একটা সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে ক্লাবগুলোতে উন্মুক্ত ছিল মাদক-জুয়ার আসর।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্ট ঢাকার অভিজাত ১৩টি ক্লাবসহ সারা দেশে সব ধরনের জুয়া খেলা নিষিদ্ধ করে রায় দেন। ক্যাসিনো সাম্রাজ্যেও ধস নামার পর জুয়ার কালচার আপাত দৃষ্টিতে নেই বলে মনে হলেও হালের তথ্য বলছে— কৌশল ও স্থান বদলে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে জুয়া এবং মাদকের আসর বসছে।তবে আগে যেভাবে টাকার স্তূপ সামনে নিয়ে জুয়ার মজমা বসত এখন আর সেভাবে বসছে না।
এখন টাকার লেনদেন হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে। হিসাব হচ্ছে খাতা-কলমে। খেলা শেষে জয়-পরাজয় অনুযায়ী ভাগবাটোয়ারা হচ্ছে টাকা। বর্তমানে এভাবেই জুয়ার আসর বসছে নারায়ণগঞ্জ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন শহরে।জানাযায় যে, মাসদাইর বাজারের সাথে পান্নু হাজীর পাঁচ তলা বাড়ীর নিচ তলায় কাইল্লা সাফুদ্দিন, গাজাখোর শাহআলম, ফেন্সি সালাম, বরিশ্যাইল্লা আলম, মালাউন লিটন ও বাচাঁল টিটু বিশ^াসের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে চলছে জমজমাট জুয়া ও মাদকের আসর।
আর ফেন্সি সালামের এই পাঁচ তলার তিন তলায় একটি গোপন অফিস কক্ষ আছে যেখানে ফেন্সিডিল,গাজা, মদসহ অনেক মাদক মজুত রাখা হয় বলে যানা গেছে।
জুয়ার পাশাপাশি মাদক সেবনও করছে জুয়া খেলতে আসা এই সব জুয়ারীরা।নারায়নগঞ্জ সদর উপজেলার মাসদাইরের বিভিন্ন এলাকাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে প্রকাশ্যে বসে জমজমাট জুয়া ও মাদকের আসর আর প্রশাসনকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে তা চালাচ্ছে কাইল্লা সাফুদ্দিন, গাজাখোর শাহআলম, ফেন্সি সালাম, বরিশ্যাইল্লা আলম, মালাউন লিটন ও বাচাঁল টিটু বিশ্বাস।
স্থানীয় দোকানদার ও বাসিন্দারা জানান, প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে বাজার এলাকাতে জুয়া ও মাদকের আসরে যুবকসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ আমোদ ফূর্তি করতে আসে।এসবের ফাঁদে পড়ে অনেকেই টাকা-পয়সা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে বাড়ি ফিরে যায়।
দোকানদারদের অভিযোগ, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই জুয়ার আসর বসিয়ে এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছে। এদিকে জুয়া ও মাদকের কারণে দিন দিন বেড়েই চলেছে পারিবারিক সহিংসতা ও কলহ। বেড়েছে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদের ঘটনাও।খেলতে আসা বেশিরভাগই উচ্চবিত্ত মানুষ। দূর দূরান্ত থেকে বিত্তশালী বহিরাগতদের নিয়ে দিন-রাত লক্ষ লক্ষ টাকার বাঁজি ধরে তাসের আড্ডা বসিয়ে চলছে এই বাণিজ্য। সেই সাথে চলছে মাদকসেবনের মহা উৎসব। ইদানিং দেখা যাচ্ছে মাসদাইর বাজারের আসর গুলোতে নামি-দামি মোটরসাইকেল নিয়ে যুবকদের আনাগোনা আগের চেয়ে অনেক বেশি। গভীর রাত পর্যন্ত এ আড্ডা দিতে দেখা যাচ্ছে।
এসবের কারণে এলাকার চুরি ছিনতাই মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপরাধ সংক্রান্ত কার্যক্রম বেড়েই চলছে। এমনভাবে চলতে থাকলে যুবসমাজ ধ্বংসের পথে চলে যাবে। এ জুয়ার কারনে পারিবারিক ভাবে বহু পরিবারের মাঝে অশান্তি বিরাজ করছে।
এই বিষয় নিয়ে ফতুল্লা মডেল থানার (ওসি) বলেন, জুয়া ও মাদক ব্যবসা বন্ধে পুলিশ নিরালস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পুলিশের একাধিক টিম এটা নিয়ে কাজ করছে এবং নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে অপরাধীদের আটক করতে সক্ষম হচ্ছে। অপরাধী সে যত বড়ই হোক কোন ছাড় নেই পুলিশের কাছে। জুয়া ও মাদক নির্মূলের অবশ্যই সবাইকে এগিয়ে এসে পুলিশকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।