হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় অষ্টম দফায় ৩ জনের
সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল
আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে এই সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
সাক্ষ্যদাতারা হলেন, চার্জশিটের ২৩ নাম্বার সাক্ষী এ এস আই আনিসুর রহমান, ২৪
নাম্বার স্বাক্ষী এ এস আই কর্ণকুমার হালদার ও ২৫ নাম্বার সাক্ষী এ এস আই শেখ
ফরিদ। এ পর্যন্ত এ মামলায় মোট ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। সাক্ষী শেষে
আদালত আগামী ২৫ এপ্রিল পরবর্তী শুনানীর দিন ধার্য করেছেন।
এ প্রসঙ্গে আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন
বলেন, আজ আদালতে যারা সাক্ষী দিয়েছেন তাদের জবানবন্দীর সাথে বক্তব্যের
কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। তারা সকলেই বলেছেন আমরা অন্যদের মাধ্যমে
শুনেছি। এতেই প্রমাণিত হয় এটি একটি মিথ্যা মামলা। আমার বিশ্বাস আদালয়ের
রায়ে মামুনুল হক নির্দোষ প্রমাণিত হবে।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, আজ
মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এই মামলায় এই পর্যন্ত ১৮ জনে
সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। যারাই সাক্ষী দিয়েছেন তারা সকলেই বলেছেন মামুনুল হক
ধর্ষণের সাথে জড়িত। ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করেছিলো।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য
নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়েছিলো মামুনুল হককে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে
আবার কাশিমপুর কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে দিয়ে কাশিমপুর
কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। সেই সাথে আদালতপাড়া জুড়ে
বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়।
আদালত সূত্র বলছে, ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় মামুনুল হকের
উপস্থিতিতে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার সাক্ষ্য নেন আদালত। একই সাথে ওই বছরের ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় বিচারকাজ
শুরুর আদেশ দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে এক
নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের
নেতাকর্মীরা এসে তাকে ঘেরাও করেন। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও
সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর করেন এবং তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।
ঘটনার পর থেকেই মামুনুল হক মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া
মাদ্রাসায় অবস্থান করে আসছিলেন। এ সময় পুলিশ তাকে নজরদারির মধ্যে রাখে।
এরপর গত ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে
গ্রেফতার করা হয় মামুনুলকে।
পরে এই ঘটনায় ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের
প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী। তবে ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি
করে আসছেন মামুনুল হক।