শহীদ সাব্বির আলম খন্দকারের ২০ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী স্বরণে ও শহীদ সাব্বিরের খুনিদের সর্ব্বোচ শাস্তি এবং নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত করা এবং ১৮ ফ্রেব্রুয়ারিকে সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধী দিবস ঘোষনার দাবীতে শোক র্যালী ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শহীদ সাব্বির আলম খন্দকার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে বিশাল শোক র্যালী বের হয়ে মাসদাইর সিটি কবরাস্থানে গিয়ে শহীদের কবর জেয়ারত, দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ শোক র্যালীতে দল-মত, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কয়েক হাজার
নারায়ণগঞ্জবাসী যোগ দেয়।
এর আগে সকালে ৯.০০ টায় নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইরে সাব্বির আলম খন্দকারের স্মরণে ও খুনিদের গ্রেপ্তার এবং বিচার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ সর্বস্তরের সন্ত্রাস বিরোধী জনগণ ব্যানারে মানববন্ধন করে। ওই মানববন্ধন থেকে হত্যাকারীদের ফাঁসি ও নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত করার দাবি জানান বক্তারা।
শোক র্যালী পূর্ব সমাবেশে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ বিশ^াসের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দাকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরউদ্দিন, বিএনপি নেতা জামাল উদ্দিন কালু, হাজী নুর উদ্দিন, নজরুল ইসলাম টিটু, আলী হোসেন লালা,সাহাবুদ্দিন খন্দকার, শেখ মোঃ আমান, হাকিম হাজী, আনোয়ার মাহমুদ বকুল, জয়নাল আবেদীন, আবুল কালাম আজাদ, মনোয়ার হোসেন শোখন, লিয়াকত হোসেন লেকু আইনজীবি নেতা এড. হামিদ ভাসানী, এড. বোরহান উদ্দিন সরকার, এড. শরিফুল ইসলাম শিপলু, যুবদল নেতা, রানা মজিব, জুুয়েল রানা, নাজমুল কবির নাহিদ, রশিদুর রহমান রশো, ইউনুছ খান বিপ্লব, সরকার মজিব, শওকত খন্দকার, আক্তার হোসেন খোকন শাহ, আল আমিন খান, আমির হোসেন,
তুষার আহম্মেদ, কাজী সোহাগ, নুরুল্লাহ খন্দকার, মোঃ শহিদ, মুসা, রানা মুন্সি, ওসমান গনি, সিকদার বাপ্পি, রুপগঞ্জ ছাত্রদল নেতা মাসুদুর রহমান, মহানগর শ্রমিক দল নেতা বিল্লাল, জামাল।
এসময় বক্তারা ১৮ ফ্রেবুয়ারিকে সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধী দিবস ঘোষনার দাবী করে বক্তারা বলেন, আজ যেই মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্বে সরকার সহ দেশবাসী কথা বলছে, সেই মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্বে শহীদ শাব্বির আলম খন্দকার নব্বইয়ের দশক থেকেই সোচ্চার ছিলেন। তিনি মাঠ পর্যায়ে মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্বে
প্রতিরোধ গড়ে তোলায় মাদক ও সন্ত্রাসের গডফাদারদের চক্ষুসূলে পরিনত হন।
সমাজের ও দেশের চিন্তা করেই একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হয়েও অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েও তার হত্যার বিচার পাইনি তার পরিবার। আমরা হত্যাকারীদের ফাঁসি ও নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত করাসহ ১৮ ফ্রেবুয়ারিকে সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধী দিবস ঘোষনার দাবী জানাই।
উল্লেখ্য, সাব্বির আলম খন্দাকার গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) এর সাবেক সহ সভাপতি ও ব্যবসায়ী নেতা ছিলেন। মৃত্যু তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাসেরও সহ-সভাপতি ছিলেন।
২০০২ সালের ২২ শে অক্টোবর নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাস, চাঁদা ও মাদক মুক্ত করার কালে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাসে অনুষ্ঠিত জেলার ৩২ টি ব্যবসায়ী সংগঠনের সাথে সেনাবাহিনীর মত বিনিময় সভায় শহীদ সাব্বির আলম খন্দকার “আমার জানাযায় অংশ গ্রহন করার আহবান জানিয়ে বক্তব্য শুরু করছি” বলে নারায়ণগঞ্জের সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের নাম, ঠিকানা ও তাদের গডফাদারদের নাম প্রকাশ করেন এবং সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্দে জিহাদ ঘোষনা
করে নারায়ণগঞ্জবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্ঠা করেন। তখন শহীদ সাব্বিরের ব্যাপক তৎপরতায় ঝুট সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীদের হাতে জিম্মি গার্মেন্টস ব্যবসায়ী, চুন ফ্যাক্টরী ও নারায়ণগঞ্জবাসী নিস্তার লাভ করে।
চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীরা কোনঠাসা হয়ে পরলে তাদের গডফাদারদের ষড়যন্ত্রে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজরা প্রাতঃকালীন ভ্রমনকালে শহীদ সাব্বির আলম খন্দকারকে গুলি করে হত্যা করে। তৎসময়ে সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের গডফাদাররা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা দায়ের থেকে শুরু করে তদন্ত সহ সকল ক্ষেত্রে অবৈধ হস্তক্ষেপ করে। ফলে দীর্ঘ ২০ বছরেও একটি গ্রহন যোগ্য বিচার
পাওয়া যায়নি।