নারায়ণগঞ্জে রেলওয়ের জমি দখলের মহোৎসব চলছে। যে যেভাবে পারছে রেলওয়ের জমি দখল করে চলছে। দখল করা জমিতে চলছে মার্কেট, দোকানপাট ও বসবাসের ঘর নির্মাণ। প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা এসব স্থাপনা গড়ে তুলেছেন। উচ্ছেদ হলে কিছু দিন থেমে থাকে আবার চলে দখল কাজ। আবার প্রভাবশালী দখলদাররা মামলা ঠুকে দেন রেলের বিরুদ্ধে। ফলে মামলা চলাকালেও তাদের দখল কাজ চলে নির্বিঘে। এমনকি দখলদারদে উচ্ছেদ করতে এসে হামলা শিকারের ঘটনাও ইতোপূর্বে ঘটেছে।
জানা গেছে, ঢাকা নারায়ণগঞ্জ রেলপথের দু’পাশে প্রায় ৮০ একর জায়গা বেদখল হয়েছিল। এরমধ্যে গত ১ বছরে প্রায় ৩০ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি ৫০ একরের মধ্যে শুধু নারায়ণগঞ্জ শহরেই বেদখল ৪০ একর জমি। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে আদমজী পুরাতন রেল লাইনের দুই পাশের প্রায়ই জমি দখল হয়ে গেছে। এসব জমি দখল করে নির্মান হয়েছে মার্কেট, দোকনপাট ও বানিজ্যিক কেন্দ্র।
অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাদের নেতৃত্বে উদ্ধার কাজে বাধা দেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জে ভূমিদস্যুরা উদ্ধারকারীদের বিরুদ্ধে ৭০টি মামলা করেছেন। কোথাও কোথাও উদ্ধার হওয়া জায়গা পুনরায় দখলে নেয়া হচ্ছে। রেল কর্তৃপক্ষ সেসব ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে মামলা করলেও তাদের আটক করা হচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের পাঠানটুলি এলাকায় রেলওয়ের জায়গা অবৈধ ভাবে দখল করে মার্কেট করছে ইমরুল কায়েস। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি এ ব্যক্তি রেলওয়ের জায়গা অবৈধ ভাবে দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করছে এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। রেলওয়ের জায়গা দখল মুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকার সচেতন মহল।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন , ইমরুল কায়েস ও এলাকার একাধিক ব্যক্তি পাঠানটুলি নতুন সড়কে আব্বাসী মঞ্জিলের বিপরীতে রেলওয়ের জায়গা অবৈধ ভাবে দখল করে মার্কেট করছে। এভাবে একাধিক মহল রেলওয়ের জায়গা দখলে তৎপর হয়ে উঠেছে। দখলের শুরুতে দখলদারদের প্রতিহত করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, একাধিক ব্যক্তি রেলওয়ের জায়গা দখলের চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে ইমরুল কায়েস নামে এক ব্যক্তি রেলওয়ের জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। রেলের জায়গায় পাকা দোকান নির্মান করে স্থায়ী ভাবে দখলে পাঁয়তারা করছে।
এদিকে রেলওয়ের জায়গা দখল পাকা স্থাপনা নির্মাণ এবং দখলদার কাজী ইমরুল কায়েস, ইফতেখার কায়েস রুমেলসহ অজ্ঞাত বেশ কয়েকজনকে বিবাদী করে মঞ্জুরুল করিম নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
তবে ইমরুল কায়েসের ঘনিষ্ঠ সাব্বির ভূইয়া রেলওয়ের জায়গা দখল করে সাইনবোর্ড স্থাপন করেছে এবং খরিদ সুত্রে জায়গাটি সে দখল করেছে বলে প্রচার করছে।
স্থানীয়রা জানায়, যেখানে রেলওয়ে থেকে সড়ক ও জনপদ বিভাগ প্রয়োজনীয় অংশ নিয়ে চাষাড়া টু আদমজী নিমার্ণ করে ফেলেছে, বাকী জায়গাও সরকারি হিসেবে আছে। ব্যক্তি মালিকানার নামে কোন বেচা-কেনার সুযোগ থাকতে পারে না বলেন তারা মনে করেন। অভিযোগ রয়েছে , রেলওয়ের দূনীর্তিগ্রস্থ কানুনগো ইকবালের সহায়তায় দখলদাররা সরকারী জায়গা দখল করেছে।
অভিযোগের বিষয়ে ইমরুল কায়েস বলেন, যেহেতু আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করবোনা। আদালতে বিচারাধীন থাকা সত্বেও কিভাবে মার্কেট নির্মাণ কাজ করছেন এ প্রশ্নের জবাবে বলেন,আপনি সরেজমিন এসে দেখে যান নির্মাণ কাজ চলছে কিনা।
তবে এলাকাবাসীর দাবি, অবৈধ ভাবে রেলওয়ের জায়গা দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে পথচারীদের ব্যবহারে উপযোগী করা প্রয়োজন। একই চিত্রের দেখা মিলে নারায়নগঞ্জ-কমলাপুর রেললাইনের দুপাশে।