আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা শামীম ওসমান এমপি বলেছেন, দৈনিক যুগান্তরের স্বপ্নদ্রষ্টা ও যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রয়াত নুরুল ইসলাম বাবুল বেঁেচ থাকলে দক্ষিন এশিয়ার সর্ববৃহৎ হাসপাতাল পেতো বাংলাদেশের মানুষ।
করোনাকালীন সময়ে এক রাতে তাকে ফোন করেছিলাম। তিনি ফোন পেয়ে আমাকে আগে কথা বলতে দেননি, বললেন আগে তার কথাটাই শুনতে হবে। তাঁর এক মহৎ মনোবাসনার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, ‘ শামীম, পাঁচ তারকা মেরিয়ট হোটেল আর বানাবো না। দেশের এই পরিস্থিতিতে আমি বুঝেছি এখানে চিকিৎসা সেবা সবার আগে প্রয়োজন। আমাদের আপাকে বইলো তুমি’।
তার এই মনোভাবের কথাটি আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছিলাম। আমি সেদিন বলেছিলাম বাবুল ভাই আমি ঠিক এমনই একটি পরিকল্পনার জন্যই আপনাকে ফোন করেছি।
তিনি প্রতিত্তরে বলেছিলেন, ‘শামীম তুমি আমার ভাই, তাই মনের কথার মিল হয়ে গেছে’। যিনি নিজের ব্যবসাকে পিছনে রেখে আগে দেশের মানুষের কথা ভাবতেন, যিনি সাধারন মানুষের দাবী আদায়ে, সাধারন মানুষের কথা তুলে আনতে যুগান্তর পত্রিকা ও যমুনা টিভির মত মিডিয়া প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেই নুরুল ইসলাম বাবুল ছিলেন একজন প্রকৃত দেশ প্রেমিক।
নারায়ণগঞ্জে দৈনিক যুগান্তরের ২যুগ পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এভাবেই প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুলকে নিয়ে স্মৃতি চারণ করেন শামীম ওসমান এমপি।
দৈনিক যুগান্তরের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি ও জেলা স্বজন সমাবেশের প্রধান উপদেষ্টা রাজু আহমেদের সভাপতিত্বে ও স্বজন সমাবেশেরে সভাপতি জাহাঙ্গীর ডালিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল পিপিএম ও জেলা মহিলা সংস্থার সভাপতি সালমা ওসমান লিপি।
আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ নিউজ পেপার ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি হাবিবুর রহমান বাদল, নারায়ণগঞ্জ কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ ড.শিরিন বেগম, জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি এডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল, নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক আমির হোসাইন স্মিথ, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আরিফ আলম দীপু, দৈনিক কালবেলার স্টাফ রিপের্টার এম এ খান মিঠু, মানব জমিনের স্টাফ রিপোর্টটার বিল্লাল হোসেন রবিন, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি রোমান চৌধুরী, এশিয়ান টিভির হাবিবুর রহমান প্রমুখ। এসময় স্বজন সমাবেশের ও যুগান্তরের কয়েকশ শুভানুধ্যায়ী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন।
শামীম ওসমান তার বক্তব্যে বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বাবুলকে আমি বাবুল ভাই বলে ডাকতাম। তার ছেলের নামও শামীম, তাই তিনি আমাকে অনেক বেশী ভালোবাসতেন, স্নেহ করতেন। আমার ও আমার স্ত্রীর সৌভাগ্য হয়েছিল বাবুল ভাই ও তার স্ত্রী যুগান্তরের প্রকাশক সালাম ইসলামের সাথে দেশের বাইরে বেশ কয়েকদিন একসাথে অবস্থান করার। সেসময় আমি নুরুল ইসলাম বাবুলকে খুব কাছ থেকে দেখেছি, দেশ ও দেশের মানুষ নিয়ে, দেশের রাজনীতি , অর্থনীতি নিয়ে তাঁর যে প্রজ্ঞা অভিজ্ঞতা ও পরিকল্পনা আমি শুনেছি দেখেছি তাতে আমি বিমোহিত হয়েছিলাম। আমি বিস্মিত হয়ে মন্ত্রমুগ্ধের মত তার কথাগুলো শুনছিলাম। ভাবছিলাম একটা মানুষ দেশকে কতটা ভালো বাসতে পারেন। সেই কথাগুলো আজও অমার কানে বাজে। দেশটাকে ও দেশের মানুষকে ভালোবাসতেন বলেই তার প্রতিষ্ঠান যমুনা গ্রুপ আজ অবধি দেশের বাইরে একটি টাকাও লগ্নি করেনি। যা কামিয়েছেন আর বিলিয়েছেন সব এই দেশের মাটিতেই। তাঁর মত তার পরিবারের সদস্যদের কাছেও আমি একজন আপনজন। বাবুল ভাই ও সালমা ইসলাম তাদের সন্তানদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে এমন ভাবে গড়ে তুলেছেন যে এত ধনী ও দেশের শীর্ষ শিল্প গ্রুপের কর্নধার হয়েও তারা খুবই বিনয়ী। শামীম ওসমান বলেন, দৈনিক যুগান্তরের যিনি সম্পাদক সেই প্রথিতযশা ও দেশ সেরা গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব সাইফুল ইসলামের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে পত্রিকাটি এখনও নিরপেক্ষতার ঝান্ডা তুলে ধরে রেখেছে। নারায়ণগঞ্জের নানা সমস্যা নিয়ে দৈনিক যুগান্তর অগ্রনী ভ’মিকা পালন করছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই পত্রিকাটির কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি পরিশেষে যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বাবুল এর আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বলেন, মহান আল্লাহ যেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাচ্চা দেশ প্রেমিককে যে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকামে স্থান দেন। পাশাপাশি তার পরবিারকে যেন আল্লাহপাক শক্তি দেন , যেন তার স্বপ্নগুলো বাস্তবে রুপ দিতে পারেন।