নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার রামনগর এলাকায় সেই মুসকান এখন ভারতের দিল্লিতে শিকল বন্দি। নির্মম নির্যাতনের ভিডিও স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে দুই লাখ টাকা মুক্তিপন চাইছে সে দেশের কিছু দুষ্কৃতিকারী। মোসকানকে উদ্ধারে প্রশাসনের সহযোগিতা চান তার স্বজনেরা।
মোবাইলে ধারণকৃত এ ভিডিও চিত্রই বলে দেয় কতটা নির্মম নির্যাতন চালানো হচ্ছে তৃতীয় লিঙ্গের এই সদস্য উপর।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, মুক্তিপনের দাবিতে পায়ে শিকল বেঁধে পেটাচ্ছে অন্যরা। নির্যাতনকারীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে আকুতি করছে মোসকান নামের এই তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য। তবে তাকে জীবিত ফেরত পেতে চাইলে অপহরকারীদের মুক্তিপন দিতে হবে ২লাখ টাকা। মুঠোফোনে ভিডিও পাঠিয়ে এমন হুমকি দিচ্ছে নির্যাতনকারীরা।
পুলিশ ও মোসকানের পরিবারের সদস্যরা জানায়, নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার ইস্পাহানি এলাকার সাগর নামের এক যুবক ১০ বছর আগে নিজের ইচ্ছেতেই ভারতে গিয়ে ছেলে থেকে হয়ে যান তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য। নাম পরিবর্তন করে রাখে মুসকান। এরপর থেকে সেখানেই থাকতেন। বছরে দু’একবার বাড়িতে আসতেন অসুস্থ্য মায়ের সঙ্গে দেখা করতে। তবে তার ভারতে আসা-যাওয়ার পুরটাই ছিলো অবৈধ পথে। সব শেষ প্রায় দেড় মাস আগে ভারতের দিল্লি থেকে একই পথে নারায়ণগঞ্জ বন্দরের নিজ বাড়িতে আসেন। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর ফের ভারতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বেড়িয়ে যায়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ। এর মধ্যে ২১ সেপ্টেম্বর তার মামাতো বোনের মোবাইলে নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে মুক্তিপন দাবি করে চক্রটি। তৃতীয় লিঙ্গের মুসকানের স্বজনরা তাকে উদ্ধারে প্রশাসনের সহযোগিতা চান।
মুসকানে খালু আব্দুর রহিম মিয়া ও খালা আখি বেগম জানান, সাগর খুবই ভালো ছেলে। কারো সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করতো না। ভারতে গিয়ে কি ভাবে কি হলো বুঝতে পারছি না।
শুধু তার পরিবারের লোকজনই নয় পূর্ব পরিচিত ও এলাকাবাসীও তাকে জীবিত ফেরত পেতে চান।
এলাকাটির সুমন নামের এক ব্যক্তি জানান, মুসকানকে জীবিত উদ্ধারে সরকারকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, সাগর ওরফে তৃতীয় লিঙ্গের মুসকানের খোঁজে ইতিমধ্যে ভারতের দুতাবাসের সহযোগিতায় সেখানকার স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। তাকে উদ্ধারের পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানান জেলা পুলিশের প্রধান।
এদিকে নির্যাতনের শিকার সন্তানের চিন্তায় বেকুল হয়ে উঠেছে মোসকানের অসুস্থ মা।