সিলেট নগরীর নয়াসড়কের প্রাচীন বিদ্যাপীঠ কিশোরীমোহন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের গেইটের দুইপাশে সড়কের উপর প্রায় আট বছর ধরে ফেলে রাখা রয়েছে দশটি বৈদ্যুতিক খুঁটি। এতে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বিদ্যালয়ের ছাত্রী, যানবাহন চালক ও পথচারীদের। সড়কের উপর থেকে খুঁটি সরানোর জন্য বছরের পর বছর স্থানীয়দের জোর দাবি থাকলেও টনক নড়ছে না কারো।
নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ততম এলাকা নয়াসড়ক। বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবেও নয়াসড়কের সুনাম রয়েছে। মানিকপীর কবরস্থান, শাহী ঈদগাহে যাবার জন্য সহজে ব্যবহার করতে হয় ওই সড়কটি। এই সড়ক ঘেঁষেই রয়েছে মেয়েদের সুপ্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিশোরীমোহন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের ভেতর প্রায় সবগুলো প্রধান সড়কে ফুটপাত রয়েছে। কিন্তু কিশোরী মোহন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ঘেঁষে প্রায় আড়াইশ’ ফুট সড়কে কোনো ফুটপাত নেই। তবে আড়াইশ’ ফুট পরে আবার ফুটপাত রয়েছে যথারীতি। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিংবা আশপাশ এলাকার মানুষের কাছে ফুটপাত নয়, বিগত আট বছর ধরে ‘গলার কাঁটা’ হয়ে আছে বিদ্যালয়ের সম্মুখের সড়কে ফেলে রাখা দশটি খুঁটি।
সরেজমিন দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের সম্মুখ সড়কের একপাশে দুইটি, অন্যপাশে আটটি খুঁটি ফেলে রাখা হয়েছে। দীর্ঘ আটবছর ধরে ফেলে রাখায় সেগুলোর অনেকটা নষ্ট হয়ে গেছে। ভেঙে গেছে অনেকটার বাইরের অংশ। সড়কটি ব্যস্ততম হওয়ায় যানবাহনও চলাচল করে অনেক ঝুঁকি নিয়ে। খুঁটির কারণে যানবাহন চলাচলে যতটা না সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে বিদ্যালয়ের মেয়েদের। বিদ্যালয়ে আসার সময় এবং ছুটি শেষে সবাই যখন দলবদ্ধভাবে বের হয়; তখন অনেক সময় বাধার সম্মুখীন হতে হয়। আট বছর ধরে তারা এই সমস্যার সম্মুখীন। শিক্ষার্থীদের মতো সবসময় চলাচলকারী পথচারীরাও আতঙ্কে থাকেন, কখন খাম্বার সাথে দুর্ঘটনা ঘটে। তাই, যত দ্রুত সম্ভব রাস্তার উপর ফেলে রাখা খুঁটিগুলো সরানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিদ্যালয় এবং আশপাশ এলাকার মানুষ।
নয়াসড়ক এলাকার বাসিন্দা প্রবীণ মুরুব্বি আওলাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা খুঁটিগুলোর জন্য খুব সমস্যায় আছি। সিটি কর্পোরেশনকে কয়েকবার বলার পরও সরানোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।’
এই সড়ক দিয়ে গেলে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বাসভবনটিও অদূরে, কয়েক মিনিটের পথ। কিশোরীমোহন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুহিব উস সালাম রিজভীও একই অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের খুঁটির কারণে বিদ্যালয়ের সীমানার পরিবেশ নষ্ট হতে চলেছে। অনেকে ময়লা-আবর্জনা ফেলে দেয় সড়কের উপর। খুঁটির উপর বসে অনেককে প্র¯্রাব করতেও দেখা যায়।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিষয়টি মেয়র আরিফুল হককেও অবগত করা হয়েছে। কিন্তু মেয়েদের স্কুলের পাশের এই সমস্যাকে কেউ গুরুত্ব দিচ্ছেন না।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌরা ঘোষ সমস্যার বিষয়ে একমত পোষণ করে বলেন, খুঁটির আশপাশে বর্তমানে ময়লা আবর্জনা ফেলে দুর্গন্ধময় একটা পরিবেশের সৃষ্টি করা হয়েছে। খুঁটি সরিয়ে ফেললে এই সমস্যার হয়তো সমাধান হতে পারে।’
নয়াসড়ক এলাকাটি ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। এ ব্যাপারে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মুহিত জাবেদ ফোন রিসিভ করেননি।
বিউবো-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামস-ই আরেফিন এর সাথে এ প্রসঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ‘আমি বিষয়টা জানতাম না, আপনার মাধ্যমে জানলাম। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবো।’