নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের একজন তরুণ কর্মী ছিলেন নিহত শাওন প্রধান। বিএনপি’ কিংবা যুবদলের যেকোনো কর্মসূচির ডাক আসলেই সকল কাজকর্ম ফেলে দিয়েই অংশগ্রহণ করতো। রাজপথের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে সামনে থেকেই শাওন প্রধান সাহসী ভূমিকা পালন করেছিলেন।
কিন্তু আজকে দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে গিয়ে যিনি রাজপথে পুলিশের নির্মল গুলিতে নিহত হয়েছিল সেই শাওন প্রধানের মৃত্যুবার্ষিকীর দোয়া মাহফিলে দেখা যায়নি নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনিকে। এমনকি এক মিনিটের জন্য ফোন করো তার পরিবারকে সান্তনা দেননি যুবদলের এই নেতা।
জানা গেছে, নিহত যুবদল কর্মী শাওন প্রধানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে বুধবার ৬ সেপ্টেম্বর বাদ জোহর ফতুল্লায় নিহত শাওন প্রধানের বাসভবনে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের উদ্যোগে ও পরিবারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে দোয়া মাহফিল করা হয়। দোয়া মাহফিলে জেলা ও মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। শুধুমাত্র উপস্থিত ছিলেন না জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি। দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানের রনিকে না দেখে যুবদলের নেতাকর্মীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে- নিহত শাওন প্রধান নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের নবনির্বাচিত আহবায়ক সাদেকুর রহমান সাদেকের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। নিহত শাওন প্রধানের বাড়ি ফতুল্লায় এবং জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি’র বাড়িও ফতুল্লা এলাকায়। অথচ সেই শাওনের বাড়িতে যাননি রনি। তার একটিই কারন সে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকের কর্মী ছিল।
শুধু তাই না মশিউর রহমান চাইনি যে সাদেক জেলা যুবদলের আহ্বায়ক হোক। রনি চেয়েছিলেন নিজেই জেলা যুবদলের আহ্বায়ক হওয়ার জন্য। নিজের মতন করে নতুন জেলা যুবদলের কমিটি গঠন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে ব্যর্থ হতে হয়েছে তাকে। এর জন্য জেলা যুবদলের নতুন কমিটি গঠন করার পর থেকেই জেলা যুবদলের সাথে কোন কর্মসূচিতেই অংশ নেন না মশিউর রহমান রনি। দলীয় কর্মসূচি গুলোতেই একাই অংশগ্রহণ করে থাকেন বলে জানা গেছে।
এবিষয়ে নিহত শাওন প্রধানের বড় ফরহাদ প্রধান বলেন, গত ১সেপ্টেম্বর আমার ভাইয়ের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী ছিল কিন্তু সেইদিন বিএনপি’র ঢাকায় কর্মসূচি থাকায় আমরা ৬ সেপ্টেম্বর জেলা যুবদলের সার্বিক সহযোগিতায় আমার পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছি। জেলা ও মহানগর বিএনপির পাশাপাশি যুবদলের নেতাকর্মীদেরকেও আমি পরিবারের পক্ষ থেকে দাওয়া দিয়েছি।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, বিশেষ করে আমি জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি ভাইকেও নিজে দাওয়াত করেছি। তিনি বলেছিলেন যে আমি আসবো কিন্তু তিনি আসেননি। আমার ভাই জেলা যুবদলের রাজনীতি করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। আজকের যুবদলের দায়িত্ব থেকেও রনি ভাই আমার ভাইয়ের মৃত্যুবার্ষিকীর দোয়া মাহফিলে আসেনি। এমনকি আমাদেরকে একটু ফোন করেও সান্তনা দেননি।
তবে এ বিষয়ে জানতে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি’র মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জেলা যুবদল কর্মী নিহত শাওন প্রধানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। আমি গত দু’দিন আগে নয়াপল্টনে যুবদলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন ভাইয়ের সামনেই মশিউর রহমান রনিকে আমি নিজেও দাওয়াত দিছি। রনি বলেছিল ভাই আমি আসবো। কিন্তু কেনো আসেনি তা বলতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের নতুন কমিটি পর থেকেই রনি কোন কর্মসূচিতেই আমাদের সাথে সমন্বয় করেনি। সে তার মতো করে দলীয় কর্মসূচি গুলোতে অংশগ্রহণ করেন। আমি এই বিষয়গুলো কেন্দ্রে জানাবো।