সোনারগাঁয়ে আখিঁ আক্তার (৩২) নামে এক গৃহবধুকে হাত পা বেধে দুই সন্তানের
সামনে হাতুড়ি পেটা করে হত্যা করেছে পাষন্ড স্বামী সাইদুল ইসলাম (৩৬)।
পারিবারিক কলহের জের ধরে সে তার স্ত্রীকে হাতুড়ি পেটা করে পালিয়ে যায়। পরে
স্বজনরা উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক
তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পিরোজপুর ইউনিয়নের
চেঙ্গাকান্দি গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে
ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত আখিঁ আক্তার উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের ইব্রাহিম প্রধানের মেয়ে। ঘাতক
স্বামী সাইদুল ইসলাম পাশ্ববর্তী চেঙ্গকান্দি গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। গত ৬
মাস পূর্বে সাইদুল তারই খালাতো ভাই তুহিন কে একটি গ্যারেজে পিটিয়ে শ্বাসরোধ
করে হত্যা করে। কিছুদিন আগে ওই মামলায় জামিনে বেরিয়ে আসে। এঘটনায়
নিহতের বাবা ইব্রাহিম প্রধান বাদি হয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের
করেছেন। মামলায় সাইদুল ইসলামকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ১৫ বছর আগে সামাজিকভাবে সাইদুল
ইসলামের সঙ্গে আখিঁ আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে
পারিবারিক কলহ লেগেই ছিল। দাম্পত্য জীবনে তাদের অর্ণব (১২), সিয়াম (১০) ও সাইফা (৪ মাস) নামের তিন সন্তান রয়েছে। নানা অজুহাতে সাইদুল ইসলাম প্রায়ই
আখিঁ আক্তারকে মারধর করতো।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে পারিবারিক কলহের জের ধরে সাঈদুল দুই ছেলের সামনে তার স্ত্রী আখিঁকে হাত-পা বেধে হাতুড়ি দিয়ে উপর্যপুরি মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে পেটাতে থাকে। এক পর্যায়ে হাতুড়ির আঘাতে আখিঁ আক্তার জ্ঞান হারিয়ে ফেললে ।
এ সময় ঘর থেকে ছেলেদের চিৎকারের শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে যেয়ে দেখে আখিঁর হাত-পা বাঁধা। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছে এবং মাথায় বিভিন্ন অংশ থেতলানো ছিল। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষনা করেন।
নিহত আঁখির প্রত্যক্ষদর্শী ছেলে অর্ণব জানায়, রাতে বাবা ও মায়ের ঝগড়া হয়।
বিভিন্ন সময়ে বাবা মা ঝগড়া করে। বৃহস্পতিবার রাতে একপর্যায়ে তার মা’কে তার
বাবা হাত-পা বেঁধে ঘরে থাকা হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে।
আমারা চিৎকার দিলে শুনে আশ পাশের লোকজন এগিয়ে আসে। এক পর্যায়ে বাবা
পালিয়ে যায়। মাকে হাসপাতালে নিলে মা মারা যায়। মায়ের হত্যার বিচার চাই।
সোনারগাঁ থানার ওসি মাহাবুব আলম বলেন, গৃহবধু হত্যাকান্ডের খবর শুনে
ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য
মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত স্বামী পলাতক রয়েছে তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।