নারায়ণগঞ্জ সদর থানাধী শহিদনগরে ইনাছ আক্তার (২৩) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা করেছে পুলিশ। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় আট বৎসর আগে কাশিপুর হাটখোলা শরিফ মোবারকের মেয়ে ইনাছ আক্তার (২৩) এর সহিত ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক শহিদনগর সিরাজ মিয়ার ছেলের বাহরাইন প্রবাসী রাসেল এর সাথে পারবারিক ভাবে বিবাহ হয়। তাহাদের সংসারে (দুই)জন ছেলে সন্তান রয়েছে।
অভিযুক্ত আসামীদের মধ্যে হল, নিহতের স্বামী রাসেল (৩৪), সিরাজ স্ত্রী নাসিমা (৫২), রাসেলের পিতা সিরাজ (৬০), সিরাজ মিয়ার ২ মেয়ে রেখা (৩০) ও এনি (২৭), আসলামের মেয়ে অন্তু (১৪) চান মিয়া সরদারের ছেলে আক্তার (৪৮), সর্ব সাং- শহিদনগর ২নং গলি।
কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই ২,৩,৪,৫,৬ ও ৭নং বিবাদীর কুপরামর্শে ১নং বিবাদী যৌতুকের টাকার জন্য আমার মেয়েকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ বেদরক মারধর করতে শুরু করে। পরবর্তীতে মেয়ের সংসারের সুখের আশায় বিবাদীগণের দাবী অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে প্রায় ২২লক্ষ টাকা প্রদান করায়। কিন্তু এতেও বিবাদীগণ থেমে না থেকে প্রতিনিয়ত মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ১ আগস্ট সকাল অনুমান ১১:৩০ ঘটিকার সময় উক্ত বিবাদীগণের নির্যাতনে অতিষ্ট হইয়া আমার মেয়ে আমার বাসায় আসিয়া (আট) ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার নিয়া যায়। পরবর্তীতে একই তারিখ বেলা অনুমান ০২:২০ ঘটিকার সময় নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানাধীন শহিদনগর (ফার্মাসী দোকানের পাশের) ২নং গলিস্থ জনৈক সিরাজ মিয়ার বাসায় অবস্থানকালে ১,২,৩,৪,৫,৬ ও ৭নং বিবাদী পুনরায় আমার মেয়ের নিকট যৌতুকের টাকা দাবী করিয়া মানসিক ভাবে নির্যাতন করিতে শুরু করলে এবং ১নং বিবাদী তাহাদের দাবীকৃত টাকা না দিতে পারলে আমার মেয়েকে আত্মহত্যা করিয়া মরে যাওয়ার কথা বলিলে বিবাদীগণের কুপ্ররোচনায় আমার মেয়ের জনৈক সিরাজ মিয়ার দুই তলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় বাম দিকের রুমের সিলিং ফ্যানের সাথে ওরনা পেচিয়ে আত্মহত্যা করে। এ বিষয়ে সংবাদ পাইয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হইলে উল্লেখিত বিবাদীগণের নিকট জানতে চাইলে তাহারা নানা ধরনের টালবাহানা করিতে শুরু করেন। পরবর্তীতে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হইয়া তাৎক্ষনিক লাশ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠায়।
নিহতের স্বজনদের সূত্রে জানাযায়, প্রতিনিয়তই তাদের চাহিদা পূরণ করে আসছে নিহতের বাবা। কিছুদিন আগে ইনাছ এর বাবা ২০ লক্ষ টাকা মূল্যে একটি জায়গা বিক্রি করে। সেটাকার উপর ইনাছের অর্থ লোভী স্বামী শ্বশুর বাড়ির কুদৃষ্টি পরে। এবং দিনের পর দিন নির্যাতনের শিকার হতে হয় ইনাছকে। আমরা যতটুকু জানি ১৪ আগস্ট প্রবাসে (বাহরাইন) যাওয়ার প্রস্তুতি কৌশলে ইনাছকে হত্যা করেছে।
এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় নিহতের বাবা শরিফ মোবারক বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন মামলা নং ১ / ২/৮/২৩।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান বলেন, ওই গৃহবধূ প্ররোচনায়
আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। নিহতের শ্বশু সিরাজকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেয়ণ করা হয়েছে।