অরক্ষিত হয়ে পড়েছে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক। হঠাৎ করে বেড়েছে ডাকাত চক্রের
তৎপরতা। যাত্রীবাাহি মালাবাহি যানবাহন শুধু নয় সম্প্রতি দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা সাদা পোষাকে থাকা র্যাব সদস্যদের গাড়ি ঘেরাও
করে ডাকাতির চেষ্টা করেছে। এতে ৮জন ডাকাত দলের সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে।
অন্যান্য যানবাহনের পাশাপাশি গার্মেন্টস পন্য বহনকারী বেশি টার্গেট থাকে ডাকাত
দলের সদস্যদের। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যারা প্রায়ই অভিযান চালিয়ে ডাকাত
দলের সদস্যদের গ্রেপ্তার করলেও এদের অপতৎপরতা রোধ করা যাচ্ছে না। তবে
মহাসড়ক অপরাধমুক্ত করতে আগামী ২৬ মার্চ চালু হচ্ছে সিসি ক্যামরা।
সূত্র জানায় ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ি থকে শুরু করে চট্রগ্রামের
মিরশরাই পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ষ্পটে ডাকাত দলের সদস্যদের মহড়া চলে। বিশেষ
করে শনি আখড়ার পর থেকে নারায়ণগঞ্জের সীমানা এলাকা বেশি অরক্ষিত মনে
করছে ভুক্তভোগিরা।
মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা বেশি ঝুঁকিপূর্ন বলছেন তারা। সাইনবোর্ড থেকে
শুরু করে চিটাগাং রোড পর্যন্ত ভয়ঙ্কর ডাকাত দলের প্রধান রাজু বাহিনীকে কোন
ভাবেই দমন করা যাচ্ছে না। ফলে সাইনবোর্ড, পারিজাত মার্কেট, সানারপাড়
মৌচাকসহ এসব এলাকা পার হওয়ার সময় ডাকাত রাজু বাহিনী আতংকে থাকে
ভুক্তভোগীরা। র্যাবের গাড়ি ঘিরে ধরে ডাকাতির চেষ্টা : র্যাব১১ এর সিপিসি ১ এর স্কোয়াড্রন লিডার একেএম মুনিরুল আলম জানান, র্যাব ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ টি অভিযান চালিয়ে গত ১ বছরে ১১৪ ডাকাতকে বিপুল পরিমান অস্ত্রসস্ত্র সহ গ্রেপ্তার করেছে।
ডাকাতি নিরসনে র্যাব-১১ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় নিয়মিত অভিযান ও টহল
কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এবং বিগত এক বছরে ডাকাতির বিরুদ্ধে ৩৫ টি
অভিযান পরিচালনা করেছে এবং মোট ১১৪ জন ডাকাতকে বিপুল পরিমান
অস্ত্রসস্ত্রসহ গ্রেপ্তার পূর্বক আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে।
গত ১৬ মার্চ দিবাগত রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া থানাধীন চর
বাউসিয়া থেকে ডাকাতিকালীন সময়ে মহাসড়ক ডাকাত চক্রের ৮ সদস্যকে আটক
করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন। এসময় দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে
র্যাব জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৬ মার্চ সাদা পোষাকে এবং পোষাক
পরিহিত অবস্থায় দুটি দলে বিভক্ত হয়ে টহল কার্যক্রম পরিচালনা করতে করতে
কাঁচপুর থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত যায়। দাউদকান্দি থেকে পুনরায় ফেরত আসার
পথে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানাধীন চর বাউসিয়া এলাকায় পৌছালে র্যাব-
১১ এর সাদা পোষাকের আভিযানিক দলটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকা মুখী
নিজ্জর্ন অন্ধকারাছন্ন জায়গায় যানজটে পড়ে।
এ সময়ে সাধারণ যাত্রীবাহি গাড়ী মনে করে ১০/১২ জন দুর্ধর্ষ ডাকাত দেশীয়
অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ডাকাতির উদ্দেশ্যে সাদা পোষাকে থাকা র্যাব সদস্যদের
গাড়িটিকে ঘেরাও করে। তখন র্যাব সদস্যরা গাড়ী থেকে নেমে ধাওয়া করে
কৌশলে এই ডাকাত দলের দলনেতা সহ আটজন সদস্যকে বিভিন্ন ধরণের দেশীয়
অস্ত্রসহ হাতেনাতে আটক করতে সক্ষম হয় এবং আরো ৩/৪ অজ্ঞাতনামা ডাকাত
দৌড়ে পালিয়ে যায়।
আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, তারা একটি
সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র এবং তাদের দলের সদস্য সংখ্যা ১২/১৫ জন। ডাকাত সর্দার
মোঃ সুজন ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাত্রীবাহী
বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারের যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের নগদ
টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র ডাকাতি করে আসছিল। গত দুই বছরে তারা এই
মহাসড়কে প্রায় ৫০টির অধিক ডাকাতি করেছে বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করে।
ভয়ঙ্কর ডাকাত রাজু ও তার বাহিনীকে গ্রেফতারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের :
এদিকে সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় ভয়ঙ্কর ডাকাত দলের সর্দার রাজু ও তার
বাহিনীকে গ্রেপ্তারের জন্য নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়। মন্ত্রনালয়ের উপসচিব
ফেীজিয়া খান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে (স্মারক নং ৪৪.০০.০০০০.০৫৬.২৪,০১৪, ২০২১-১৬৪২) র্যাবের মাধ্যমে ভয়ঙ্কর ডাকাত রাজু ও তার বাহিনীর সদস্যদের গ্রেপ্তার করার নির্দেশনা দেয়া হয়।
জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জ সানারপাড় এলাকার হোসনে আরা বেগম নামের এক
ভুক্তভোগী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের জননিরাপত্তার বিভাগে ভয়ঙ্কর ডাকাত রাজু ও তার
বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার পর মন্ত্রনালয় থেকে এ আদেশ দেয়া হয়।
অভিযোগে বলা হয়, মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জ কান্দাপাড়া বুস গার্ডেন এলাকার রুকু
হাজীর পুত্র ডাকাত সর্দার রাজু তার বাহিনীর অন্যতম সদস্য ভুইগড় এলাকার
শওকত খন্দকারের পুত্র জসীম খন্দকার,সাহেব পাড়ার জাহাঙ্গীরের পুত্র মিঠু ওরফে
ধলা মিঠু ভুট্টু, আলিম, রতনসহ প্রায় ১০/১৫ জনের একটি ডাকাত দল মহাসড়কের
বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই ডাকাতি করে থাকে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকার
পরও গ্রেপ্তার না হওয়ায় মন্ত্রনালয়ে অভিযোগ করে ভুক্তভোগী।
সূত্র জানায়, ডাকাত দলের সর্দার রাজু ও বাহিনীর কয়েকজন সদস্য ফের
অপতৎপতার চালাচ্ছে। ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কের প্রারম্ভিক সীমানা সাইনবোর্ড
থেকে শুরু করে সোনারগাওয়ের মেঘনা পর্যন্ত ডাকাত রাজু বাহিনী অপতৎপরতা
বেড়েছে।