বন্দরে প্রকাশ্য দিবালোকে বাজারের জায়গা দখলে নিতে সন্ত্রাসীদের ছোঁড়া গুলিতে
আহত মঈনুল হক পারভেজ ও তার স্ত্রী আবিদা সুলতানা সুমার খোঁজ খবর নিতে
তাদের বাড়িতে আসেন আজমেরী ওসমান ও তার মা জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম
সদস্য পারভীন ওসমান।
শনিবার (২৫ র্মাচ) দুপুরে বন্দর উপজেলার ফরাজীকান্দা এলাকায় আহত পারভেজ
দম্পতির বাড়িতে যান তারা। আহত মঈনুল হক পারভেজ বন্দরের কলাগাছিয়া
ইউনিয়নের প্রয়াত চেয়ারম্যান ও জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি রাইসুল হকের ছেলে।
ওই সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন। আজমেরী ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য একেএম নাসিম ওসমানের ছেলে।
তথ্য সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ মার্চ দুপুরে ফরাজীকান্দা এলাকায় জাতীয় পার্টির
প্রয়াত নেতা রাইসুল হকের মালিকানাধীন ৬৬ শতাংশ জমি দখল করতে যায়
আজমেরী ওসমানের সশস্ত্র অনুসারিরা। ওই জমির উপর একটি কাঁচা বাজার রয়েছে।
ঘটনার দিন আজমেরী ওসমানের সহযোগি আলী হায়দার শামীম ওরফে পিৎজা
শামীমের নেতৃত্বে ৪টি গাড়ি ও ২০-২৫টি মটর সাইকেল যোগে সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে জমি মাপঝোক করে। খবর পেয়ে পারভেজ স্থানীয় মুরুব্বীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে
যাওয়ার চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা পিস্তল দিয়ে মুহুর্মুহু গুলিবর্ষণ করে।
সন্ত্রাসীদের ছোঁড়া গুলিতে পারভেজ ও তার স্ত্রী সুমা গুলিবিদ্ধ হন। পরে সন্ত্রাসীরা
সুমাকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। এছাড়া সন্ত্রাসীদের মারধরে আরও ১০ জন
আহত হন।
ওই ঘটনায় আহত পারভেজের ছোট ভাই তানভীর আহমেদ বাদি হয়ে বন্দর থানায়
১১ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ৪১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ
এজাহারনামীয় ৪জনসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে শনিবার দুপুরে আজমেরী ওসমান ও তার মা পারভীন ওসমান পারভেজদের
ফরাজীকান্দার বাসায় গিয়ে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। বিষয়টিকে ভুল
বোঝাবুঝি উল্লেখ করে আজমেরী বলেন, নিজেদের মধ্যে হওয়া এ ঘটনায় তৃতীয় পক্ষ হাসাহাসি করছে। আমরা ঘটনার মিমাংসা করতে এসেছি।
ওই সময় আজমেরী ওসমান আহত পারভেজকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এখন থেকে ওই
জমির বিষয়ে আমি আপনার পক্ষে আছি। ওই জমি আপনার না হলেও আমি আপনার পক্ষে আছি। দেখি কে কী করতে পারে। ঘটনার জন্য নিজের বোনের খালাতো দেবর মামুন ও মদনগঞ্জ ওয়েল ফেয়ারের সভাপতি সুমনকে দায়ি করে আজমেরী ওসমান বলেন, এরা দু’জন আমাকে ভুল বুঝিয়েছে। পারভীন ওসমান বলেন, আমরা প্রয়োজনে দুই পক্ষের উকিল নিয়ে বসবো।
ওই সময় বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন পারভেজকে
উদ্দেশ্য করে বলেন, মামলাটি তুলে নিতে হবে। মামলা কী প্রক্রিয়ায় তুলে নেওয়া যায় সে বিষয়েও সেখানে আলোচনা করা হয়।
ওই সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, গুলিবিদ্ধ পারভেজের চাচা মোঃ হানিফ,
কলাগাছিয়া ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সহ সভাপতি বাচ্চু মিয়া, ইউনিয়নের সাবেক
মেম্বার মঞ্জুর হাসান, মদনগঞ্জ ধান চাল বণিক সমিতির সভাপতি আবু তালেব মিয়া
প্রমুখ।
এ বিষয়ে পারভেজ বলেন, উনারা আমাদের দেখতে এসেছিলেন। ঘটনার জন্য দুঃখ
প্রকাশ করেছেন। মামলার বিষয়েও কথা হয়েছে। মুরুব্বীদের সঙ্গে কথা বলে এ
ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবো।
উল্লেখ্য, গত বছর নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রকাশিক একটি পত্রিকা অফিসে দিনে দুপুরে
হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে আজমেরী ওসমানের অনুসারিরা। ওই ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ বেশ ক’জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে আজমেরী ওসমানের মা পারভীন ওসমান পত্রিকা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা বেঠক করেন। এবারও তার ব্যত্যয় হয়নি। ছেলে আজমেরী ওসমান কোন অপরাধ করে পার না পেলে মা সেখানে গিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করেন।