েছি যাদের উপর আমরা বিশ্বাস করি।
এই কোর্ট থেকে এড. খোকন সাহা থেকে শুরু করে ওয়াজেদ আলীসহ অনেককেই চলে যেতে হয়েছে। রাস্তার সামনে থেকে আমাদের আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলকে পিস্তল ঠেকিয়ে গাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এগুলো ধরনের অত্যাচার না এগুলো ভাঙচুর মাংচুর হয়েছিল। এমনকি এমন অত্যাচার করা হয়েছিল আপনারা যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে দেখবেন লিংক রোড়ে দুটি কবর আছে। একটি পাপ্পু আরেকটি মনিরের কবর। মাজারের সাথে মসজিদের ঠিক
পাশে। এই কবর দুটি আমাদের পাপ্পু মনিরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। আমরা কবরস্থানে নিতে পারিনি। যখন দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে যেতে ছিলাম তখন ওই লাশের উপর গুলি করা হয়েছিল। ওই সময় মনিরের লাশ নামিয়ে লাশ থেকে ৭০টি গুলি বের করা হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালত পাড়ায় নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ মনোনীত এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল-এড. মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া পরিষদ প্যানেলের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে বক্তব্যে তিনি এসব কথা গুলো বলেন।
শামীম ওসমান বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসছি আমাদের বাড়িঘরে হামলা করা হয়েছিল। আমার বাপ দাদার বিটা বাড়ি বাইতুল আমান ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। সেলিম ওসমানের ফ্যাক্টরিতে যেয়ে ৩০০ গরুর দুধের বান কাটা হয়েছিল। সিদ্ধিরগঞ্জে এক নেতা নির্দেশে আমাদের নয়জন নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল। ৪৯ জন লোককে আমাদের হাত দিয়ে দাফন করতে হয়েছে। এরা কারা।
এইতো কয়েকদিন আগে তারা এমন একটাই পরিবেশ সৃষ্টি করল যেমন তারা ক্ষমতায় এসে পড়ছে। তারা ক্ষমতায় আসছে তারা ক্ষমতায় আসছে। তারা বলেছে ১০ তারিখে হেন হবে টেন হবে। আমি বলেছি ঘোড়ার ডিম হবে। আমি টেলিভিশনেই বলেছিলাম ঘোড়ার ডিম হবে এখনো বলছি কোন ডিমই হবে না তাদের। ওদের ডিম শেষ। আম্মাগো ভাইয়াকে বলে অনেক ভাগ হয়ে গেছে।
শামীম ওসমান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের একটা বক্তব্যকে টেনে বলেন, আমাদের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল
একটা বক্তব্য দিয়েছেন বলেছিলেন বিশ্বাসঘাতক এবং ষড়যন্ত্রকারী এক হয়ে জাতির পিতা কন্যাকে হত্যা করার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশকে পিছনের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। সারা বাংলাদেশে শত বছরে, হাজার বছরে একজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর জন্ম নিয়েছে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল।
শত বছরে একজন করে খন্দকার মোস্তাক সৃষ্টি হতো। এখন বাংলাদেশের জেলায় জেলায় খন্দকার মোস্তাক এর সৃষ্টি হয়। নারায়ণগঞ্জে তো খন্দকার মোস্তাকের অভাবে নেই আছে। এরা আছে এরা কিন্তু ওদের চেয়েও ভয়ংকর বেশি। পলাশী প্রান্ত থেকে শুরু করে আজও পর্যন্ত কিন্তু ওরা ভয়ংকর। তাহলে কিন্তু আমাদেরকে ২০০ বছর ব্রিটিশের গোলামী করতে হলো নাগে। আমরা করেছি কিছু সংখ্যক মীরজাফরদের কারণে।
এসময়ে আরও উপস্থিত, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, যুগ্ম সম্পাদক শাহ্ধসঢ়; নিজাম, জেলা জজ আদালতের পিপি এড. মনিরুজ্জামান বুলবুল, সিনিয়র আইনজীবী এড. আব্দুর রশিদ ভূঁইয়া, এড. মাসুদুর রউফ, সভাপতি প্রার্থী এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল, সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রার্থী এড.আলাউদ্দিন আহমেদ, সহ-সভাপতি প্রার্থী এড. রবিউল আমিন রনি,
প্রার্থী সাধারণ সম্পাদক এড. মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া, প্রার্থী যুগ্ম সম্পাদক এড. কামাল হোসেন, আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. মাহবুবুর রহমান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি ও কাউন্সিলর মশিউর রহমান মতি, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, আগামী ৩০ জানুয়ারি সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা
পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে আইনজীবী সমিতির নবনির্মিত ডিজিটাল
বার ভবনের দ্বিতীয় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে । মোট ভোটার ১১৫১জন।