সিদ্ধিরগঞ্জে ধর্ষণ মামলা তুলে নিতে ধর্ষিতা কলেজ ছাত্রীকে প্রাণনাশের হুমকি ও ধর্ষিতার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভিডিও প্রচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে বৃহস্পতিবার বিকেলে আবেদন করেছেন ভুক্তোভোগী।
অভিযোগে অভিযুক্তরা হলো- সিদ্ধিরগঞ্জ গোদনাইল পাঠানটুলী রোড বাসষ্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা ধর্ষক শফিকুল ইসলাম (রিফাত), আসমা বেগম ও গণমাধ্যম কর্মী পরিচয় দেয়া রবিউলসহ অজ্ঞাত ৭/৮ জন। লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী উল্লেখ করেন- অভিযুক্তদের হুমকি, জুলুম ও নির্যাতনের কারণে কলেজের অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারছেনা তিনি।
ভুক্তোভোগী ধর্ষিতা কলেজ ছাত্রী জানান, গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর মারপিট ও ধর্ষণের অভিযোগে ধর্ষক শফিকুল ইসলাম (রিফাত) সহ আরও দুইজনকে আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করি। যাহার নং-২৫(৫)২২। মামলা দায়েরের পর ধর্ষকসহ অভিযুক্তরা মামলা তুলে নিতে আমাকে অব্যাহত হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। এ ঘটনায় ১৭ ডিসেম্বর থানায় একটি জি. ডি. দায়ের করি। যাহার নং- ৮৮৬। এরই মধ্যে র্যাব-১১ মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করে।
সম্প্রতি আসামিরা জামিনে বেরিয়ে এসে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার প্রচারনা করছে। আমাকে দেহ ব্যবসায়ী, মাদক ব্যবসায়ী উল্লেখ করে মানহানী করে আসছে।
অন্যদিকে মামলা তুলে নিতে আমাকেসহ আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি-ধামকী প্রদর্শন করে আসছে। এমনকি সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ যাহারাই আমার সমর্থনে এগিয়ে আসে তাহাদের বিরুদ্ধে উক্ত আসামিরা মানহানী কথাবার্তা প্রচার করে যাতে কেউ আমার পক্ষে সমর্থন না করে। এ ঘটনায় আমি গত ২৩ জুন সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় আরও একটি জি. ডি দায়ের করি। যাহার নং-১৩৪৯। বর্তমানে আমি আসামিদের জুলুম ও নির্যাতনের কারণে কলেজে অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারছি না।
সর্বশেষ গত ৮আগষ্ট রাতে অভিযুক্তরাসহ অজ্ঞাত ৭/৮ জন বিভিন্ন অনলাইনের সাংবাদিক পরিচয় দানকারী আমার বাসায় এসে আমাকে বিভ্রান্তিকর, অপ্রীতিকর ও মানহানীকর প্রশ্ন করলে আমি কান্না করতে থাকি এবং এর প্রতিবাদ করি।
একপর্যায়ে তারা চলে যাওয়ার সময় আমার কাছে খরচের টাকা দাবী করে। আমি তাদের বলি আমি গরীব আমার টাকা দেওয়ার সামর্র্থ্য নাই। এ সময় সংবাদ কর্মী পরিচয়দানকারীরা আমাকে বলে যায় টাকা না দিলে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রচার করবে।
এরপরদিন ৯ আগষ্ট সকালে আমার নজরে আসে “খবর নারায়ণগঞ্জ” অন-লাইন নামীয় একটি নিউজ পোর্টালে আমার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার করছে। সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য সম্বলিত, এটি উদ্দেশ্য প্রনোদিত, যাহা মানহানীকর। আমাকে এবং আমার পরিবারকে সামাজিক ভাবে হেয়-প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে প্রচার করা হয়েছে।
যার ফলে বর্তমানে আমি সমাজে হেয়প্রতিপন্ন হয়ে আছি এবং আমার সুষ্ঠ স্বাভাবিক জীবন যাপন করা দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। যার ফলে আমি বর্তমানে সমাজে চলাফেরা করতে পারছি না। আমি এর সুষ্ঠ তদন্তপূর্বক বিচার দাবী করছি।
খবর নিয়ে জানতে পারি উক্ত সাংবাদিক পরিচয় দানকারীর নাম রবিউল সে তাকে একুশে টিভির অন-লাইন নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। খবর নারায়ণগঞ্জে তার প্রকাশিত সংবাদের ভিডিওতে আমার মোবাইল নাম্বার প্রচার করা হয়েছে। এতে বিভিন্ন অজানা লোক আমাকে ফোন দিচ্ছে নানা অশালীন কথা বলছেন ও বাজে প্রস্তাব দিচ্ছেন।
এছাড়াও ধর্ষক শফিকুল ইসলাম (রিফাত) বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে তার অনুগত সাংবাদিকদের দিয়ে যে সব সংবাদ প্রচার করেছেন তাতে যেসব বক্তব্য দিয়েছেন তা আমি সংরক্ষন করি। এগুলোতে দেয়া তার বক্তব্য একটির সাথে আরেকটির মিল নেই।
আইনশৃংখলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট আবদেন, আমার বিরুদ্ধে প্রচারিত মানহানীকর সকল মিথ্যা সংবাদ ভিডিও বন্ধ করা সহ উক্ত ভূয়া সাংবাদিকসহ মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হউক। যাতে আমি স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করতে পারি।