আড়াইহাজারে মোসলেম হত্যাকান্ডে দোষীদের বিচার ও নির্দোষদের ওই হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার স্থানীয় শালমদী নয়াবাজারে এ‘মানববন্ধন’ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মাহমদুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমান উল্যাহ (আমান) সহ আরও অনেকে। হাবিবুর রহমান হবি নামে একব্যক্তির নেতৃত্বে মানববন্ধনে অংশ নেন স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ।
মানববন্ধনে মোসলেম হত্যা মামলার আসামি বিল্লালের স্ত্রী শাহনাজ জানান, তার স্বামী স্থানীয় শালমদী নয়াবাজারে ব্যবসা করেন। পাশাপাশি এলাকায় বিচার-শাসিল করে বেড়ান। বাতেন ও মোসলেম গংয়ের মধ্যকার জমি নিয়ে বিরোধও তার স্বামী মীমাংশার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। সম্প্রতি দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় মোসলেম আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী বিল্লালকে মোসলেম হত্যাকান্ডের ঘটনায় করা মামলায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি এ ঘটনার সঙ্গে কোনভাবেই জড়িত নন। আমি তাকে মামলা থেকে অব্যাহতির দাবী করছি।
মামলায় অপর আসামী মজিবুরের স্ত্রী মানছুরা বলেন, আমার স্বামী ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলনা। তাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে। আমার স্বামী একমাত্র উর্পাজনক্ষম ব্যক্তি পরিবার-পরিজন রেখে বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এতে আমার সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। খেয়ে না খেয়ে জীবন-যাপন করছি।
হাবিবুর রহমান হবি বলেন, বিল্লালসহ মামলায় অনেকের নাম জড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে শালমদী নয়াপাড়া এলাকার মৃত তারব আলীর দুই জাকারিয়া ও আলী আকবর। মৃত কিতব আলীর ছেলে আউয়ালম ও বাতেন।
মৃত খালেকের ছেলে সোহেল ও মিনু। মৃত সাকুম আলীর ছেলে আমজাদ। আমজাদের ছেলে তারেক ও সজীব এবং মৃত মহির ছেলে মজিবুর। এদিকে মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান আমান উল্যাহ (আমান) বলেন, হত্যাকান্ডে ঘটনায় এমন অনেক ব্যক্তিকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। আমার জানামতে, তারা ঘটনাস্থলেই ছিলেন না। আমি নির্দোষ ব্যক্তিদের মামলা থেকে অব্যাহতির দাবী করছি। তবে যারা প্রকৃত দোষি তাদের বিচার নিশ্চিত করারও দাবী জানাচ্ছি।
আড়াইহাজার থানার এসআই ও মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা নাহিদ মাছুম বলেন, মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। তদন্তের পরই কেবল বলা যাবে, কে দোষি আর কে নির্দোষ। তদন্তের পরই তা নির্ণয় করাটা সম্ভব হবে।
প্রসঙ্গত. গেল ২৪ ফেব্রুয়ারি বেলা ২টার দিকে শালমদী নয়াপাড়া এলাকার মোসলেম তার বাড়ির পার্শ্বে একটি ফসলী জমিতে চারাগাছ রোপণ করেন। পরে তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। এক পর্যায়ে দা, রাম দা, চাপাতি ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাড়িতে হামলা চালানো হয়।
এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের
অন্তত ১০জন আহত হয়েছিলেন। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এক পর্যায়ে মোসলেমের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। পরে রাস্তায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় আড়াইহাজার থানায় সাহেরা বেগম বাদী হয়ে ২০ জনের নাম উল্লেখ্য করা সহ অজ্ঞাত আরও ৪ থেকে ৫জনের নামে একটি হত্যা মামলা করেন।