সিদ্ধিরগঞ্জে সুন্দরী নারীদের প্রেমের ফাঁদে পড়ে ব্লাকমেইলিংয়ের শিকার হচ্ছে বহু পুরুষ। এ চক্রের খপ্পড়ে পড়ে অনেকই হচ্ছে সর্বশান্ত। এমনই এক চক্রের ফাঁদে পড়ে লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে রক্ষা পাওয়া এক ভূক্তভোগী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মিজমিজি পূর্বপাড়া আলামিন নগর এলাকায় নারী দিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং চক্র গড়ে তুলে আরিফ হোসেন (৩০) ও তার স্ত্রী খাদিজা আক্তার কনা (২৫)। আরিফ বন্দর থানার দেওয়ানবাগ এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। মোবাইল ফোনে পরিচয়ে খদিজা আক্তার কণা ব্যবসায়ীক কথা বলার জন্য বাদীকে তার বাসায় আসতে অনুরোধ করেন।
তার অনুরোধে বাসায় এসে কথা বলার এক পর্যায় খাদিজা আক্তার কনা বিবস্ত্র হয়ে বাদীকে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করে। এসময় বাদী প্রতিহত করতে চাইলে আরিফের নেতৃত্বে চক্রের সদস্যরা কক্ষে প্রবেশ করে নিজেদের পুলিশ ও গণমাধম্য কর্মী পরিচয় দিয়ে জোর পুর্বক খাদিজার সাথে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারন করে।
পরে এসব ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। দাবীকৃত মুক্তিপণ দিতে অস্বীকার করলে বাদীকে মারধর শুরু করে। চক্রের কবল থেকে রক্ষা পেতে তাদের কথামত বাদী তার ডাচ্ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং কার্ডের মাধ্যমে(এ্যাকাউন্ট-নং ১৩৫১০১০০৭০২৮১) থেকে চক্রের অপর সদস্য ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং-নং ৭০১৭১০০০৬৭১৫৫ এ ট্রানজেকশন করে ১ লাখ টাকা নেয়। পরে এসব কথা কাউকে না বলার ভয়ভীতি দেখিয়ে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেয়। বাদীর অনিহার কারণে তার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক ইয়াউর রহমান জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর থেকেই চক্রটি গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভয়ঙ্কর এ চক্রের অপকর্ম প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই তারা গাঁ ডাকা দিয়েছে। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী ও বিভিন্ন ব্যাক্তিদের টার্গেট করে নারী দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাড়িতে ডেকে আনে।
তখন চক্রের নারী সদস্যরা একান্ত সময় খাটানোর প্রলোভনে ফেলতো। তখনই কক্ষে প্রবেশ করে চক্রের পুরুষ সদস্যরা। এভাবেই তারা হাতিয়ে নিত লাখ লাখ টাকা। মানসম্মানের ভয়ে চক্রের দাবিকৃত অর্থ দিতে বাধ্য হয় ভূক্তভোগীরা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আরিফ দম্পতি চক্রের সাথে একাধিক সন্দুরী যুবতী রয়েছে। এসব সুন্দরীরাই পুরুষ ধরার হাতিয়ার। চক্রে কয়েকজন পুরুষ রয়েছে, যারা নিজেদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও গণমাধ্যম কর্মী পরিচয় দিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং করে। একাধিক ভূক্তভোগী এসব তথ্য জানান।
এক গার্মেন্ট ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২ লাখ ২০ হাজার, শহিদ নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫০ হাজার, ফরিদ নামে একজন চাকরিজীবীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে চক্রটির বিরুদ্ধে।