বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, নারায়ণগঞ্জে কিছুদিন আগে শাওন নামে এক যুবদল নেতা মারা যায়। সারাদেশে এভাবে ১৮ জনের মতো মারা গেছে। টিটুর মতো অসংখ্য তরুণদের চোখ চলে গেছে পুলিশের গুলিতে। আপনি টিটুদের চোখের আলো নিয়ে যাচ্ছেন। এভাবে গোটা জাতিকে অন্ধকারের মধ্যে রাখতে চাচ্ছেন। দেশের জন্য কারো আত্মত্যাগ কখনো বৃথা যায় না। টিটুর চোখ চলে গেছে। এই ত্যাগ বৃথা যাবে না। এই ত্যাগের বিনিময়ে শেখ হাসিনার বিদায় হবে।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় পুলিশের গুলিতে চোখের দৃষ্টি হারানো
ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটুর বাড়িতে তাকে দেখতে এসে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে ২৯ জুলাই বিএনপির ঢাকার প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিতে চোখের দৃষ্টি হারান টিটু। এসময় তিনি টিটুর পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলেন এবং তাকে দলের পক্ষ থেকে সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এ সময় রুহুল কবির রিজভী আরও প্রধানমন্ত্রী ক’দিন আগে বলেছেন, তাকে নাকি সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে আপনাকে তো সরাবে জনগণ। কাকে ক্ষমতায় রাখবে তা জনগণই বেছে নেবে। জনগণ চাচ্ছে যে আপনি (প্রধানমন্ত্রী) পদত্যাগ করুন। আর নির্বাচনকালীন একটি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকার দিন যাতে জনগণ সুষ্ঠুভাবে ভোটটা দিতে পারে। জনগণই তো দেশের মালিক। কাকে রাখবে আর কাকে সরাবে সেটা তো জনগণের অধিকার এটাকেই তো গণতন্ত্র বলে। আপনি যেভাবে ক্ষমতায় থাকতে চান সেটার শিকার হচ্ছে বিএনপি নেতা শহীদুল ইসলাম টিটু অর্থ্যাৎ দেশে বিরোধীদলের জন্য কথা বলার কোন জায়গা থাকবে না। সরকার একের পর এক অন্যায়, লুটপাট, টাকা পাচার করবে, এটার বিরুদ্ধে কথা বলার, মিছিল করার, স্লোগান দেওয়ার কোন লোক থাকবে না। আর যদি থাকে তাহলে তাদের পরিস্থিতি হবে শহীদুল ইসলাম টিটুর মতো। শেখ হাসিনার জোর করে ক্ষমতায় থাকার পরিণতি হচ্ছে টিটুর চোখের দৃষ্টি চলে যাওয়া।
তিনি বলেন, ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য শেখ হাসিনা জনগণের বিরুদ্ধে, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। আপনি নিজের মতো করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সাজিয়ে নিয়েছেন। আপনার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আর পেটোয়া বাহিনী দিয়ে তরুণদের হত্যা করছেন, চোখের অলো কেড়ে নিচ্ছেন, হাতের কব্জি কেটে ফেলছেন, পা কেটে ফেলছেন। এটা আর চলবে না, জনগণ আর চলতে দেবে না। যুবক-তরুণরা জাগ্রত হয়েছে প্রতিহত করার জন্য।
বিএনপি নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে না। আমরা সেই নির্বাচন প্রতিহত করতে চাই, যেখানে জনগণ অংশগ্রহণ করে না, ভোটাররা ভোট দিতে পারে না। শেখ হাসিনার একতরফা নির্বাচনে আর অংশগ্রহণ করবো না এবং তাকে করতেও দেবো না। গণতন্ত্র ফেরাতে বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রাম চলবে। জনগণকে ত্যাজ্য করে নির্বিঘ্নে ফ্যাসিস্ট ক্ষমতায় থাকবেন তা হতে পারে না। কোন ত্যাগ বৃথা যায় না। এই ত্যাগের বিনিময়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হবে। বাকস্বাধীনতা ও গণতন্ত্র অবশ্যই ফিরে আসবে। রক্তচক্ষু নিয়ে যেভাবে শেখ হাসিনা শাসন করছে তার পতন হবে।
এই সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটু, নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া, সহআন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, জেলা যুবদলের সদস্যসচিব মশিউর রহমান রনি,ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছা সেবক দলের আহবায়ক জাকির হোসেন রবিন প্রমূখ।