শহরের চাষাঢ়ায় বঙ্গবন্ধু বিএনপির কালো পতাকা কর্মসূচীতে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের পদবঞ্চিতদের ককটেল বিস্ফোরণ, যানবাহন ভাংচুর, জনমনে আতংক ও ত্রাস সৃষ্টিসহ সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক মফিজুর রহমান বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে সাইত্রিশজনকে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও দুইশ’ থেকে তিনশ’ জনকে।
শুক্রবার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনিচুর রহমান বলেন, থানার উপপরিদর্শক মফিজুর রহমান বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে মামলাটি দায়ের করেছে।
আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টীমের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (৩০ আগস্ত) বিকাল চাটার দিকে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌন মিছিলের জন্য নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। নেতৃবৃন্দের বক্তব্য চলাকালে আগের দিনের কমিটির বিষয়ে তাদের সাথে বাক বতন্ডায় জড়ায় যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের পদবঞ্চিত নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা।
এসময় দুইপক্ষ মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের উপর হামলা চালায়। তাদের মধ্যে মারামারি ও ধাওয়া পালটা ধাওয়া হয়। পদবঞ্চিতরা নেতাকর্মীদের এলোপাতাড়ি লাঠিপেটা করে ব্যানার, ফেস্টুন ছিড়ে ফেলে এবং মাইক ভাঙচুর করে। এক পর্যায়ে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করে।
নগরীর প্রধান সড়কে একটি মোটর সাইকেল, ব্যাটারিচালিত একটি স্কুটার ও অটো রিকশাসহ কয়েকটি যানবাহন ভাংচুর করে তান্ডব চালায় হামলাকারিরা। প্রেসক্লাব চত্বর ও আশপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিনত হয়।
এএসময় সাংবাদিকরা এর ভিডিওচিত্র ও ছবি ধারণ করতে গেলে যুবদল ও স্বচ্ছাসেবক দলের পদবঞ্চিত কর্মীরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে তাদের উপর হামলা চালিয়ে বেধড়ক লাঠিপেটা করে।
এসময় সময় টেলিভিশনের জেলার ভিডিও জার্নালিস্ট আরিফ হোসেন, একাত্তুর টিভির স্থানীয় ক্যামেরাপার্সন জামিল হোসেন উল্লাস ও দৈনিক সমকাল পত্রিকার ফটো সাংবাদিক মেহেদি হাসান সজীব তাদের পিটুনিতে গুরুতর আহত হন।
এছাড়া পথচারীসহ আরও অন্তত সাত-আট জন বিএনপির নেতাকর্মী আহত হন। প্রায় আধ ঘন্টা ধরে চলে এই তান্ডব। পরে পুলিশ টিয়ার সেল ছুঁড়ে হামলাকারিদের ছত্রভঙ্গ করলে বিকেল। পাঁচটায় পরিস্থিতি আইন শৃংখলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রনে আসে। পরে আহত সাংবাদিকদের নগরীর খানপুর এলাকায় ৩০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।