নারায়ণগঞ্জে শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমি ৩১তম বর্ষপূর্তি ও রনজিত জন্মোৎসব
পালন করছে।
শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৫টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ
মিনারে ওই অনুষ্ঠান পরিচালনা করা হয়েছে। এবারের ‘রনজিত পুরুস্কার’ পেয়েছেন
প্রাণপ্রকৃতির শিল্পী কফিল আহমেদ।
বর্ষপূর্তি ও রনজিত জন্মোৎসব অনুষ্ঠানে শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমির সভাপতি
মাইন উদ্দিন মানিকের সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণবুদ্ধিজীবী
অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব রফিউর রাব্বি ও সমগীতের সম্বয়ক
শিল্পী অমল আকাশ।
গণবুদ্ধিজীবী অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, বাংলাদেশে অসংখ্য সাংস্কৃতিক
সংগঠন প্রয়োজন। ৩১ বছর যাবত শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমি কাজ করে যাচ্চে,
এটা আমাদের গৌরবের বিষয় ও আনন্দের বিষয়। শিশুদের সক্রিয়তা, শিশুদের
চিন্তুা, কাজের এবং সাংস্কৃতির স্বাধীনতাকে সমৃদ্ধ করাই আমাদের দায়িত্ব। আর এই
কাজের জন্য শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমির মতো সংগঠন প্রয়োজন। রনজিত
শারীরক ভাবে নেই, কিন্তু এটা বুঝতে পারছি কোন ব্যাক্তি যদি সমষ্টির সাথে,
চিন্তার সাথে, ভাবের সাথে ও সংস্কৃতির সাথে যুক্ত থাকেন। তাহলে তার কাজের
মধ্যে দিয়ে জীবিত থাকেন, তার মৃত্যু হয় না। আমরা রনজিতের সেই উপস্থিতি
অনুভব করছি। এই অনুষ্ঠানে যে স্লোগান দেয়া হয়েছে ‘রা করিয়ে দাও সকলেরে সকল প্রকারে’। এটা হলো এই সময়ের সব থেকে উপযুক্ত স্লোগান। এটা সংস্কৃতির
সজাগ দৃষ্টির পরিচয়। যে রাজনৈতিক দল বা যে সংগঠন প্রাণ প্রকৃতির সাথে
নিজেকে যুক্ত করতে পারবে না, তাদের পক্ষে মানুষের জন্য লড়াই করা সম্ভব হবে
না।
তিনি আরও বলেন, আমরা গণতন্ত্রের লড়াই করছি। কিন্তু সেই শাসন ব্যবস্থা এখনো
আসে নাই, যাকে আমরা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা বলতে পারবো। মুক্তিযুদ্ধের ৫১
বছর পরও আমাদের ‘রা করিয়ে দাও সকলেরে সকল প্রকারে’ এই স্লোগান দিতে
হচ্ছে। কয়েদিন আগে দেখলাম বই মেলায় একটা সিদ্ধান নেয়া হয়েছে ‘কোন বইয়ের
মধ্যে কোন উস্কানিমূলক কথা আছে কিনা এটা দেখবে পুলিশ। তার মানে এখন
পুলিশ সিদ্ধান্ত নিবে একটা বইয়ে কোন লেখা যাবে কোন লেখা যাবে না।
তিনি বলেন, সরকার যাদের মান সম্মান রক্ষার জন্য যাবতীয় যে আয়োজন
করেছেন। এখন আমাদের প্রাথমিক শিক্ষকের অভাবে অনেক স্কুল বন্ধ হয়ে যওয়ার
পথে, অনেক হাসপাতালে ডাক্তার নাই। মানুষের পেছনে লেগে থাকার জন্য ইজরাইল
থেকে যন্ত্রপাতি আনা হচ্ছে। যাতে মানুষ কথা বলতে না পারে, কথা বলতে গেলে
যাতে যন্ত্রের প্রয়োজন হয়। রাজতন্ত্র থেকে আলাদা কি পাচ্ছি এটা বুঝা খুব মুশকিল।
এই অবস্থায় এই দেশের মানুষ হিসেবে বলতে পারি, একজন লেখকের কাজই তো
উস্কানি দেয়া। চিন্তা করার উস্কানি দেয়া, প্রশ্ন করতে উস্কানি দেয়া, অন্যায়কে
প্রতিবাদ করতে উস্কানি দেয়া। এগুলাই মূলত লেখক, শিল্পীর কাজ। সরকার, বিশ্ব
ব্যাংক, বড় কোম্পানি যেটাকে উন্নয়ণ বলবে সেটাই উন্নয়ন। তাহলে রোবট আর
মানুষের মধ্যে তফাৎ কি। সরকার তো চায় মানুষ যন্ত্র হোক।
শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমি পরিচালনা পরিষদ ২০২১-২৩ রয়েছে, সভাপতি মাইন
উদ্দিন মানিক, পরিচালক ধীমান সাহা জুয়েল, উপ-পরিচালক চারণ শিকড়, সৌরি
ছোঁয়া, জোনায়েদ আহমেদ, আলম আলোক, অপার অরণ্য, রাশেদ বাবু, অভি
জাহিদ, রাজীব বাঙাল। পরিচালনা পরিষদ সদস্য রয়েছে, মেঘ মেলা, মৌ দাস,
মন্ময় সাকিব, মিথিলা আফরোজ, নিরাক হাসান প্রেম, আল মেহেদি, সুস্ময় রায়, রাসেল আদিত্য, রুদ্র রাজিব, অমিত আশরাফ, জাকির বিপুল, শারেফ আহমাদ,
অরিন্দম পাল ঝিনুক, রহমান সিদ্দিক (নীনিনির্ধারক সদস্য), মাহবুব সাদিক,
কাজল কানন (নীনিনির্ধারক সদস্য)।