নারায়ণগঞ্জ -৪ আসনের সংসদ এ কে এম শামীম ওসমান বলেছেন, সামনের সময়টা অনেক কঠিন। এখানে আপনারা যারা আছেন তারা আমার চেয়ে বেশি জ্ঞানী, আপনারা হয়তো আমার চেয়ে ভালো জানেন। এই সময়টা যে আওয়ামী লীগের জন্য খারাপ তা না, এই সময়টা দেশের জন্যই খারাপ।
ক্ষমতাসীন সরকার ব্যাপক উন্নয়ন করছে। রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, স্কুল-কলেজ হয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে, ফ্লাইওভার করা হয়েছে। মানুষ অবশ্যই এসব দেখতে চায়। মানুষ তার বাড়ির সামনে আরসিসি ঢালাই করা পাকা রাস্তা দেখতে চায়। মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে চায়।
মানুষ দেখতে চায় না রাস্তাঘাটে কেউ মাদক বিক্রি করুক। মানুষ দেখতে চায় না কেউ সন্ত্রাসী করছে। মানুষ দেখতে চায় না কিশোর গ্যাংয়ের নামে অন্য দলের সন্ত্রাসীরা দেশে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাক। গণতন্ত্রের আন্দোলনের নামে সাংবাদিকদের রাস্তায় ফেলে বেধড়ক পেটানো হচ্ছে, মানুষ এগুলো দেখতে চায় না।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ লাইন্সে কমিউনিটি পুলিশিং সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা গুলো বলেন।
তিনি প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, রাজনীতিবিদ থেকে সাংবাদিকদের সবাই যে পারফেক্ট তা কিন্তু না। ভালো মন্দ মিলে-মিশে আছে সব পেশাতে। আমি আপনাদের কাছে হাত জোড় করে একটা জিনিস ভিক্ষা চাই। আপনার এগিয়ে আসুন, আমরা আপনাদের পাশে আছি। এই মাদক যদি বন্ধ না হয় তবে আমাদের উন্নয়নের সুফল ভোগ করবে কারা?
আপনারা যদি চান আমরা আপনাদের সাথে থাকবো, সাংবাদিকরা থাকবে। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব কিছুর মধ্যে ভালো-মন্দ মানুষ আছে। নারায়ণগঞ্জের মধ্যে ৯০% সাংবাদিক ভালো আর ১০% সাংবাদিক ভালো না। ১০% সাংবাদিক তারা বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত আছে, কিন্তু ৯০% সাংবাদিক ভালো আছে।
তিনি বলেন, পলিটিশিয়ানরা যেমন সবাই এক না, সবকিছুর মধ্যে ভালো-মন্দ মিলিয়ে আছে। এই কারণে আমাদের পুলিশের পক্ষে একা মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। নারায়ণগঞ্জের রাস্তাঘাট স্কুল কলেজের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। গত কয়েকদিন আগে কেবিনেটে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের নারায়ণগঞ্জের জন্য একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ করে দিয়েছেন।
লিংক রোড এর পাশে মেডিকেল কলেজ হবে ইনশাআল্লাহ। এখানে এই বিশ্ববিদ্যালয় রাস্তাঘাট ব্যবহার করবে কে। যদি আমাদের সন্তান ধ্বংস হয়ে যায়। এরা তো আওয়ামী লীগের সন্তান না বিএনপির সন্তান না জাতীয় পার্টির ও সন্তান না। ওরা তো আমাদের ভবিষ্যৎ।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ ভাইয়েরারা আপনারা মাদক, ইভটিজিং, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী ও কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। আমি আপনাদের পাশে থাকবো। আমি আপনাদের কথা দিলাম আমি এই ধরনের কোন লোককে কখনো আশ্রয় কিংবা প্রশ্রয় দিব না। সে যেই হোক না কেন আই ডোন্ট কেয়ার। আমরা শান্তিতে থাকতে চাই।
আমরা রাজনীতিকে এবাদত মনে করি। রাজনীতি মানে মানুষকে ভালোবাসা। মানুষের বিপদ-আপদে পাশে থাকা। একটা পরিবারে একজন যদি মাদকাসক্ত হয়ে যায় তাহলে ওই পরিবারটা ধ্বংস হয়ে যায়। যদি সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি তাহলে আমরা সফল হব ইনশাআল্লাহ।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান, লিয়াকত হোসেন খোকা, নজরুল ইসলাম বাবু, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভি, পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, জেলা কমিউনিটি পুলিশিং সভাপতি প্রবীর কুমার সাহা প্রমুখ।