নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আমি নারায়ণগঞ্জে একটি স্লোগান শুনেছি। হরে কৃষ্ণ হরে রাম, শেখ হাসিনার বাবার নাম। আমার মনে হয় আমি জাতির পিতার সৈনিক হতে পারিনি। আমার হাত পা বাঁধা। নাহলে জনগণের কাছে যদি ভালভাবে বিচার দেই জনগণ তাদের কাছে কীভাবে পৌছাবে জানা নেই।
আমরা মাফ করে দিয়েছি। আমরাও কিন্তু মানুষ রোবট না। আমাকে সারাক্ষণ শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে গালি দেয়। আমি এগুলো গায়ে মাখি না। ওরা মিথ্যা বলে তাদের জন্য আমার মায়া লাগে। কিন্তু শেখ হাসিনার প্রশ্নে আপোষ করতে পারি না। নারায়ণগঞ্জকে শান্ত থাকতে দিন। এমন কোন বক্তব্য দিবেন না, জনগণ কিন্তু ঘরে বসে থাকবে না। জনগণের কাছে বিচার দিলে বাড়ির ইট থাকবে না।
হিন্দু সমাজের কাছে সবচেয়ে শ্রদ্ধার বিষয় হরে কৃষ্ণ হরে রাম। যারা এ স্লোগান দেয় তারা কতবড় সাম্প্রদায়িক শক্তি হতে পারে ভেবে দেখুন। শেখ হাসিনা মুসলমান বঙ্গবন্ধুও মুসলমান। আমি মুসলমান ও সনাতনদের জিজ্ঞেস করতে চাই এরা কারা যারা হিন্দু ধর্মকে আঘাত করে। এরা দুটো ধর্মকে সমান ভাবে আঘাত করল। ওরা মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে।
শনিবার (৪ মার্চ) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ ক্রিয়েটিভ গ্রাজুয়েট এ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে মুজিব শতবর্ষের স্মরণে স্মারণিকার মোড়ক উন্মোচন ও অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি। এতে সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলা লীগের সভানেত্রী প্রফেসর ডা. শিরিন বেগম।
শামীম ওসমান আরো্ও বলেন, দেশটাকে একটা আঘাত করা হবে পেছনের দিকে যাবার জন্য। সামনের দিকে নেয়ার জন্য নয়। বাংলাদেশে আগামী দুই তিন মাসের মধ্যে, সর্বোচ্চ জুন থেকে জুলাইয়ের মধ্যে আঘাত আসবে। তারা আবার বাংলাদেশে লাশের রাজত্ব সৃষ্টি করবে এমনকি তাদের দলের বড় বড় জাতীয় নেতাকে প্রয়োজন হলে তারা হত্যা করবে।
এগুলো করে তারা ইস্যু সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে কারণ যেভাবেই হোক তারা নির্বাচন বন্ধ করতে চায়। কারণ তারা পারবেনা। শেখ হাসিনার উপর আল্লাহর রহমত আছে আর তাই ২২ বার হত্যার চেষ্টা করেও তারা কিছু করতে পারেনি।
তিনি বলেন, কে কার উকিল বাপ আর কে কার উকিল মা দেখার সময় আর নেই। নারায়ণগঞ্জের মানুষ প্রচন্ড ক্ষিপ্ত। যারা দেবোত্তর সম্পত্তি দখল করে না, যারা বাংলাদেশের মানুষের জন্য রাজনীতি করে, স্বাধীনতার পক্ষের রাজনীতি করে তাদের সংখ্যা অনেক। কয়েকটা মিডিয়া দেখছি তারা সবসময় চেষ্টা করে কীভাবে শেখ হাসিনাকে দমানো যায় স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে দমাতে চাই। ওরা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা রুখে দিতে চায়। শেখ হাসিনার দলকে দমাতে চায়। বিএনপি এমন ভাবে ২৭ দফা দেয় মনে হয় সমুদ্রের পানি চিনি হয়ে যাবে। আপনারাই তো ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে শত শত হিন্দু নারীদের ধর্ষণ করেছিলেন। ওরা এগুলো করে নির্বাচন বানচাল করতে চায়।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও নারায়ণগঞ্জ ক্রিয়েটিভ গ্র্যাজুয়েটস এ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা বাবু চন্দন শীল, সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্রিয়েটিভ গ্র্যাজুয়েটস এ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্বা এড. সামসুল ইসলাম ভূইয়া, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধূরী বীরু, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, ক্রিয়েটিভ গ্র্যাজুয়েটস এ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি আঞ্জুমান আরা আকসির, আওয়ামীলীগ নেতা আলী হায়দার, ভজেন্দ্রনাথ সরকার,ক্রিয়েটিভ গ্র্যাজুয়েটস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবির প্রমুখ।
এছাড়া অনুষ্ঠানটিতে তত্ত্বাবধানে ছিলেন ক্রিয়েটিভ গ্র্যাজুয়েটস এ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি এ. ওয়াই. এম হাসমত উল্লাহ, সঞ্চলনায় ছিলেন ক্রিয়েটিভ গ্র্যাজুয়েটস এ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন মৃধা রিপন সহ আওয়ামীলীগ, নারায়ণগঞ্জ কর্মাস কলেজের শিক্ষক বৃন্দগন ও ক্রিয়েটিভ গ্র্যাজুয়েটস এ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দরা।