সোনারগাঁয়ে সন্ত্রাসী হামলায় রক্তাক্ত জখম হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩৭ দিন পর মৃত্যু হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধার নাতি কলেজ ছাত্র সোহাগের (২০)।
শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত সোহাগ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের তাতুয়াকান্দি গ্রামের সাইদুল ইসলামের ছেলে।
হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো – ইব্রাহীম, মোবারক, পাভেল, শহিদুল্লাহ ও আলম চাঁন।
স্থানীয়রা জানায়, গত ৮ মার্চ বুধবার পবিত্র শবেবরাতে আঁতশবাজি ও পটকা ফুঁটানোতে বাঁধা দেওয়ায় তাতুয়াকান্দি গ্রামের মৃত আলম চাঁনের ছেলে স্থানীয় সন্ত্রাসী মেহেদী ও তার সহযোগীদের সাথে দ্বন্দ্ব হয়।
দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে মেহেদী ও একই এলাকার মৃত আব্দুর রউফ এর ছেলে মেহেদীর সহযোগী সালাউদ্দিন, খোকা মিয়ার ছেলে হাসান, আমানউল্লাহর ছেলে পাভেল, মৃত মফিজউদ্দিনের ছেলে শহিদুল্লাহ ও মোবারক, মহব্বত আলীর ছেলে আলম চাঁন, জহিরুলের ছেলে আনিস, মৃত নুর মোহাম্মদ রফিকসহ ১২/১৫ জন মিলে সোহাগকে রড, হকিস্টিক ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত যখম করে।
সোহাগের ডাক চিৎকারে আশ পাশের লোকজন এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসী মেহেদী ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা সোহাগকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সোহাগের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পাঠায়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য নারায়ণগঞ্জে সিলবার ক্লিনিক নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসা নেওয়ার পর গত ২৩ মার্চ চিকিৎসকদের পরামর্শে সোহাগকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা চলছিল। বাড়িতে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন পুনরায় হঠাৎ গত ১৪ এপ্রিল শুক্রবার রাতে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে আবারো সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সোনারগাঁ থানার ওসি (তদন্ত) আহসান উল্লাহ জানান, এ বিষয়ে নিহত সোহাগের দাদা বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আব্দুল মজিদ বাদী হয়ে শনিবার ২০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২০/২৫ জনকে আসামী করে সোনারগাঁ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লাশের ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের রির্পোট হাতে পেলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।