নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা করা। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করে চলছেন। তাঁর প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে মাথা উচু করে দাঁড়িয়েছে। তিনি যতোদিন বেঁচে থাকবেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক বা অশুভ কোন শক্তি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।
শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) নগরীর ২নং রেল গেট থেকে বর্ণাঢ্য র্যালির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে শামীম ওসমান এ সব কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে র্যালিটির আয়োজন করা হয়।
নগরীর ২নং রেল গেট এলাকা থেকে বর্ণাঢ্য র্যালিটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চাষাড়া চত্বর হয়ে আবার ২নং রেল গেট এলাকায় এসে শেষ হয়।
এছাড়াও সাংসদ শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জেলা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই নারায়ণগঞ্জে এক সাথে কবরস্থান, শ্মশান ও মেননসহ চার ধর্মের সমাধিস্থল পাশাপাশি সহঅবস্থানে রয়েছে। আমরা বেঁচে থাকতেও এক সাথে আছি। মৃত্যুর পরেও এক সাথে থাকবো। নারায়ণগঞ্জে অসাম্প্রদায়িক শক্তি কখনও সফল হতে পারেনি। ভবিষ্যতেও পারবে না। এর নামই হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ। এই নারায়ণগঞ্জে কেউ অসাম্প্রদায়িক কোন কিছু করার চিন্তা করলে তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার রয়েছে। তাই ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে সবাইকে সম্মান দিতে হবে।
এছাড়াও ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে অশুভ শক্তির মোকাবেলাসহ সকল ধর্মের মানুষের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেন, আমি মনে করি, ইসলাম ধর্মের প্রথম কাজ আরেকটি ধর্মকে সম্মান করা। যারা ইসলামের নাম নিয়ে ধর্ম ব্যবসা করে, ইসলাম কখনো তাদেরকে সমর্থন করে না।
তিনি আরও বলেন, আপনারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করবেন। তিনি বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলবেন। এখন যেমন বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, আগামীতেও দাঁড়িয়ে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতদিন আছে বাংলাদেশকে কেউ মাথা নিচু করাতে পারবে না। আমার বিশ্বাস জয় আমাদের হবেই, কারণ আমরা বীরের জাতি।
শামীম ওসমান বলেন, দেশের স্বাধিনতা সংগ্রামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি ধর্ম, বর্ণ ভেদাভেদ ভুলে সম্মিলিতভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। কে কোন ধর্মের অনুসারি এটা কোন বিষয় ছিলো না। আমরা সবাই বাঙালি তখন এটাই ছিল সবার পরিচয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী একনাথানন্দজী মহারাজ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) চাইলাউ মারমা, এফবিসিসিআই এর পরিচালক প্রবীর কুমার সাহা, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, পানাম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অমল পোদ্দার, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সাবেক ট্রাস্টি পরিতোষ কান্তি সাহা প্রমুখ ।
এদিকে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে জেলার মন্দিবগুলো বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। প্রতিটি মন্দিরেই দিনব্যাপী ভক্তিমুলক গান ও কীর্তণের আয়োজন রয়েছে।