নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশ ও ডিবের সোর্স পরিচয়ে বেপোরোয়া উঠেছে মাদক সন্ত্রাসী শাহাবুদ্দিন ও ইকবাল গং। দিন দিন ভয়ংকর হয়ে উঠায় ওই মাদক ব্যবসায়ী সন্ত্রাসীরা এখন আতংকে পরিণত হয়েছে।
বুধবার সকালে একটি বিরোধপূর্ণ জমিকে কেন্দ্র কেন্দ্র দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রতিপক্ষের বসত ঘরে তান্ডব চালায় শাহাবুদ্দিন ও ইকবাল বাহিনী।
এ সময় তারা ছেন দা বটি চাইনিজ কুড়াল দিয়ে মিজমিজি আব্দুল আলী পুল এলাকায় ফরিদ মিয়ার বসত ঘরে টিন বেড়া ও আসবাবপত্র কুপিয়ে ভাংচুর করে ঘরে থাকা আশি হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে।
এতে বাধা দিতে গেলে বয়োবৃদ্ধ নারীসহ চারজনকে এলোাপাথারী মারধর করে। এতে কহিনুর বেগম (৬০), আম্বিয়া বেগম (৪০), শাহানা (৩৫) ও বিজয় (১৯) আহত হয়েছেন। তাদেরকে খানপুর তিনশ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদিকে তাদের এ তান্ডবে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আতংক।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. মমিন হোসেন নয় জনের নাম উল্লেখ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযুক্তরা হলেন- মো. সাহাবুদ্দিন, মো. মহিউদ্দিন, মো. পারভেজ, মো. সোহরাব হোসেন, মো. হগুল মিয়া, মো. ইকবাল হোসেন, মোসা. মহিতুন, মোসা. মুক্তি. মো. আরিফ হোসেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে কাউকে খুজে পায়নি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, একই এলাকার মৃত বিল্লাল হোসেনের তিন ছেলে মো. সাহাবুদ্দিন (২৯), মো. মহিউদ্দিন (৩৬) ও মোঃ পারভেজ (২৫) দ্বয়ের সাথে মো. সিরাজ মিয়ার ছেলে মো. মমিন হোসেন গংদের দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধ চলছে। এ বিরোধে আদালতে উভয়পক্ষের মামলা চলমান রয়েছে।
বিরোধের জের ধরে অভিযুক্তরা তাদের সহযোগী মিজমিজি পাইনাদী এলাকার ধনু মিয়ার ছেলে মো. সোহরাব হোসেন (৬৫), মৃত মাবুদ আলীর ছেলে মো. হণ্ডল মিয়া (৬০), কামিজ উদ্দিনের ছেলে মো. ইকবাল হোসেন (৩২), মো. আরিফ হোসেন সহ অজ্ঞাত আরো ২০/২৫ জন দেশীয় অস্ত্রসহ ভুক্তভোগীদের বসত ঘরে হমলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং ঘরে থাকা আশি হাজার টাকা ও দেড় ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে। এতে বাধা দিতে গেলে বয়োবৃদ্ধ নারীসহ ওই চারজনকে এলোাপাথারী মারধর করে। এ ঘটনায় বসত ঘরের দুই লাখ টাকার ক্ষতি সাধন হয়।
মারধরের শিকার কহিনুর রাহেলা জানান, হঠাৎ ৫/৬ জন আমার ঘরে ঢুকে আমাকে সিড়িতে ফেলে মারধর করতে থাকে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা আমাদের ঘর ভাঙচুর করে। চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আমাদের কিছুই করার ছিলনা। আমরা তাদের অনেক অনুরোধ করেছি। কেউ আমাদের কোন কথা শোনেনি।
এদিকে স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, অভিযুক্ত শাহাবুদ্দিন ও ইকবাল এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি। এলাকায় পুলিশের সোর্স হিসেবে তাদের পরিচিতি বেশী। সোর্স পরিচয়ে দীর্ঘদিন ধরে তারা দু’জন অন্যান্য সহযোগীদের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় মাদক দ্রব ফেন্সিডিল বেচা-কেনা করে আসছে।
এছাড়া সোর্স হওয়ার সুবাদে ঈদের আগে রমজান মাস জুড়ে শাহাবুদ্দিন ও ইকবাল ঐ এলাকার মাদক কারবারিদের প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে নির্বিঘ্নে মাদক বেচা-কেনা করার সুযোগ করে দেওয়ার কথা বলে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছে। তাছাড়া এলাকায় সাধারণ মানুষের নানা ধরণের সমস্যার ক্ষেত্রে ব্লাকমেইলিং করে অর্থ আদায় করে থাকে বলে অভিযোগ এলাকাবাসির।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সানোয়ার জানান, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। সেখানে গিয়ে তাদের বতস-ঘর ভাঙচুর অবস্থায় দেখা গেছে। পরে স্থানীয়দের নিয়ে অভিযুক্তদের বাসায় গিয়ে তাদের ঘর তালাবদ্ধ পাওয়া যায়।