নারায়ণগঞ্জের শহরের প্রধান পাইকারি বাজার দিগুবাবুর বাজারসহ বিভিন্ন বাজার গুলোতে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না ডিম আলু পিঁয়াজ।
এদিকে ডিম, আলু ও পিঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা, আলুর কেজি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা এবং পিঁয়াজের দাম ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে সরকারের এই দাম নির্ধারণের ৩দিন অতিবাহিত হলেও বাজারে এর কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। নতুন দামের নির্দেশনা ব্যবসায়ীরা পেলেও মানছে না কেউই। এতে করে জনসাধারণের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার সরেজমিনে শহরের প্রধান পাইকারি বাজার দিগুবাবুরসহ আশপাশের মহল্লার দোকান ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারের নির্ধারণ করা দামে আমরা কিনেও আনতে পারিনি, তাহলে ওই দামে বিক্রি করব কীভাবে।
দিগুবাবুর বাজারে দেখা যায়, আলু বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪৫ টাকা করে। এ ছাড়া ইন্ডিয়ান পিঁয়াজ ৬০ থেকে ৭০ টাকা এবং দেশি পিঁয়াজ ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি হালি ৫০ টাকা করে।
চাহিদার চেয়ে উৎপাদন বেশি হলেও প্রতিবছর সংরক্ষণের অভাবে ২০ শতাংশের মতো পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। তার সুযোগ কাজে লাগিয়ে অসাধু ব্যাবসায়ীরা মসলাজাত এ পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। তারই অংশ হিসেবে নির্ধারিত দামের চেয়ে ১০-১৫ টাকা বেশিতে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৭৫-৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
একই ভাবে ৪৮ টাকার ডিমের হালি পাইকারিতে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাড়া- মহল্লার দোকান গুলোতে ৫ টাকা বাড়তিতে প্রতি হালি ডিম ৫৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।
দিগুবাবুর বাজারেরর পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. কাউসার বলেন, পাইকারি বাজার থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭৪-৭৮ টাকা দরে কিনেছি। খরচসহ প্রতি কেজির কেনা মূল্য দাঁড়িয়েছে ৮০ টাকা। ব্যবসা করতে এসে ৮০-৮২ টাকা চালান খাটিয়ে ৮৫- ৯০ টাকার কমে পেঁয়াজ বিক্রি করা সম্ভব না।
জানতে চাইলে দিগুবাবুর বাজারের আল্লাহর দান ডিম ঘরের ব্যবসায়ী মো. ইউনুস মিয়া বলেন, আড়ৎ থেকে ১০০ পিছ ডিম কিকিনতে হয়েছে ১ হাজার ১৯০ টাকায়। সঙ্গে অন্যান্য খরচ মিলিয়ে প্রায় ১২শ টাকা পড়ে যায় প্রতি ১০০ ডিমে। তাহলে বেশি দরে ডিম কিনে কীভাবে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে বিক্রি করব?
ডিম-পেঁয়াজের মতো আলুর বাজারেও একই পরিস্থিতি দেখা যায়। পাইকারিতে আলুর কেজি ৪৫ টাকা ও খুচরা বাজারে ৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।
সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে আলুর কেজিতে ৯-১২ টাকা বেশি বিক্রির কারণ জানতে চাইলে দিগুবাবুর বাজারের মো. ইব্রাহিম নামের এক আলু ব্যবসায়ী বলেন, কম দামে কিনতে না পারলে তো বেশি দামে বিক্রি করবই। কোল্ড স্টোরেজ থেকেই ৩৬ টাকা পাইকারি দরেই কিনে আনতে হয়। এরপর আড়াই থেকে তিন খরচ। তাহলে আমরা সরকারি নির্ধারিত ৩৬ টাকা ধরে কিভাবে বিক্রি করবো। সরকার যে দাম বেঁধে দিয়েছে তা বাস্তবায়ন হওয়ার সম্ভাবনা খুব একটা দেখছি না।
জানা যায়, সরকার নির্ধারিত নতুন দর কার্যকর নিয়ে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর দেশের বিভিন্ন জেলা শহরগুলোতে অভিযান কার্যক্রম শুরু করেছে।