নুন্যতম মজুরি ৮ হাজার টাকা বাস্তবায়ন, গার্মেন্টসে প্রোডাকশন ৪৫ এবং ৪২ জন
বে-আইনিভাবে ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের চাকরিতে পুনর্বহালসহ ৯ দফা বাস্তবায়নের
দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে গার্মেন্টস শ্রমিকেরা।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০ টায় ফতুল্লার গাবতলি পুলিশ লাইন
টাগারপাড় শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত নীট গার্ডেন গার্মেন্টস শ্রমিকেরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে
চাষাড়া কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এ সমাবেশ করে।
কারখানার শ্রমিক কামালের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট
নারায়ণগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক জননেতা সাইফুল ইসলাম
শরীফ,গাবতলি পুলিশ লাইন শিল্পাঞ্চল শাখার সভাপতি হাসনাত কবির, সাধারণ
সম্পাদক খোরশেদ আলম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সভাপতি রুহুল আমিন সোহাগ,
কাঁচপুর শিল্পাঞ্চল শাখার সহসভাপতি আনোয়ার খাঁন, ফতুল্লা বিসিক শিল্পাঞ্চল শাখার সভাপতি নুর হোসেন সর্দার, কারখানার শ্রমিক সোহাগ, তুহিন, মিলন,
নুরজাহান, সুমন প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দরা বলেন : নীট গার্ডেন গার্মেন্টস মালিক কর্তৃপক্ষ চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের
১২ তারিখে প্রোডাকশনের ৪৫ জন এবং বেতনভুক্ত ৪২ জন শ্রমিককে বেআইনী
ভাবে ছাঁটাই করে। এই গার্মেন্টসে সরকার ঘোষিত নিম্নতম শোভন মজুরি এযাবৎ
কালে কখনও বাস্তবায়ন করে নাই।
কারখানায় প্রোডাকশন শ্রমিকদের পিসরেট কাজের পূর্বে আলোচনা করে বৃদ্ধি করে
না। নারী শ্রমিকদের স্ব-বেতনে প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা দেয় না। প্রতি বছর শেষ হল
অর্জিত ছুটির টাকা পরিশোধ করে না।এখনো পর্যন্ত শ্রমিকদের ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধি করে
না।
কারখানায় শ্রমিক আইন মেনে রিজাইন দিলে সার্ভিস বেনিফিটের টাকা পরিশোধ
করে না। মালিক কর্তৃপক্ষ শ্রম আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী ঈদের বোনাসের টাকা
পরিশোধ করে না।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন : গার্মেন্টস মালিক নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি হওয়া সত্বেও
শ্রমিকেরা শ্রম আইন অনুযায়ী নিম্নতম মজুরি সকল সেকশনে গ্রেড অনুযায়ী
বাস্তবায়ন করে নাই। মালিকেরা লক্ষ লক্ষ টাকা অহেতুক ভাবে ক্লাবে খরচ করে
কিন্তু তাঁরা শ্রম আইন মেনে কারখানা পরিচালনা করে না, শ্রমিকদের অধিকার দেয়
না। বাংলাদেশ গার্মেন্টস রফতানিতে বিশ্বের মধ্যে ২য় স্থানে অবস্থান করে।
৪০ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিকেরা পোশাক তৈরি করে সারা পৃথিবীর সকল মানুষের
সভ্যতা ও সম্মান রক্ষা করে আজকে তাদের ন্যায্য মজুরি সরকার ও মালিকরা দেয়
না। পৃথিবীতে গার্মেন্টস রফতানিমুখি বিভিন্ন দেশে মজুরি আইন করে নির্ধারণ
করেই বাস্তবায়ন করে।
সকল দেশের মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে নিম্নতম মজুরি কম। বাংলাদেশের
সংবিধানের ১৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে আইন করে ন্যায্য মজুরি দিতে হবে। শ্রম
আইনের ১৪১ নং ধারায় আছে ন্যায় সংগত মজুরি দিতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে গ্যাস,বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম সর্বোচ্চ
হয়েছে। নিত্যপণ্যের দাম উর্দ্ধগতি হওয়ায় শ্রমিকের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে।মালিকরা বেআইনি ভাবে হাজার হাজার শ্রমিক ছাঁটাই করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে
বেকার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
শ্রমিকেরা আয় না বাড়ার কারণে খাবার খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে। তাদের শারীরিক
অসুস্থ্য হলে টাকা না থাকায় সুচিকিৎসা করতে পারছে না। তাদের সন্তানদের লেখা
পড়া করাতে পারছে না।
তাই অবিলম্বে নীট গার্ডেন গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ৮ হাজার টাকা
বাস্তবায়নসহ ৯ দফা মেনে নেওয়ার আহবান জানান নেতৃবৃন্দ।