গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল সুজনের উপর হামলার ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দপুরে এ অভিযোগ দায়ের করেন তরিকুল সুজন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার নির্বাহী সমন্বয়কারী অজন দাস, জেলা কমিটির সদস্য আলমগীর হোসেন আলম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ছাত্রনেতা ফারহানা মুনা, সহ-সভাপতি ছাত্রনেতা মোমেন হাসান প্রান্ত, সাধারণ সম্পাদক সৃজয় সাহা আরও অনেকে।
অভিযোগ দায়ের পূর্বে নেতৃবৃন্দ ফতুল্লা থানা ওসি মুহাম্মদ নুর আযমকে হামলার বিস্তারিত জানান নেতৃবৃন্দ। বিস্তারিত শুনে তিনি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন।
অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে এসআই গিয়াস উদ্দিনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে গিয়াসউদ্দিন নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে আশ্বস্ত করেন যে, তিনি হামলাকারী খুজে বের করে যথাযথ শাস্তির উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
এসময় জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন রবিবার রাতে তার উপর হামলাকারী ও তাদের নির্দেশদাতাদের শনাক্তকরণ ও বিচারের দাবি জানিয়ে বলেন, আমি আশঙ্কা করি তারা আবারো হামলা চালাতে পারে। তারা আমাকে শারীরিক ভাবে আহত করে পালিয়ে যাবার সময় আবার হামলার হুমকি দিয়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
থানার কর্তব্যরত ওসি মুহাম্মদ নুর আযম আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন যে তারা হামলাকারী এবং তাদের নির্দেশদাতাদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনতে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। আমরা আশা করবো প্রশাসন তার কথা রাখবেন। আমরা দৃঢ় চিত্তে বলি, হামলা-মামলা করে আমাদের বাক স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটাধিকারের আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবে না।
নির্বাহী সমন্বয়কারী জননেতা অঞ্জন দাস হুশিয়ারী জানিয়ে বলেন, কোনো হামলাই আন্দোলনকে থামাতে পারবেনা। আমরা মনে করি, রাজনৈতিক কারণেই আজকে সমন্বয়কারীর উপর এই হামলা হয়েছে। যারা শহরে ভয়ের-ত্রাসের রাজত্ব টিকিয়ে রাখতে চায় তারাই এই হামলার জন্য দায়ী। গণসংহতি আন্দোলনের সকল নেতা-কর্মী এই সকল হামলাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মানুষের প্রতিটি ন্যায্য আন্দোলনের পাশে থাকবে।
নারায়ণগঞ্জ শহরকে একটা নিরাপদ-ভয়মুক্ত, নাগরিক বান্ধব শহর গড়ে তোলাই গণসংহতির লক্ষ্য। ফলে কোনো হামলাই নারায়ণগঞ্জবাসীকে দমিয়ে রাখতে পারবেনা। প্রশাসন ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এই হামলাকারী ও তাদের নির্দেশদাতাদের শনাক্তকরণ ও বিচারের আওতায় না আনলে নারায়ণগঞ্জবাসী এই হামলার উপযুক্ত জবাব দেবে। ‘
উল্লেখ্য, গণসংহতি আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৯ টার দিকে শহরের আল্লামা ইকবাল রোডের পাশের সড়কে একটি দোকানে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলেন। এমন সময় বৃষ্টি নামলে দৌঁড়ে সরকারি তোলারাম কলেজের উত্তর দিকে তাঁর মালিকানাধীন রেস্তোরাঁর নিচ তলায় গিয়ে দাঁড়ান। ওই সময় সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করা কয়েকজন যুবক অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে তাকে এলোপাথারিভাবে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন।
সম্প্রতি একই স্থানে সন্ত্রাসীদের হাতে ছাত্রদলের ৪ নেতাকর্মী আহত হয়েছিল। প্রশাসনের নিস্ক্রীয়তায় আবারও হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। নিরেপক্ষ তদন্ত করলেই পুলিশ এই সন্ত্রাসীদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারবেন বলে তারা দাবি করেন।
এদিকে হামলার ঘটনায় তাৎক্ষনিকভাবে শহরে প্রতিবাদ মিছিল করেছে গণসংহতি আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।