রূপগঞ্জ উপজেলার টেকপাড়া এলাকার ৩ বছর বয়সের শিশু উম্মে তাবাসসুম জুঁইকে নিজ বাড়ির ভাড়াটিয়ারা শ্বাসরোধে ও ইনজেকশন পুশ করে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায়ে দুই সহদর ভাইসহ ৩জনকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল এ রায় ঘোষনা করেন।
রায় ঘোষনার সময় দন্ডিত আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দন্ডিতরা হলেন- দক্ষিণ দলডাঙ্গা এলাকার কুড়িগ্রাম জেলার বুরুঙ্গামারী থানার শিলগুড়ি ইউনিয়নের দক্ষিন দলডাঙ্গা গ্রামের সমেদ আলীর ছেলে শাহজালাল (২১) ও খয়বর হোসেন (৩২) এবং তাদের সহযোগী আশ্রাফুল (১৯)।
আদালত সূত্রে জানাযায়, শাহজালাল ও আশ্রাফুল রূপগঞ্জের টেকপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতো। বেশ কয়েক দিনের পরিকল্পনা ছিলো বাড়িওয়ালা আনোয়ার হোসেনের মেয়ে ৩ বছর বয়সের শিশু উম্মে তাবাসসুম জুইকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করবে। পরিকল্পনা মতে ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর দিনে-দুপুরে জুইকে খেলাধুলা অবস্থায় মুখ চেপে ধরে অপহরণ করে। এরপর তাদের কক্ষে নিয়ে মুখে কস্টেপ লাগিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে। এসময় জুঁই চিৎকারের চেষ্টা করলে মুখে পলিথিন দিয়ে চাপ দিয়ে ধরে অপহরণকারীরা।
তখন জুঁই অজ্ঞান হয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর জ্ঞ্যান ফিরলে জুঁইয়ের শরীরে অজ্ঞান করার ইনজেকশন পুশ করে তারা। এরপরই জুইয়ের মৃত্যু হয়। এ হত্যাকান্ডের পর জুইয়ের পরিবারের কাছে মোবাইল ফোনে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে শাহজালাল ও আশ্রাফুল। মুক্তিপনের টাকা নিয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যেতে বলে। অপহরনের ঘটনা পুলিশকে জানালে জুঁইকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়া হয়। তখন অপহরনকারীদের সঙ্গে তাদের ৫ লাখ টাকায় রফাদফা হয়। টাকা দিতে দেরি হওয়ায় রাতেই হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বস্তাবন্ধি করে নিজ বাড়ির পেছনে জুঁইয়ের লাশ ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় নিহত জুঁইয়ের বাবা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আদালতের পাবলিক প্রশিকিউটর অ্যাডভোকেট রকিব জানান, ১৬জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন করে আদালত রায় ঘোষনা করেছেন। বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষে এ রায়ে সন্তুষ্ট।