আমাদের দুর্ভাগ্য নেত্রীর মেসেজ জাতির কাছে পৌঁছাতে পারি নাই! নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আমাদের দুর্ভাগ্য নেত্রীর মেসেজ জাতির কাছে পৌঁছাতে পারি নাই!
বিদেশী শক্তিরা কেন আমাদের দেশের বিষয়ে নাক গলাচ্ছে তা ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার ইঙ্গিতে বললেও গতকাল তিনি মিডিয়ার সামনে প্রকাশ্যে সেই কারণ উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, বিদেশীরা আমাদের দেশকে ব্যবহার করে যুদ্ধঘাটি বানাতে চায়, অন্য দেশে হামলা করতে চায়, যা আমরা কখনো হতে দিবো না। সুতরাং বঙ্গবন্ধু কণ্যার বক্তব্য পরিস্কার। আমরা কোনো অপশক্তির কাছে মাথা নত করবো না। জামাত-বিএনপি ভয়ংকর কিছু করার চেষ্টা করছে। দেশটাকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে যে, এই দেশটা আফগানিস্তান কিংবা সিরিয়ার চেয়ে খারাপ অবস্থা হবে। তাই এই আগস্ট মাসের শেষ দিকে, আগামী সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর এই সময়টা বাংলাদেশের জন্য একটা ক্রান্তিকাল।
আজ একই ঘটনা ঘটেছে। গতকাল জাতির জনকের কন্যা ভাষণ দিয়েছে। সে ভাষণ ফলো করলে আপনারা বুঝতে পারবেন ঘটনা কোনদিকে মোড় নিচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে আমাদের কৈশোর হারিয়ে গেছে। সেদিন থেকে বাংলাদেশ পেছনে যেতে থাকে। আমাদের রাজনীতিতে আসতে হয় গণতন্ত্রের জন্য, মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগষ্ট) দুপুরে আয়ামীলীগের আয়োজনে ফতুল্লার ৪ নং ওয়ার্ডে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা মাত্র ৩১ বছর বয়সে আওয়ামী লীগের হাল ধরেছিলেন। ওরা কিন্তু ক্ষান্ত হয়নি। জাতির জনকের কন্যাকে ২২ বার হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জে ২০০১ সালে বোম ব্লাস্ট হয়েছিল। তখন একটা কথাই বলেছিলাম শেখ হাসিনাকে বাঁচান। কারণ আমি মারা গেলে কিছু হবে না। শেখ হাসিনা না থাকলে মানুষের স্বপ্ন পূরণ হবে না।
তিনি বলেন, ১৫ আগষ্ট শুধু বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে হত্যা করা হয়নি। হত্যা করা হয়েছিল আমাদের স্বপ্নকে। আজ এখানে দাঁড়িয়ে আমরা যারা রাজনীতি করছি, আমাদের রাজনীতি করার কথা ছিল না। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে দেশটা অন্যরকম থাকত। যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বলেছিলেন আমি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না, আমি মানুষের অধিকার চাই। তিনি সারা জীবন জেলে কাটিয়ে জনগণকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। পাকিস্তানিরা তাকে হত্যা করতে পারেনি। কিন্তু মোশতাক, জিয়াউর রহমানসহ ওরা পেছন থেকে কলকাঠি নেড়ে জাতির জনককে হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা জাতিসংঘে যে ভাষণ দিয়েছিলেন তা তার মৃত্যুর কারণ। তিনি বলেছিলেন আমি শোষক নয় শোষিতের পক্ষে। এ কথাটা বিশ্ব মোড়লরা ভালভাবে নেয়নি। যারা স্বাধীনতার সময় পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল তারা এটা ভালভাবে নেয়নি। তখনও তারা সেন্টমার্টিন দ্বীপ চেয়েছিল, বঙ্গোপসাগর চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছি, কারও কাছে আমি দেশের জমি বিক্রি করবো না।
শেখ হাসিনা হত্যার পরিবর্তে হত্যা করেননি। ১৯৯৬ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর আমরা প্রায় পঞ্চাশ ষাট জন বলেছিলাম স্পেশাল ট্রাইবুনালে এক বছরের মধ্যে বিচার করে তাদের ফাঁসি দেন। তিনি বললেন না, আমি প্রচলিত আইনেই বিচার চাইবো। ১৬ জুন বোমা হামলার পর খালেদা জিয়া বলেছিলেন আমরা নাকি শেখ হাসিনার পরিবারের নিরাপত্তা আইন পাশ করানোর জন্য বোমা মেরে আমাদের বিশ জন লোককে হত্যা করেছি। এত নোংরা ও নৃশংস তারা।
তিনি আরও বলেন, ২০০১ সালের পর আমাদের কত মানুষ তারা মেরেছে আপনারা জানেন। এই হাত দিয়ে পঞ্চাশজনের লাশ দাফন করেছি। আমরা কিন্তু কাউকে খুন করিনি। আমরা কারও বাড়িতে আগুন দেইনি কারও অর্থ সম্পদ লুট করিনি। কারণ আমাদের কাজ মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেয়া। এটাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফতুল্লা থানা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল আলী, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী, ফতুল্লা ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপন, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের ১নং সদস্য আবু মোঃ শরীফুল হক,শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, জাতীয় পার্টির দেলোয়ার হোসেন, যুবলীগ নেতা শিমুল,জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসমাইল রাফেল, ছাত্রলীগ নেতা আহমেদ কাউসার কাজল, এড. জুয়েল হোসেন, ফতুল্লা থানা আওয়ামী যুবলীগ নেতা পাপন সরকার প্রমুখ।